মজুরী বৃদ্ধিসহ তিন দফা বাস্তবায়নের দাবি চা শ্রমিক দিবস উপলক্ষে কমলগঞ্জের মিরতিংগা চা বাগানে শ্রমিক সমাবেশ

May 20, 2017,

কমলগঞ্জ প্রতিনিধি॥ দৈনিক মজুরী ৮৫ টাকা থেকে ২৩০ টাকায় উন্নীত করণ, চাকুরী ও উচ্চ শিক্ষায় চা শ্রমিক সন্তানদের জন্য কৌটা প্রথা চালু করণ ও ভূমি উচ্ছেদ আইন বাতিলকরণের দাবি জানিয়ে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মিরতিংগা চা বাগানে চা শ্রমিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ৯৬ বছর আগে চা শ্রমিকদের মুল্লুক চলো আন্দোলনে চাঁদপুরে রেলওয়ে স্টশন ও লঞ্চঘাটে ব্রিটিশ সরকারের নির্দেশে গোর্খা বাহিনীর গুলিতে কয়েক’শ চা শ্রমিক মারা যাওয়ার দিন উপলক্ষে শনিবার ২০ মে সকাল ১১টায় মিরতিংগা চা বাগানে চা শ্রমিক দিবস উপলক্ষে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছিল।
রহিমপুর ইউপি সদস্য চা শ্রমিক ধনা বাউরীর সভাপতিত্বে শনিবারের চা শ্রমিক সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারন সম্পাদক রাম ভজন কৈরী। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, চা শ্রমিক ইউনিয়নের অর্থ সম্পাদক পরেশ কালেঞ্জী, বালিশিরা ভ্যালির(অঞ্চলের) সভাপতি বিজয় হাজরা, মনু-ধলই ভ্যালির সাধারন সম্পাদক নির্মল দাশ পাইনকা, চা শ্রমিক নেতা গোপাল নুনিয়া, মোবারক হোসেন, মিরতিংগা চা বাগান পঞ্চায়েত সভাপতি নিরঞ্জন তন্তÍ বাই।
পাঁচ শতাধিক নারী পুরুষ চা শ্রমিকের উপস্থিতে চা শ্রমিক দিবসের সমাবেশে প্রধান অতিথি বলেন, এ অঞ্চলে চা শিল্পের গোড়াপত্তনে শুরু থেকেই ব্রিটিশরা নানা প্রলোভন দেখিয়ে ভারতের বিভিন্ন প্রদেশ থেকে নিরিহ অসহায় চা শ্রমিকদের এনেছিল। এর পর থেকে চা শ্রমিকদের উপর নানাভাবে নিপিড়ন ও নির্যাতন হয়। ফলে চা শ্রমিকরা আবার নিজের এলাকায় ফিরে যেতে “ মুল্লুক চলো” আন্দোলন শুরু করে রেলপথে পায়ে হেটে চাঁদপুর পর্যন্ত গিয়েছিল। সে সময় চা শ্রমিকদের কাছে ছিল না কোন টাকা পয়সা। চা শ্রমিকরা চাঁদপুর লঞ্চঘাটে গিয়ে লঞ্চযোগে ভারতে যেতে চাইলে লঞ্চ ঘাটও বন্ধ করে দেওয়া হয়। এক পর্যায়ে ব্রিটিশ সরকার তাদের বিশেষ বাহিনী গোর্খা রেজিমেন্ট লেলিয়ে দিলে গোর্খা রেজিমেন্টের  গুলিতে চাঁদপুর লঞ্চ ঘাট ও স্টেশনে কয়েক ’শ চা শ্রমিক মারা গিয়েছিল। জীবিতদের ধরে আবারও ট্রেন যোগে সিলেটের বিভিন্ন চা বাগানে ফিরিয়ে আনা হয়েছিল। প্রধান অতিথিসহ বক্তারা বলেন, এখন ডিজিটাল যোগেও কোন না কোন চা বাগানে আগের কায়দায় চা শ্রমিকদের উপর নির্যাতন হচ্ছে। চা শ্রমিকরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে এসব নির্যাতন বন্ধ করতে হবে। ২০ মে-কে চা শ্রমিক দিবস হিসাবে জাতীয় স্বীকৃতি আদায় করে নিতে হবে।
সমাবেশে চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারন সম্পাদক রাম ভজন কৈরী আরও বলেন, চা শিল্পের প্রাণই হচ্ছে চা শ্রমিক। অথচ চা বাগানের ভূমির উপর তাদের কোন অধিকার নেই। যতদিন চাকুরী আছে ততদিন চা বাগানের ভূমি ব্যবহার করতে পারে। নতুবা ভূমি থেকে উচ্ছেদ করা হয়। তাই ভূমি উচ্ছেদ আইন বাতিল করণ, চা শ্রমকি সন্তানদের চাকুরী ক্ষেত্রে ও উচ্চ শিক্ষা গ্রহনে কৌটা প্রথা চলা করা ও দৈনিক মজুরী বৃদ্ধি করে ২৩০ টাকায় উন্নীত করা দাবি জানান চা শ্রমিক ইউনিয়ন সাধারন সম্পাদক রামভজন কৈরী।

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com