বড়লেখায় রেলওয়ের লীজ গ্রহীতার ভূমি জবর দখ/ল ও স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগ

June 16, 2025,

আব্দুর রব : বড়লেখায় রেলওয়ের ভূ-সম্পত্তি বিভাগ কর্তৃক প্রদত্ত একজন লীজ গ্রহীতার প্রায় দেড়কোটি টাকা মূল্যের ভূমি জবদখল ও স্থাপনা নির্মাণের অপচেষ্টার অভিযোগ ওঠেছে এবাদুর রহমান, হোসেন আহমদ খান, ইকবাল হোসেন, শরফ উদ্দিন ও তানভীর হোসেন নামক পাঁচ ব্যক্তির বিরুদ্ধে।

এব্যাপারে লীজ গ্রহীতার ছেলে মঞ্জুরুল হান্নান জবর-দখল অপচেষ্টাকারীদের বিরুদ্ধে বড়লেখা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পিটিশিন মামলা (নম্বর-০৯/২৫) করেছেন। বিরোধীয় ভূমিতে আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আদালত থানার ওসিকে নির্দেশ দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে এসআই দেবল চন্দ্র সরকার ৫ জুন বিরোধীয় ভূমিতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৪৪ ধারা জারি করে কোনো তৎপরতা না চালাতে বিবাদীদের নোটিশ প্রদান করেন। তবে, বাদীপক্ষের অভিযোগ বিবাদিরা জবর-দখল অপচেষ্টা ও স্থাপনা নির্মান কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।

জানা গেছে, বড়লেখা উপজেলার বারইগ্রামের সাবেক প্রধান শিক্ষক আব্দুল হান্নান প্রায় ২৮ বছর আগে নিজ বসতবাড়ি সংলগ্ন বড়লেখা রেলষ্টেশনের উত্তর পশ্চিম দিকে বারইগ্রাম মৌজার ৩৩২ নম্বর দাগের রেলওয়ের ৫১ শতাংশ কৃষিজমি রেলওয়ের ভু-সম্পত্তি বিভাগ থেকে ইজারা নিয়ে ভোগাধিকার করেন। প্রতিবছর যথারীতি তিনি রাজস্বাদিও (খাজনা) পরিশোধ করেন। কিন্ত ২০১৫ সালের শেষের দিকে হঠাৎ উপজেলার ফকিরবাজারের ফরিজ আলী, তার ছেলে এবাদুর রহমান গংরা উক্ত কৃষিজমি তাদের মৌরসী দাবী করে জবর-দখলের উদ্দেশ্যে মাটি ভরাট করতে থাকেন। ইজারাদারের বাধানিষেধ অমান্য করে তারা দখলীয় ভুমির একাংশে দোকানকোটাও নির্মাণ করেন। এসময় ইকবাল হোসেন গংরা বিরোধীয় ভূমি মৌরসী মালিক দাবি করে দখলীয় রেলওয়ের ভূমিতে জোরপূর্বক নির্মিত দোকান কোটা ও গৃহ সংস্কারের অনুমতি চেয়ে ২০১৫ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর সহকারি জজ আদালত বড়লেখা মৌলভীবাজারে জেলা প্রশাসক, রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলীয় বিভাগী এষ্টেট অফিসার, লীজ গ্রহীতা আব্দুল হান্নানসহ পাঁচজনকে বিবাদী করে স্বত্ত মামলা (নম্বর-১৪৮/২০১৫) করেন। আদালত শুনানি, কমিশন ও রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করে চলিত বছরের ২৯ এপ্রিল স্বত্ত মামলাটি না-মঞ্জুর করেন। মামলা খারিজের পরও এবাদুর রহমান, হোসেন আহমদ খান, ইকবাল হোসেন গংরা আব্দুল হান্নানের নামীয় রেলওয়ের লীজকৃত ভূমির জবর-দখল তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে। সম্প্রতি উক্ত ভূমিতে স্থাপনা নির্মাণের লক্ষ্যে পাকা খুটি পুতে উপরে টিন স্থাপন এবং অন্যান্য নির্মাণ সামগ্রী জড়ো করেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, জবরদখলকৃত ভূমিতে নির্মিত পুরনো টিনসেট বসতবাড়ি ও দোকানকোটার পাশের ভূমিতে নতুন করে ঘর নির্মাণের জন্য বেশ কয়েকটি খুটি দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। ছাউনিতে ঢেউটিন লাগানো। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশে থানা পুলিশ ৫ জুন বিরোধীয় ভূমির উপর ১৪৪ ধারা জারি করে নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখতে বিবাদী পক্ষকে নোটিশ প্রদান করে। এর কয়েক দিন বিবাদীরা স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ রাখলেও শনিবার থেকে আদালতের নির্দেশ অমান্য করে কাজকর্ম চালাচ্ছেন।

এব্যাপারে থানার এসআই দেবল চন্দ্র সরকার জানান, আদালতের নির্দেশে বিরোধীয় ভূমিতে ১৪৪ ধারা জারি করে সবধরণের কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন। বিবাদীরা এখন যদি আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে থাকে তবে, সরেজমিনে তদন্ত করে আদালতে আরেকটি প্রতিবেদন জমা দিবেন।

রেলওয়ে প্রদত্ত লীজগ্রহীতার ভূমি জবরদখল ও স্থাপনা নির্মাণ অপচেষ্টাকারীদের প্রধান অভিযুক্ত এবাদুর রহমান ২০১৫ সালে দায়েরকৃত স্বত্ত মামলাটি আদালতে না-মঞ্জুর হওয়ার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, তথ্যগত ভুলের জন্য মামলাটি পাননি। আবারও মামলা করবেন। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নির্দেশনা অমান্যের অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেন

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com