কুলাউড়ায় বন্যা পরিস্থিতি অবনতি, প্রতিটি আশ্রয়কেন্দ্রে বাড়ছে ভিড়
স্টাফ রিপোর্টার॥ টানা বৃষ্টি ও উজানের ঢলে মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন। বুধবার ১৯ জুন দুপুরে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয় তথ্য সূত্রে জানা গেছে বন্যা পরিস্থিতি অবনতি ঘটেছে কুলাউড়ায়।
জানা যায়, ঈদের দিন ১৭ জুন-সোমবার ভোররাত থেকে শুরু হওয়া ভারি বর্ষণ এখন পর্যন্ত অব্যাহত আছে। পাহাড়ি ঢল ও তিন দিনের টানা বৃষ্টিতে উপজেলার ১ পৌরসভাসহ ৬টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়ে লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন। অনেক রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় যান চলাচলও বন্ধ রয়েছে।
তিন দিনের টানা বৃষ্টিতে উপজেলা পরিষদ এলাকা, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, পৌর শহরের মাগুরা, সাদেকপুর, বিহালা, সোনাপুর, কাদিপুর ইউনিয়নের ছকাপন, মৈন্তাম, ভাগমতপুর, গুপ্তগ্রাম, তিলকপুর, ভূকশিমইল ইউনিয়নের সাদিপুর, কোরবানপুর, মুক্তাজিপুর, জাবদা, কালেশার, কাইরচক, চিলারকান্দি, কানেহাত, জয়চণ্ডী ইউনিয়নের ঘাগটিয়া, মিরবক্সপুর, কামারকান্দি, কুটাগাঁও, কুলাউড়া সদর ইউনিয়নের দেখিয়ারপুর, কুলাউড়া গ্রাম, বনগাঁও, গাজীপুর আংশিকসহ অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও প্লাবিত হয়েছে।
প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয় জানিয়েছে, বুধবার পর্যন্ত কুলাউড়ার ৬০টি গ্রাম ও এলাকা প্লাবিত। এসব গ্রাম ও এলাকার লক্ষাধিক মানুষ বন্যা আক্রান্ত। এ ছাড়া ২২টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এতে ১৯৭টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। বন্যার্তদের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের জন্য ১৪টি মেডিকেল টিম গঠন করে কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।
এদিকে বুধবার দিনব্যাপী বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে খাবার বিতরণ করেন মৌলভীবাজার-২ আসনের সংসদ সদস্য শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, কুলাউড়া পৌরসভার মেয়র অধ্যক্ষ সিপার উদ্দিন আহমদ ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অর্থ ও পরিকল্পনাবিষয়ক উপকমিটির সদস্য, স্কোয়াড্রন লীডার (অব.) সাদরুল আহমেদ খান।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. শিমুল আলী বলেন, বন্যার্ত পরিবারের তথ্য সংগ্রহ করে ঊর্ধ্বতনের কর্তৃপক্ষের নিকট শুকনো খাবারের চাহিদা পাঠানো হয়েছে। খাবার পাওয়া গেলে তা দুর্গত পরিবারগুলোর মাঝে বিতরণ করা হবে। এখন পর্যন্ত ২২টি আশ্রয়কেন্দ্রে খোলা হয়েছে। এতে বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে ১৯৭টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে বলে তিনি জানান।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ঢলের পানিতে ৪৮০ হেক্টর আউশ ধান এবং ১৬৫ হেক্টর গ্রীস্মকালীন শাকসবজি নিমজ্জিত রয়েছে। পানি আরও বাড়লে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বাড়বে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) সুজিত কুমার চন্দ বলেন, বন্যা পরিস্থিতি মোকায়বেলায় প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে। যে সকল পরিবার আশ্রয় নিয়েছে তাদের মাঝে খাবার দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি শুকনো খাবারও পাঠানো হচ্ছে।
মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাবেদ ইকবাল বলেন, জেলার সবগুলো নদীর পানি বিপৎসীমার উপরে প্রবাহিত হচ্ছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হবে।
মন্তব্য করুন