তেল নিয়ে জেল-জরিমানা, প্রতিবাদে ব্যবসায়ী সমিতির ধর্মঘট, অবশেষে প্রত্যাহার

স্টাফ রিপোর্টার॥ ভোজ্য তেলের কৃত্রিম সংকট তৈরির দায়ে ব্যবসায়ীকে জেল জরিমানার প্রতিবাদে শহরের সকল মুদির দোকান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা দেন ব্যবসায়ীরা।
জানা যায়, শহরে ভোজ্য তেলের সংকট ভোক্তাদের এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে ৫মে বৃহস্পতিবার বিকালে পশ্চিমবাজার এলাকায় অভিযান চালান ভ্রাম্যমাণ আদালত। একদল পুলিশ ফোর্স নিয়ে অভিযানে নেতৃত্ব দেন মৌলভীবাজার সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোস্তাফিজুর রহমান। অভিযানের সময় ইউনিক এন্টারপ্রাইজে জব্দকৃত তেল উদ্ধার করে ৫০ হাজার টাকা নগদ অর্থ জরিমানা করলে জরিমানার টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানান দোকানের ব্যবস্থাপক। তখন জরিমানার টাকা অনাদায়ে দোকানের ব্যবস্থাপককে আটক করা হয়।
এ বিষয়ে ইউনিক এন্টারপ্রাইজের মালিক সৈয়দ মহিউদ্দিন শাহিন গণমাধ্যম কর্মীদের জানান তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে নিয়ম বহির্ভূতভাবে ভ্রাম্যমাণ আদালত নগদ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। তার দোকানে মোট ৫৪ লিটার ভোজ্য তেল ছিল। প্রতিদিনের বিক্রি অনুয়ায়ি ওই তেল পাইকারি ও খুচরা বিক্রির দোকানের জন্য সামান্য। ওই সামান্য তেল কিভাবে মজুদ রাখার অভিযোগ আনা হয় প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। পরে পাঁচ লিটার বোতলের এক কার্টন এবং এক লিটার পলিপ্যাক তেল নির্দিষ্ট প্রদর্শনীর স্থানে না রাখায় এই জরিমানা করা হয়।
তিনি বলেন, ঈদের আগে থেকেই ভোজ্য তেলের সংকটের কারণে আমাদের কাছে পর্যাপ্ত তেল নেই। তারপরও এই জরিমানা করা হয়। এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে ব্যবসায়ীরা শহরের কুসুমবাগ, পশ্চিম বাজার এবং চৌমোহনায় প্রতিবাদ সভা করে তারা অনির্দিষ্টকালের জন্য শহরের সকল মুদির দোকান বন্ধ ঘোষণা করেন।
একই বিষয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন, ইউনিক এন্টারপ্রাইজের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল তারা তেল মজুত রেখে বিক্রি না করে ক্রেতাদের ফিরিয়ে দিচ্ছেন। ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে অভিযান হয়। অভিযানের সময় তাদের কাছে জানতে চাওয়া হয় সয়াবিন তেল আছে কিনা। তখন তারা জানান সয়াবিন তেল তাদের কাছে নেই। তখন তাদের স্টোরে গিয়ে ৫৪ লিটার তেল পাওয়া যায়। অবৈধভাবে তেল মজুত করার দায়ে ইউনিক এন্টারপ্রাইজকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। পরে মানবিক দিক বিবেচনা করে কমিয়ে দশ হাজার জরিমানা, অনাদায়ে সাতদিনের জেল দেয়া হয়। কিন্তু সেটিও মেনে না নিলে দোকানের ব্যবস্থাপককে আটক করা হয়।
ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ জানান, এই ঘটনার প্রতিবাদে মৌলভীবাজার পৌর ব্যবসায়ী সমিতি অনির্দিষ্টকালের জন্য শহরের সকল মুদি দোকান বন্ধ ঘোষণা দেন। পরে রাতে মৌলভীবাজার চেম্বার অ্যান্ড কমার্স অ্যান্ড ইন্ডস্ট্রিজের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ কামাল হোসেনের মধ্যস্থতায় ব্যবসায়ীরা অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট প্রত্যাহার করেন।
মন্তব্য করুন