বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখছেন বড়লেখার বদরুল কিডনি প্রতিস্থাপন তহবিলে ২ সপ্তাহে ২৫ লাখ টাকা সংগ্রহ

July 2, 2020,

আব্দুর রব॥ বড়লেখা উপজেলার প্রবাস ফেরত যুবক বদরুল ইসলাম (৩২)। দু’টি কিডনি অকেজো হয়ে যাওয়ায় অর্থাভাবে কিডনি প্রতিস্থাপন করতে না পেরে তিনি মৃত্যুর প্রহর গুনছিলেন। অবশেষে তার কিডনি প্রতিস্থাপনে গঠিত তহবিলে মাত্র ২ সপ্তাহে ২৫ লক্ষ টাকা সংগ্রহ করেছে শিক্ষা ও সেবা ফাউন্ডেশন কাঠালতলী। সোমবার ২৯ জুন এ তথ্য জানিয়েছেন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান প্রধান শিক্ষক সেলিম আহমদ। এদিকে বদরুল বর্তমানে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। মানুষের সহায়তায় তিনি বেঁেচ থাকার স্বপ্ন দেখছেন। আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলেই কিডনি প্রতিস্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছে তার পরিবার।
জানা গেছে, উপজেলার দক্ষিণভাগ উত্তর (কাঠালতলী) ইউনিয়নের বাসিন্দা বদরুল ইসলাম কয়েক বছর ধরে দুবাই প্রবাসী। প্রায় ৬ মাস আগে হঠাৎ শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে তিনি সেখানকার চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। পরীক্ষা নিরীক্ষার পর চিকিৎসকেরা জানান তার দু’টি কিডনিই অকেজো। এ অবস্থায় বদরুল দেশে চলে ফিরে ডায়ালাইসিসসহ অন্যান্য চিকিৎসা করতে থাকেন। একসময় চিকিৎসকরা জানান দ্রুত কিডনি প্রতিস্থাপন প্রয়োজন। বদরুলের ছোটভাই ভাই ছয়ফুল ইসলাম নিজের একটি কিডনি বড়ভাই বদরুলকে দিতে প্রস্তুত হন। কিন্তু কিডনি প্রতিস্থাপনে এককালীন ২৫ লাখ টাকা পরিবারের পক্ষে যোগাড় করা কোন অবস্থায় সম্ভব হচ্ছিল না। তাছাড়া দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসার খরচ চালাতে গিয়েও বদরুলের পরিবারের বড় অংকের টাকা খরচ হয়েছে। যা জমি বিক্রি করে যোগাড় করা হয়েছিল। উপায়ন্তর না দেখে বদরুলের বড়ভাই প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক মিলাদ হোসেন স্থানীয় শিক্ষা ও সেবা ফাউন্ডেশনের কাছে সাহায্যের আবেদন করেন। শিক্ষা ও সেবা ফাউন্ডেশনের পক্ষেও এককালীন এত টাকা সহায়তা বেশ কষ্টকর ছিলো। তাই মিলাদ হোসেনের পরিবারের অনুমতি সাপেক্ষে ফাউন্ডেশনের পরিচালক কলাজুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছয়ফুল হক সাহায্য চেয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করেন। বিষয়টি স্থানীয় অনেক প্রবাসীদের নজরে আসলে তারাও প্রচারণায় যুক্ত হন। এরপর সবার পরামর্শে সাহায্যের আবেদন চেয়ে বদরুল ইসলামের বড়ভাই শিক্ষক মিলাদ হোসেনের একটি ভিডিও বার্তা পোস্ট করেন। এরপর থেকেই দেশে-বিদেশে থাকা অনেকেই এগিয়ে আসেন। সামাজিক সংগঠনের মাধ্যমে প্রবাসীরা সাহায্য পাঠাতে থাকেন। এগিয়ে আসে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক পরিবারও। এতে মাত্র দুই সপ্তাহে ২৫ লক্ষ টাকা সংগ্রহ হওয়ায় তহবিল সংগ্রহ সমাপ্ত ঘোষণা করে আর অনুদান প্রদান না করার জন্য ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
বদরুলের বড়ভাই শিক্ষক মিলাদ হোসেন জানান, ‘সবার সহযোগিতা না পেলে আমার পরিবার এত টাকা সংকুলান করতে পারত না। সবার সহযোগিতায় আমার ভাই বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখছে। কিডনি প্রতিস্থাপনের পূর্বপ্রস্তুতি চলছে।

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com