বড়লেখায় করোনা আক্রান্তদের জন্য প্রেসক্লাবের ব্যতিক্রমী উদ্যোগ
বিশেষ প্রতিনিধি॥ বড়লেখায় করোনা আক্রান্তদের জন্য ব্যতিক্রমী এক উদ্যোগ নিয়েছে বড়লেখা প্রেসক্লাব। আক্রান্ত ব্যক্তিদের মনোবল বাড়াতে তাদের বাড়িতে পাঠানো হচ্ছে ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ ফলমূল। শুক্রবার বিকেলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেণক্সের এক ওয়ার্ডবয়ের (৩৫) বাড়িতে ফলমূল পাঠানো হয়েছে। ২৩ মে শনিবার আক্রান্ত অন্য একজনের বাড়িতেও ফলমূল পাঠানো হয়েছে। এসময় প্রেসক্লাব সদস্য সাংবাদিক তপন কুমার দাস ছাড়াও বড়লেখা ফ্রেন্ডস ক্লাব ইউকে’র প্রতিনিধি শিক্ষক মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন, স্থানীয় শিক্ষক দেলোয়ার হোসেন, জাকির হোসেন, তরুণ সমাজসেবক জসিম উদ্দিন, নুরুল ইসলাম, মাছুম উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। ধারাবাহিকভাবে সকল কোরনা রোগীর বাড়িতে উপহার স্বরূপ ফলমুল পাঠাবে বড়লেখা প্রেসক্লাব।
জানা গেছে,১৭ মে হাসপাতালের এক ওয়ার্ড বয়ের করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হয়। এরপর হাসপাতালের চিকিৎসকসহ ৩৯ জনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়। ২১ মে রাতে তাদের নমুনা পরীক্ষার প্রতিবেদন আসে। এরমধ্যে ৩ চিকিৎসকের করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে। যদিও তাদের কারোই করোনার কোনো লক্ষণ বা উপসর্গ ছিল না। ধারণা করা হচ্ছে, তারা আক্রান্ত কারো মাধ্যমে সংক্রমিত হয়েছেন। ৩ চিকিৎসক হাসপাতালের কোয়ার্টারে আইসোলেশনে রয়েছেন। এছাড়া করোনা আক্রান্ত হাসপাতালের ওয়ার্ডবয় নিজ বাড়িতে আইসোলেশনে রয়েছেন।
এ নিয়ে বড়লেখা উপজেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭ জনে। এরমধ্যে প্রথম আক্রান্ত ব্যক্তি সুস্থ হয়ে ওঠেছেন। বাকি ২ রোগী বাড়িতে আইসোলেশনে রয়েছেন। তারা অনেকটা সুস্থ হয়ে ওঠেছেন। এদিকে আক্রান্ত এসব ব্যক্তিদের মনোবল বাড়াতে তাদের বাড়িতে ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ ফলমূল পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছে বড়লেখা প্রেসক্লাব। শুক্রবার বিকেলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক ওয়ার্ডবয়ের (৩৫) বাড়িতে ফলমূল পাঠানো হয়েছে। ধারাবাহিকভাবে আক্রান্ত অন্যদের বাড়িতেও ফলমূল পাঠানো হচ্ছে।
প্রেসক্লাব সদস্য সাংবাদিক তপন কুমার দাস জানান, অনেকেই আক্রান্ত ব্যক্তিকে অবহেলা করেন। বিভিন্ন জায়গায় তাদের পরিবারের সাথে খারাপ আচরণের খবরও শোনা যায়। যা মোটেও ঠিক নয়। করোনা রোগীকে অবহেলা না করে তাদের মনোবল ভালো রাখতে সবার উচিত তাদের পাশে দাঁড়ানো। এতে করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির মনোবল অনেকটা বৃদ্ধি পাবে। আজকে আমরা একজনের বাড়িতে ফলমূল পাঠিয়েছি। পর্যায়ক্রমে আক্রান্ত অন্যদের বাড়িতেও ফলমূল পাঠাবো। ওই রোগীর এলাকার লোকজনকে ধন্যবাদ জানাই। তারা ওই পরিবারকে নানাভাবে সহযোগিতা করছেন। এমন খবর শোনে ভালো লেগেছে।
প্রেসক্লাবের সম্পাদক অ্যাডভোকেট গোপাল দত্ত জানান, করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি ও তাদের পরিবারকে অনেকেই অবেহেলা ও সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করেন। এতে আক্রান্ত ব্যক্তি মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েন। সবার উচিত আক্রান্ত ব্যক্তি ও তার পরিবারের সাথে মানবিক আচরণ করা। তাই আমরা আক্রান্ত ব্যক্তিদের মনোবল বাড়াতে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছি। তাদের ফলমূল দিচ্ছি। যাতে তারা মনোবল না হারান। অন্যরাও তাদের পাশে এসে দাঁড়ান। এছাড়া চিকিৎসকরা জানিয়েছেন এই সময় ভিটামিন ‘সি’ জাতীয় খাবার অনেকটা উপকারি। তাই ফলমূল পাঠাচ্ছি।
ফ্রেন্ডস ক্লাব ইউকের প্রতিনিধি শিক্ষক মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন জানান, করোনা আক্রান্তদের বাড়িতে ফলমূল পাঠিয়ে বড়লেখা প্রেসক্লাব দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এটি মহৎ উদ্যোগ। যা নিঃসন্দেহ প্রশংসার দাবি রাখে। সমাজে সবার উচিত করানো আক্রান্ত ব্যক্তিকে অবহেলা না করে বড়লেখা প্রেসক্লাবের মতো তাদের পাশে এসে দাঁড়ানো। এতে সবার দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টে যাবে।
মন্তব্য করুন