পূর্ব শত্রুতার জেরে কুলাউড়ায় দু’পক্ষের সংঘর্ষে মা-মেয়ে আহত

কুলাউড়া প্রতিনিধি॥ মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার রাউৎগাঁও ইউনিয়নের একিদত্তপুরে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে মা ও মেয়েসহ দু’জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আহতরা হলেন- উপজেলার রাউৎগাঁও ইউনিয়নের একিদত্তপুর গ্রামের বাসিন্দা বাচ্চু মিয়ার স্ত্রী রেজিয়া সুলতানা (৪০) ও তাঁর মেয়ে বিউটি বেগম (২২)। এ ঘটনায় রেজিয়া সুলতানা বাদী হয়ে ৮ জনকে আসামী করে কুলাউড়া থানায় মামলা (নং-২৩ তারিখঃ ২৬/০৮/২০২০ ইং) দায়ের করেছেন। মামলার আসামীরা হলেন- রাউৎগাঁও ইউনিয়নের একিদত্তপুর গ্রামের মৃত মুছন মিয়ার ছেলে ফখর উদ্দিন (৪০), হেলাল মিয়ার ছেলে দেলোয়ার হোসেন (২৪) ও সানী আহমদ (১৯), মৃত মুছন মিয়ার মেয়ে রাবিয়া বেগম (৫০), হেলাল মিয়ার ছেলে আহসান মিয়া (১৮), আজাদ মিয়ার স্ত্রী আফিয়া বেগম (৪০), মুছন মিয়ার ছেলে তজই মিয়া (৬০) ও হেলাল মিয়া (৪৫)।
থানায় দায়েরকৃত অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রাউৎগাঁও ইউনিয়নের একিদত্তপুর গ্রামের বাসিন্দা মোঃ বাচ্চু মিয়ার পরিবারের সাথে একই গ্রামের বাসিন্দা মৃত মুছন মিয়ার ছেলে ফখর উদ্দিন (৪০) এর সাথে পূর্ব থেকেই বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিরোধসহ মামলা মোকদ্দমা চলে আসছে। ফখর উদ্দিন গংরা বাচ্চু মিয়ার নিকটআত্মীয় হওয়ায় প্রায়শই তারা বাচ্চু মিয়ার পারিবারিক বিষয় নিয়ে অযথা কথা বার্তা বলে ঝগড়া বিবাদ সৃষ্টি করে। ঘটনার দিন ২২ আগস্ট দুপুর ২ ঘটিকায় বাচ্চু মিয়ার স্ত্রী রেজিয়া সুলতানা তাঁর মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলে সায়মন মিয়াকে শাসন করতে গেলে মামলার প্রধান আসামী ফখর উদ্দিন কোন কারণ ছাড়াই রেজিয়া সুলতানার সাথে ঝগড়ায় লিপ্ত হয়ে অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করে পরবর্তীতে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়। উক্ত ঘটনার জের ধরে ঘটনার দিন দুপুরে ফখর উদ্দিনের নেতৃত্বে সকল বিবাদীগণ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে রেজিয়া সুলতানার বসতঘরে প্রবেশ করে তার মেয়ে বিউটি বেগম (২২) কে এলোপাতাড়ীভাবে মারধর করে। একপর্যায়ে প্রধান আসামী ফখর উদ্দিনের নির্দেশে ৩নং আসামী সানী আহমদ তার হাতে থাকা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে প্রাণে হত্যার উদ্দেশ্যে বিউটি বেগমের মাথার ডান পাশে আঘাত করে রক্তাক্ত করে। ২ নং আসামী দেলোয়ার হোসেন তার হাতে থাকা অস্ত্র দিয়ে একই উদ্দেশ্যে বিউটি বেগমের মাথা লক্ষ্যে করে আঘাত করলে বাম হাত দিয়া আত্মরক্ষার চেষ্টা করলে তার হাতের কব্জির সাইটে পড়ে জখম হয়। ৭ নং আসামী তজই মিয়া তার হাতে থাকা কাঠের রুল দিয়ে বিউটি বেগমের মাথার পিছনে ও পিঠের মেরুদন্ডে এলোপাতাড়িভাবে আঘাত করে। এসময় আসামী দেলোয়ার হোসেন বিউটি বেগমের পড়নের কাপড় ধরিয়া টানাটানি করে শ¬ীলতাহানি করে। বিউটিকে বাঁচানোর জন্য এগিয়ে আসলে তার মা রেজিয়া সুলতানাকেও মারধর করেন আসামীরা। এরপর স্থানীয়রা তাদের চিৎকার শুনে মা ও মেয়েকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপে¬ক্সে ভর্তি করেন।
এ ঘটনায় আসামীদের বক্তব্য জানতে চাইলে তাদের মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করলে নাম্বারগুলো বন্ধ পাওয়া যায়। যার কারণে বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোঃ মাসুদ আলম ভূইয়া রবিবার বিকেল ৩টায় বলেন, এ ঘটনায় ৮জনের নাম উলে¬খ করে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। আসামীদের গ্রেপ্তার করার জন্য পুলিশী অভিযান অব্যাহত আছে।
এ ব্যাপারে রাউৎগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল জামাল বলেন, উভয়পক্ষের মধ্যে পারিবারিক বিষয় নিয়ে এই মারামারির ঘটনাটি ঘটেছে। ঘটনার দিন বাচ্চু মিয়ার স্ত্রীর সাথে ফখর উদ্দিনের একটি বিষয় নিয়ে সংঘর্ষ বাঁধে। বিষয়টি এখন আপোষ-মীমাংসার চেষ্টা চলছে।
মন্তব্য করুন