৭ দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে বড়লেখায় ধর্ষণের শিকার কিশোরীর মৃত্যু

বড়লেখা প্রতিনিধি॥ বড়লেখায় ভালবেসে ঘর ছেড়ে প্রেমিক ও বখাটের হাতে রাতভর ধর্ষনের শিকার কিশোরী ৭ দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে সোমবার ২৫ জুলাই রাতে না ফেরার দেশে চলে গেছে। ধর্ষিতার বাবা দুই পাষু-ু উপজেলার সীমান্তবর্তী কুমারশাইল গ্রামের জহির আলীর ছেলে নিজাম উদ্দিন (৩৫) ও বিছরাবাজার গ্রামের (বর্তমান ঠিকানা কুমারশাইল) গুজা মিয়ার ছেলে আমির উদ্দিনের (২৫) বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছেন।
স্থানীয় এলাকাবাসী ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নের কুমারশাইল গ্রামের পাহাড়ি এলাকার কিশোরীর (১৭) সাথে সদর ইউনিয়নের বিছরাবাজার গ্রামের (বর্তমানে কুমারশাইল গ্রামে বসবাসরত) আমির উদ্দিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ১৭ জুলাই রাত ১২ টার দিকে প্রেমিক আমির উদ্দিন প্রেমিকাকে বিয়ের প্রলোভনে নিজ বাড়ি থেকে বের করে নিয়ে স্থানীয় চা বাগানের হুঙ্গালাটিলায় জোরপুর্বক রাতভর ধর্ষণ করে। এক পর্যায়ে গ্রামের নিজাম উদ্দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে আমিরকে ভয়ভীতি দেখিয়ে তাকে তাড়িয়ে সেও ধর্ষণ করে। ভোররাতে সে মেয়েটিকে বেরেঙ্গা চা বাগানের ম্যানেজার বাংলোর উত্তর পাশে ফেলে যায়।
এদিকে নিজাম আমিরকে তাড়িয়ে দেয়ার পর প্রেমিক আমির মেয়ের বাবার মোবাইল ফোনে হুঙ্গালাটিলা থেকে মেয়েকে উদ্ধারের কথা জানায়। অপরিচিত নম্বর থেকে কল পেয়ে বাবা ছেলেকে (ধর্ষিতকার ভাই) নিয়ে মেয়ের খোঁজে বের হন। কোথাও না পেয়ে তারা বাড়ি ফিরে যায়। খবর পেয়ে ১৮ জুলাই সকালে পরিবারের লোকজন বেরেঙ্গা চা বাগানের ম্যানেজার বাংলোর উত্তর পাশ থেকে রক্তাক্ত-মুমূর্ষু অবস্থায় কিশোরীকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেন। লোকলজ্জার ভয়ে বাবা ডাক্তারকে ধর্ষণের ঘটনাটি চাপা রাখেন। ২৩ জুলাই অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে বিয়ানীবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ২৫ জুলাই সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ধর্ষিতার মৃত্যু ঘটে।
মঙ্গলবার নিহত কিশোরীর বাবা অশ্রুসিক্ত নয়নে সাংবাদিকদের জানান, ‘আমি গরিব মানুষ, টাকার অভাবে মেয়ের চিকিৎসা করাইতে পারিনি। মান সম্মানের চিন্তা করে স্থানীয় মেম্বার ছাড়া কাউকে প্রথমে ঘটনা জানাইনি। আমি এত অসহায় একদিন কাজ বন্ধ করলে পরিবার দু’দিন উপবাস থাকে। আমি মেয়ের হত্যাকারীদের বিচার চাই। আমার মতো আর কোন বাবাকে এভাবে যেনো মেয়ের লাশ দেখতে না হয়।
থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান জানান, ঘটনাটি খুবই মর্মান্তিক। ২জনকে আসামী করে থানায় মামলা হয়েছে। ময়না তদন্ত শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আসামীদের গ্রেপ্তারে পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালাচ্ছে।
মন্তব্য করুন