কুলাউড়ায় বোরো ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকের পরিবর্তে চা শ্রমিকরা পাচ্ছে ওএমএস’র চাল
এইচ ডি রুবেল॥ কুলাউড়া উপজেলার হাকালুকি হাওর তীরবর্তী জয়চন্ডী ইউনিয়নে অকাল বন্যায় বোরো ধান ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা পাচ্ছেন না ওএমএস এর চাল। ওএমএস ডিলারের দোকান চা বাগান এলাকায় হওয়ায় মূল ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার মানুষ বঞ্চিত হচ্ছে চাল কেনা থেকে।
মূলত জয়চন্ডী ইউনিয়নের বোরো চাষ হয় হাকালুকি হাওর তীরের ধলিয়া বিলের তীরবর্তী গ্রাম বেগমানপুর, আবুতালীপুর, মিটিপুর, রামপাশা, পুশাইনগর, পশ্চিম পুশাইনগর, মীর শংকর. গৌরীশংকর, লুইয়ারহাই, বাগেরকোনা, জয়চন্ডী গ্রামের শতকরা আশিভাগ মানুষ বোরো ক্ষেত করে। এ গ্রামগুলো ছাড়াও দিলদারপুর, দূর্গাপুর, রঙ্গিরকুল, গিয়াসনগর ও কামারকান্দি এলাকায় কিছু কিছু বোরো ক্ষেত হয়ে থাকে। হাকালুকি হাওর তীরের ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের জন্য চালু করা হয়েছে ওএমএস কার্যক্রম। কুলাউড়া উপজেলায় হাকালুকি হাওর তীরের ৭টি ইউনিয়নে চালু করা হয়েছে ওএমএস কার্যক্রম। এই ৭টি ইউনিয়নের মধ্যে জয়চন্ডী ইউনিয়ন অন্যতম। এই ইউনিয়নের ডিলার আব্দুস সালাম ওএমএস দোকান খুলেছেন ইউনিয়নে অবস্থিত বিজয়া চা বাগানের পাশর্^বর্তী বিজয়া বাজারে। বাগান এলাকায় ডিলারের দোকান হওয়ায় সকালে চা শ্রমিকরা লাইনে দাঁড়িয়ে চাল কিনে নেয়। দুরবর্তী স্থান থেকে ক্ষতিগ্রস্থ বোরো চাষীরা আসার আগেই ডিলারের চাল ফুরিয়ে যায়। ফলে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্থ বোরো কৃষকরা ওএমএস এর চাল না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরে যান।
আবুতালীপুর গ্রামের জাহিদুর রহমান, মুসা মিয়া, মানিক মিয়া, নৃপন্দ্রে নাথ, জিতেন্দ্র দাস রামপাশা গ্রামের রেনু মিয়া, তারা মিয়া, মিটুপুর গ্রামের রিয়াজ মিয়া, লিটন মিয়া, তোতা মিয়া অভিযোগ করেন, আমরা ৩দিন গিয়ে চাল না পেয়ে ফিরে এসেছি খালি হাতে। যদি ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের জন্য ওএমএস চাল দেয়া হয়, তাহলে ডিলারের দোকান হওয়া উচিত ছিলো ইউনিয়নের মধ্যবর্তী ও বোরো ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায়। আমরা যাওয়ার আগে বাগানের লোকজন লাইনে দাঁড়িয়ে চাল নিয়ে যায়। তাছাড়া চাল বিক্রিতে ডিলারের কোন শৃঙ্খলা নেই।
এব্যাপারে জয়চন্ডী ইউনিয়নের ওএমএস ডিলার আব্দুস সালাম জানান, তার দোকান বিজয়া বাজারে। এখানে ফযরের নামাযের পর থেকে এসে লোকজন লাইনে দাঁড়ায়। চাল বিক্রি শুরু হওয়ার দেড় দুই ঘন্টার মধ্যে বিক্রি শেষ হয়ে যায়। ইউনিয়নের যেকোন স্থান থেকে লোকজন আসলে চাল পায়। যে এলাকায় অধিক বোরো ফলন হয় সেই এলাকার কিছু মানুষ চাল নিতে আসে। বাগানের লোকজন লাইনে দাঁড়ালে তাদেরকে তো আর ফেরৎ দেয়া যায় না। যারা আগে লাইনে এসে দাঁড়ায় তারাই পায়। প্রতিদিন ২শ মানুষ চাল পেলেও আর দেড় দুইশ লোক ফেরৎ যায়।
এব্যাপারে কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার চৌঃ মোঃ গোলাম রাব্বি জানান, বিষয়টা আমি অবগত আছি। ইতোমধ্যে আমি চেয়েছিলাম যাতে দোকানটা সুবিধাজনক স্থানে করা যায়। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে একটু বিতর্ক রয়েছে। তাছাড়া একাধিক স্পটে চাল বিক্রি করতে ডিলার অপারগতা প্রকাশ করায় সেটা সম্ভব হচ্ছে না। তাছাড়া বাকি ইউনিয়নগুলোতে ওয়ার্ডওয়ারী ভাগ করা হয়েছে। কিন্তু জয়চন্ডী ইউনিয়নে সেটা সম্ভব হচ্ছে না।
মন্তব্য করুন