কুলাউড়ায় র্যাব পরিচয়ে ৩ জনকে অপহরণ
কুলাউড়া অফিস॥ কুলাউড়া উপজেলার টিলাগাও ইউনিয়ন থেকে র্যাব পরিচয়ে তিনজনকে ধরে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অপহৃত ব্যক্তিরা হলেন উপজেলার টিলাগাও ইউনিয়নের আমানীপুর গ্রামের বাসিন্দা মুদি দোকানদার আলখাছ মিয়া (৩৫), আলখাছের ছোট ভাই কাঠমিস্ত্রি ফয়ছল আহমদ (১৭) ও তাঁদের পরিচিত ময়নমসিংহের ভালুকা উপজেলার আনছার আলী (৩০)। তবে তাদেরকে কোথায় এবং কেন নিয়ে গেছে? তা না জানায় তাদের পরিবার পরিজন রয়েছে উদ্বেগ উৎকন্ঠায়।
আলখাছের বড় ভাই আপ্তাব মিয়া বলেন, ৮ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার সকাল ৭টার দিকে কালো রঙের একটি মাইক্রোবাস এসে তাদের বাড়ির সামনে থামে। এ সময় সাদা প্যান্ট ও গেঞ্জি পরিহিত অস্ত্রধারী ১০-১২ জন লোক বাড়িতে ঢুকে নিজেদের র্যাব পরিচয় দিয়ে প্রথমে আনছারের নাম ধরে ডাকতে থাকেন। তারা বলেন, আনছার একটি মামলার আসামি। তাকে গ্রেফতারের জন্য এসেছেন। এক পর্যায়ে আনছার ঘুম থেকে জেগে বের হলে র্যাব পরিচয়ধারী ব্যক্তিরা তাকে আটক করে ফেলেন। সেইসঙ্গে আলখাছ ও ফয়ছলকে আনছারের সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নেয়া হচ্ছে, পরে ছেড়ে দেয়া হবে বলে তিন জনকে গাড়িতে তুলে দ্রুত চলে যান।
আপ্তাব মিয়া আরো জানান, আনছার তাদের এক মামাতো ভাইয়ের ঘনিষ্ট বন্ধু। ৭-৮ দিন আগে তিনি (আনছার) তাদের বাড়িতে বেড়াতে আসেন। আগেও একাধিকবার তিনি বেড়াতে এসেছিলেন। তিনি ব্যবসা করেন বলে তারা জানেন। আর আলখাছের পার্শ্ববর্তী বাংলাবাজারে একটি মুদি দোকান রয়েছে। আর ফয়ছল আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় কাঠমিস্ত্রির কাজ করেন। আলখাছ ও ফয়ছলের সঙ্গেও কারও পূর্ববিরোধ নেই।
তিনজনকে নিয়ে যাওয়ার পর বিষয়টি তাঁরা স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে জানান। পরে কুলাউড়া থানা ও শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত র্যাব-৯ ক্যাম্পে খোঁজ নিয়ে তিন জনের সন্ধান মেলেনি। আলখাছ ও ফয়ছলের সঙ্গে মুঠোফোন ছিল। র্যাবের ক্যাম্প ও থানায় যোগাযোগের পর তাদের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও কেউ ফোন ধরেনি। এ ব্যাপারে কুলাউড়া থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। টিলাগাও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মালিক বলেন, তিনি ঘটনাটি শুনে অপহৃত ব্যক্তিদের অভিভাবকদের থানায় জিডি করার পরামর্শ দিয়েছেন।
র্যাব-৯ শ্রীমঙ্গল ক্যাম্পের অধিনায়ক সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মাঈন উদ্দিন চৌধুরী জানান, কুলাউড়ার আমানীপুর গ্রামে তারা কোনো অভিযান চালাননি। পূর্বশত্রুতার জের ধরে দুর্বৃত্তরা তিন ব্যক্তিকে অপহরণ করতে পারে বলে তারা ধারণা করছেন।
কুলাউড়া থানার এসআই (তদন্ত) বিনয় ভূষণ রায় জানান, র্যাব পরিচয়ে তিন ব্যক্তিকে ধরে নেয়ার ঘটনাটি শুনেছেন। তাদের পরিবারকে আইনী সহায়তা নেয়ার কথা বললেও তারা আসেনি। অভিযোগ পাওয়া গেলে তদন্ত করে দেখা হবে।
মন্তব্য করুন