রাজনগরে কবরস্থানের উপর দেয়া ইট সলিং উপড়ে ফেলেছে জনতা, আদালতে মামলা দায়ের
স্টাফ রিপোর্টার॥ মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলায় শত বছরের পুরোনো কবরস্থানের উপর দিয়ে সড়ক নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে উপজেলার উত্তরভাগ ইউনিয়নের লালাপুর গ্রামে চাঞ্চল্যেও সৃষ্টি হয়েছে। গ্রামের এক পক্ষের লোকজন সড়কে ইট সলিং বসালে পর অপর পক্ষ পরবর্তীতে উপড়ে ফেলে এ সলিং । এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওই এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে যে কোন সময় ঘটতে পারে সঘর্ষো মত মারাত্বক রক্তক্ষয়ী ঘটনা। ওই ঘটনায় মৌলভীবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৪নং আমল আদালতে ( মামলা নং-২২০/২০২০) লালাপুর গ্রামের গেদু মিয়া, আমীর আলী ও রেজান মিয়াসহ ১২ জনের নাম উল্যেখ করে মামলা দায়ের করেছেন একই গ্রামের শহীদ মিয়া নামের এক ব্যক্তি।
মামলা সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি লালাপুর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ সংলগ্ন কবরস্থানটি বিবাদীরা কৌশলে জাল দলীলের মাধ্যমে কবরস্থানের ভূমি দখলের চেষ্ঠা করছে। ঠিক এই কারণে একই গ্রামের রেজান মিয়ার নের্তৃত্বে একটি গ্রুপ মিলে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মসজিদেও পশ্চিমমস্থ কবরস্থানে এসে কবরস্থানের সাইনবোর্ড ও নাম ফলক উপড়ে ফেলার চেষ্ঠা করে। এই পরিস্থিতিতে রুমন আহমদ নামের এক যুবক বাধা দিলে তার উপর চড়াও হয়ে তাকে মারপিটসহ তীর নিক্ষেপ করে আহত করা হয়। পরবর্তীতে তাকে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়। এই ঘটনায় আরো অন্তত ৪/৫ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
ঘটনার অনুসন্ধানে সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, লালাপুর গ্রামস্থ কবরস্থানের পাশ দিয়ে ইট সলি করে যে সড়ক নির্মাণ করা হয়েছিল। সেই সলিং আর নেই। এখানকার সড়কের সব ইট উপড়ে ফেলে পাশের জমিতে ফেলে দেয়া হয়েছে। এছাড়াও ওই সড়কের উপরে কবরস্থানের নাম উল্যেখ করে একটি সাইনবোর্ড ও লাগানো হয়েছে। সাইনবোর্ডে লিখা আছে “ঐতিহ্যবাহী লালাপুর কবরস্থানের সরক্ষিত এলাকা”। সড়কের উপড় দিয়ে সুপারী গাছও রোপণ করা হয়েছে। এই কাজটি কারা করেছেন জানতে চাইলে একাধিক স্থানীয় লোকজন জানান, পবিত্র কবরস্থানের সম্মানে আমরা এগুলো উপড়ে ফেলে সড়কে সাইনবোর্ড ও সুপারী গাছ লাগিয়েছি।
বিষয়টি জানতে চাইলে গ্রামের রফিক মিয়া বলেন, এই কবরস্থানটি ২শ বছরের পুরানো। গ্রামের রেজান মিয়া ও জমির আলী জোরপূর্বক ইট বসিয়েছিল। পারবর্তীতে আমরা কবরস্থান মনে করে বসানো ইট উড়িয়ে দিয়েছি। লালাপুর জামে মসজিদের সহ-সভাপতি ফরিদ মিয়া কান্না বিজড়িত কন্ঠে এ প্রতিবেদককে বলেন, কবরস্থানের উপর আঘাত বরধাস্ত করতে পারছি না। অবৈধ কাগজ করে জোর পূর্বক তারা এ কাজটি করেছে। কবরে শায়িত মুর্দেগানদের সম্মান রক্ষায় আমরা মরতে বাধ্য। তাদের তৈরি রাস্থা ও ইট সলি আমরা উড়িয়ে দিয়েছি। বিষয়টি নিয়ে আলাপচারিতা হলে স্থানীয় ইউপি সদস্য রকিব আলী বলেন, এই ভূমি নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে মামলা চলছে। এর আগে স্থানীয় সালিশীগণ পাঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে কবরস্থানকে দুই ভাগ করে দিয়েছেন। এখন কোথা থেকে সমস্যা হচ্ছে বুঝতে পারছিনা। এদিকে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৪নং আমল আদালত বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করতে ডিবিকে দ্বায়িত্ব দিয়েছেন।
মন্তব্য করুন