সোনালী ব্যাংক লকডাউনে থাকায় বেতন ভাতা উত্তোলন করতে না পারায় গ্রাহকদের চরম দুর্ভোগ
প্রনীত রঞ্জন দেবনাথ॥ কমলগঞ্জ উপজেলার একমাত্র ট্রেজারী শাখা সোনালী ব্যাংক কমলগঞ্জ শাখা ৩ মে থেকে লকডাউনে রয়েছে। ট্রেজারী শাখা বন্ধ থাকায় এক সপ্তাহ থেকে কমলগঞ্জ উপজেলার সরকারি কর্মকর্তা, কর্মচারি, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষকদের বেতন ও বিভিন্ন ভাতা উত্তোলন করা যাচ্ছে না। একই সাথে উপজেলার প্রশাসনিক লেনদেনও বন্ধ রয়েছে। এমতাবস্থায় বেতনভাতা উত্তোলন করতে না পেরে সরকারি কর্মকর্তা, কর্মচারি, শিক্ষক ও ভাতাভোগীরা চরম দুর্ভোগের মাঝে পড়েছেন।
২ মে শুক্রবার কমলগঞ্জে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন সোনালী ব্যাংক কমলগঞ্জ শাখার একজন কর্মকর্তা (ক্যাশ) ও একজন নিরাপত্তাকর্মী আনসার সদস্য। ফলে সোনালী ব্যাংক প্রধান কার্যালয়ের বরাত দিয়ে আঞ্চলিক শাখা মৌলভীবাজার কর্তৃক সোনালী ব্যাংক কমলগঞ্জ শাখাকে পরদিন ৩ মে শনিবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য লকডাউন ঘোষণা করেছে। পরে সোনালী ব্যাংক কমলগঞ্জ শাখার সকল স্টাফদের নমুনা সংগ্রহ করে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। নমুনা সংগ্রহ করলেও ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক ও একজন কর্মকর্তার রিপোর্ট শনিবার ৯ মে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত আসেনি। এদের রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত ব্যাংক খোলা যাচ্ছে না বলে ব্যাংকের একটি ঘনিষ্ট সূত্রে জানা যায়। তবে দু’একদিনের রিপোর্ট আসবে বলে আশা করা যায়। উপজেলার একমাত্র ট্রেজারী ব্যাংক শাখা থাকায় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন ও সুবিধাভোগীদের বিভিন্ন ধরণের ভাতা প্রাপ্তি নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কমলগঞ্জ উপজেলা হিসাব রক্ষণ অফিসের এক কর্মকর্তা বলেন, গত এক সপ্তাহে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারি, শিক্ষক ও ভাতাভোগীদের ৫ কোটি টাকার চেক ইস্যু করা হয়েছে। তবে ট্রেজারী শাখা সোনালী ব্যাংক কমলগঞ্জ শাখা লকডাউনে থাকায় কেউই চেকের টাকা উত্তোলন করতে পারছেন না। তাছাড়া সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের টাকার লেনদেন এর টাকাও উত্তোলন করা যাচ্ছে না।
কমলগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা অফিস সুত্র জানায়, এমনিতেই শিক্ষকরা করোনা আতঙ্কিত। এর মাঝে মাসিক বেতনের টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করতে না পেরে ভোগান্তির শিকার।
সোনালী ব্যাংক কমলগঞ্জ শাখা ব্যবস্থাপক আব্দুল কাইয়ুম মাসুম সাময়িক লকডাউনের কথা স্বীকার করে বলেন, এ শাখাটি কমলগঞ্জ উপজেলা সদরের ট্রেজারী শাখা ছিল। সরকারি সকল লেনদেন, বেতন ভাতা, মুক্তিযোদ্ধা ও সুবিধাভোগীদের ভাতা এ শাখা থেকে প্রদান করা হত।
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশেকুল হক বলেন, টানা এক সপ্তাহ একটি ট্রেজারী ব্যাংক শাখা বন্ধে কমলগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন, কর্মকর্তা-কর্মচারি, সরকারি শিক্ষক ও ভাতাভোগীরা চরম দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন। এ ব্যাংক শাখাটি খোলার বিষয়ে সোনালী ব্যাংকের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা হয়েছে। তিনি আশাবাদি আগামী দু’একদিনের মধ্যে সোনালী ব্যাংক কমলগঞ্জ শাখা খোলা হবে।
মন্তব্য করুন