শ্রীমঙ্গলে শীত বস্ত্র বিতরণে তেমন কোন উদ্যোগ নেই

শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি॥ চা বাগান বেষ্টিত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরুপ লীলাভুমি চায়ের রাজধানীখ্যাত মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল। বর্ষকালে এখানে যেমন বৃষ্টিপাত ঘটে তেমনি শীতকালে শীতের তীব্রতাও থাকে বেশি। এখন চলছে শীতকাল। দেশের উত্তরাঞ্চলে শীতের প্রকোপ পুরোদমে ঝেকে বসেছে। আর শ্রীমঙ্গলে এখন মাঝারি শৈত প্রবাহ পড়তে শুরু করেছে। বিকেল-সন্ধ্যা নামতেই হার কাপুনি দিয়ে শুরু হয় শীত। গেলো কয়েক দিন যাবৎ বেড়েই চলছে শীতের তান্ডব। শীতের তীব্রতায় শ্রীমঙ্গলের বিভিন্ন এলাকার গরীব দুঃস্থরা কষ্টে কাঁটায় রাত।
বিশেষ করে চা জনপদের মানুষ তীব্র শীতের কবলে। ফলে হাড় কাঁপানো শীতে জবুথবু হয়ে পড়েছে মানুষজন। ছিন্নমুল ও খেটে খাওয়া মানুষেরাও দূর্ভোগে পড়েছেন। যতই দিন যাচ্ছে তাপমাত্রার পারদ ততই নিচের দিকে নামছে। পৌষের শেষে এসে যেন হামলে পড়েছে শীত। ভোরে ঘন কুয়াশা আর কনকনে ঠান্ডায় কাবু হয়ে পড়েছেন ছিন্নমুল মানুষগুলো। তীব্র শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে উপজেলার মানুষ। অনেকেই টাকার অভাবে শীত বস্ত্র ক্রয় করতে পারছে না। এদের অধিকাংশ আশায় রয়েছে বিভিন্ন ধনী ব্যাক্তিদের উপর।
অসহায় দুঃস্থ লোকেরা গত বছরের মত এ বছরও আশায় বুক বাধেঁ ধনী ব্যাক্তি বা বিভিন্ন সংগঠনের কর্মীরা তাদের শীত বস্ত্র বিতরন করবে। শীত বেড়েই চলছে, কিন্তু শীত বস্ত্র বিতরনে তেমন উদ্যোগ এ বছর এখনো চোখে পড়ছে না। যাদের কোন বাসস্থান নেই তারা কি ভাবে রাস্তায় ঘুমাচ্ছে, তা দেখে অনেকেরই সাহায্য করার ইচ্ছা জাগলেও সামর্থ্যের অভাবে তারা পারছে না।
অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার সরকারি অধিদপ্তর থেকে এখনো জোড়ালোভাবে অসহায় দুঃস্থদের মাঝে শীত বস্ত্র বিতরনের কোন উদ্যোগ নেই। তাছাড়া অন্যান্য বছর বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনগুলোও শীত বস্ত্র বিতরন কওে থাকে। এবছর এখনো কোন সংগঠন শীত বস্ত্র বিতরনে এগিয়ে আসেনি। সমাজে যাদের টাকার কোন অভাব নেই, বৃত্তশালী যারা তাদের কোন সহযোগীতার দেখা মিলছে না। অথচ এই সকল লোকদের উপরে’ই আশাবাদী হয়ে আছে শ্রীমঙ্গলের দুঃস্থ অসহায় লোকেরা।
সরেজমিনে শ্রীমঙ্গল রেল ষ্টেশনস্থ এলাকায় গিয়ে দেখা যায় এক বৃদ্ধ লোক পুরোনো কম্বল গায়ে দিয়ে কুড়িমুড়ি হয়ে বসে আসেন। তার নাম মো. হাফিজ মিয়া । তিনি জানান শীতে অনেক কষ্ট হচ্ছে। আমরা গরীব অসহায় টাকার অভাবে শীতের কাপড় বা কম্বল কিনতে পারি না। কেউ আমাদের দিকে শীত বস্ত্র দিতে এগিয়ে আসছে না।
শহরের আউট সিগনাল এলাকার দরিদ্র মহিলা সুফিয়া বেগম বলেন আমি দিন মজুরি কাজ করি। যখন যে কাজ পাই সে কাজ করি। যা টাকা পাই তা দিয়ে পরিবারের লোকজনের খাবারের চাহিদাও মেঠানোও সম্ভব হয় না। আর এই হার কাপানোঁ শীতে রাতের বেলায় অনেক কষ্টে থাকি। শীত তাড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় কাথাঁ, কম্বল নেই। টাকার অভাবে কিনতে পারছি না। অন্যান্য বছর দেখা যায় ডিসেম্বরের শুরু থেকেই অনেকে কম্বল বিতরন করতো। কিন্তু এবছর এখনো পর্যন্ত আমাদের দিকে তাকায় নি।
এদিকে মৌলভীবাজার-৪ (শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য উপাধ্যক্ষ ড. মো: আব্দুস শহীদ এমপি ১ জানুয়ারি উপজেলায় কয়েকটি চা বাগান এলাকায় শতাধিক অসহায় গরীবদের মাঝে কম্বল বিতরন করেছেন বলে জানিয়েছেন আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা।
উপজেলার গরীব অসহায় ও দুঃস্থদের মাঝে শীত বস্ত্র বিতরনের জন্য উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানান শ্রীমঙ্গল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রনধীর কুমার দেব। তিনি জানান ইতিমধ্যে কয়েকটি এলাকায় গরীবদের মাঝে কম্বল বিতরন করা হয়েছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই উপজেলা প্রসাশনের উদ্যোগে চা বাগান এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় বসবাসরত অসহায় গরীবদের মাঝে কম্বল বিতরন করা হবে।
মন্তব্য করুন