বড়লেখায় দুর্বৃত্তের আগুনে পুড়লো ৩ আদিবাসী পরিবারের বসতঘর

January 20, 2019,

বড়লেখা প্রতিনিধি॥ বড়লেখার দক্ষিণ শাহবাজপুর ইউপির নালিখাই পানপুঞ্জির ৩ আদিবাসী খাসিয়ার বসতঘর রাতের আধাঁরে পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। কেটে ফেলেছে পান জুমের ৪ শতাধিক পান গাছ। ভুক্তভোগী খাসিয়াদের অভিযোগ ছোটলেখা চা বাগান কর্তৃপক্ষ তাদের উচ্ছেদ করতেই বসতঘর পুড়িয়ে দেয়। শনিবার রাত দেড়টার দিকে অগ্নিকান্ড ও পানগাছ কাটার ঘটনা ঘটেছে। রাতেই পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

সরেজমিন ও এলাকাবাসী সুত্রে জানা গেছে, ছোটলেখা চা বাগান কর্তৃপক্ষ নিজেদের স্বার্থে টলবিলামিন নামে এক আদিবাসী খাসিয়াকে বাগানের প্রায় ৮০ একর ভুমিতে বসিয়ে দেয়। টলবিলামিন খাসিয়া ২৮ খাসিয়া পরিবার নিয়ে নালিখাই পানপুঞ্জি নাম দিয়ে এ ভুমিতে প্রায় ১০ বছর ধরে বসবাস করছেন। সেখানে তারা পান, লেবু, সুপারীসহ বিভিন্ন ফল-ফলাদি চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করে। খাসিয়ারা যখনই উন্নত বাসস্থান ও যাতায়াতের উদ্যোগ নেয় তখনই বাগান কর্তৃপক্ষ তাদের উচ্ছেদের চেষ্টা চালায় বলে অভিযোগ রয়েছে।

খাসিয়া মন্ত্রী (হেডম্যান) টলবিলামিন জানান, রাস্তা নিয়ে চা বাগানের সাথে তাদের সমস্যা চলছে। নিজের বসতঘর পাকা করতে তিনি ইট নেয়ার সময় বাগান কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের বাঁধা দেয়।  ১৩ জানুয়ারী ছোটলেখা বাগানের ম্যানেজারের লোকজন গেটের সামনে ইট আটকে রাখে। রাস্তায় চলাচলে বাধা-নিষেধ করে। ইট পরিবহণকারী শ্রমিকদের মারধর করে উল্টো থানায় আমার লোকের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে। বাগান ম্যানেজারের নানা হুমকি-ধমকির কারণে গত ১ সপ্তাহ ধরে পুঞ্জির লোকজন ঘর থেকে বের হতে পারছে না। এরই মাঝে শনিবার রাত দেড়টার দিকে পুঞ্জির বাসিন্দা আমার পান জুমের শ্রমিক অচিন পাত্র, এজু চিছাম ও ইনেত মুরংয়ের বসত ঘর পুড়িয়ে দিয়েছে। এতে অন্তত আড়াই লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। কেটে ফেলেছে জুমের ৪-৫ শতাধিক পান গাছ।

এদিকে বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের বড়লেখা ও জুড়ী উপজেলার সভাপতি অধ্যাপক জাহেদ আহমদ জানান, জীবন যাপনের মান উন্নয়নের জন্য বসতঘর তৈরীতে ও রাস্তায় চলাচলে কাউকে বাঁধা দেয়া উচিত নয়।

ছোটলেখা চা বাগান ম্যানেজার মোকাররম হোসেন জানান, নালিখাই পানপুঞ্জির খাসিয়াদের সাথে কিছুদিন ধরে সম্পর্কের অবনতি হয়েছে ঠিকই, তবে তাদের বসতঘর পুড়ানো ও হুমকি-ধমকি দেয়ার সাহস বাগানের কারোই নেই, এটা অসম্ভব। সরকারী জমিতে দালান কোটা তৈরীর অনুমতিতো বাগান কর্তৃপক্ষ দিতে পারে না। তাই ইট নিতে বাঁধা দেই। ঘর পুড়ানো, পান গাছ কাটা ও হুমকি-ধমকির অভিযোগ সম্পুর্ণ মিথ্যা। এটা তাদেরই ষড়যন্ত্র।

থানার ওসি (তদন্ত) মো. জসীম উদ্দিন রোববার সন্ধ্যায় জানান, ‘আগুন লাগার খবর পেয়ে রাতেই তিনি পুলিশ নিয়ে পুঞ্জিতে যান। টিনশেডের তিনটি ঘর পুড়েছে। আগুন লাগার কারণ নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এব্যাপারে এখনও কেউ থানায় মামলা করেনি।’

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com