ক্যান্সার রোগ ভালো করার নামে ৪০ হাজার টাকা আদায় : হোমিও চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অপচিকিৎসার অভিযোগ

আব্দুর রব॥ বড়লেখায় সঞ্জয় কান্তি শীল সঞ্জু নামক এক হোমিও চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ক্যান্সার রোগীকে ভাল করার নামে ৪০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তার অপচিকিৎসায় ওই মহিলা রোগী মৃত্যুমূখে পতিত। বুধবার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রত্মদীপ বিশ্বাসের গঠিত তদন্ত টিম অভিযোগের তদন্ত করেছে।
অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, উপজেলার পানিধার এলাকায় নিজ বাড়িতে ঝর্নাময়ী হোমিও হল নামক ফার্মেসীতে চেম্বার খুলে দীর্ঘদিন ধরে ক্যান্সার, আলসার, হাড়ভাঙ্গাসহ নানা দূরারোগ্য কঠিন অসুখের চিকিৎসা করছেন সঞ্জয় কান্তি শীল সঞ্জু। নামের সাথে হোমিওপ্যাথির নানা ডিগ্রী সংযুক্ত থাকলেও ব্যবস্থাপত্রে তিনি হোমিও ছাড়াও এলোপ্যাথিকের উচ্চ মাত্রার এন্টিবায়োটিক, আয়ুর্বেদিক, কবিরাজীসহ সবধরণের ঔষধ লিখেন। ক্যান্সারসহ কঠিন অসুখ ভাল করার নানা ধরণের প্রচারপত্র বিলি করে তিনি সাধারণ মানুষের দৃষ্ঠি আকৃষ্ট করে চিকিৎসার নামে রোগীদের সাথে প্রতারণা করছেন। বিভিন্ন মাধ্যমে কথিত চিকিৎসক সঞ্জয় কান্তি শীল সঞ্জুর নামডাক শুনে পার্শবর্তী বিয়ানীবাজার উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামের রেজাউল করিম রাজু গত ২ ডিসেম্বর গলাব্যথায় আক্রান্ত অসুস্থ মা ছায়ারুন নেছাকে তার নিকট নিয়ে যান। সঞ্জু পরীক্ষা করে জানায়, ক্যান্সার হয়েছে সে চিকিৎসা দিয়ে ভাল করতে পারবে। কয়েক দফা ঔষধ দিয়ে সে ৪০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। তার ঔষধে মায়ের ক্রমশও অবনতি ঘটতে থাকে। গত ২৬ জানুয়ারী রেজাউল করিম রেজা কথিত এ চিকিৎসকের চেম্বারে মায়ের শারীরিক অবস্থা জানাতে গেলে সে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে চেম্বার থেকে তাকে বের করে দেয়।
রেজাউল করিম রেজা জানান, বিভিন্ন জনের মাধ্যমে তার সুনাম জেনে অসুস্থ মাকে চিকিৎসা করতে নিয়ে যান। ক্যান্সার হয়েছে জানিয়ে চিকিৎসার নামে সে ৪০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। তার ঔষধে মায়ের ক্রমশঃ অবনতি ঘটে। সর্বশেষ জানাতে গেলে মারাত্মক দুর্ব্যবহার করে চেম্বার থেকে বের করে দেয়। তার প্রতারণা ও অপচিকিৎসায় আমার মা এখন মৃত্যুমূখে। বুঝতে পারছি তার চিকিৎসার সুনাম করা লোকগুলো তারই নিয়োজিত দালাল। অবশেষে তার অপচিকিৎসার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার নিকট লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রত্নদীপ বিশ্বাস জানান, অভিযোগটি তদন্তের জন্য হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট ডা. রামেন্দ্র সিংহকে প্রধান করে ৩ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছিলেন। বুধবার সকালে উক্ত কমিটি তদন্ত সম্পন্ন করেছে। এ তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর এব্যাপারে তিনি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
এব্যাপারে কথিত চিকিৎসক সঞ্জয় কান্তি শীল সঞ্জু জানান, তিনি ক্যান্সার রোগীরও চিকিৎসা করতে পারেন। ওই রোগীর ছেলের সাথে ঔষধ কেনা নিয়ে একটু ঝামেলা হয়েছে। তিনি কোনো দুর্ব্যবহার করেননি।
মন্তব্য করুন