হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যবাহী চুঙ্গা পিঠা উৎসব

February 13, 2021,

প্রনীত রঞ্জন দেবনাথ॥ বাঙালির চিরায়ত সংস্কৃতি সিলেটের ঐতিহ্যবাহী চুঙ্গাপিঠা। কালের আবর্তে এই পিঠা হারিয়ে যেতে বসেছে। পূর্বেকার সময়ে শীতের রাতে বাড়িঘরে চুঙ্গাপিঠা ও উৎসব হতো। পৌষ সংক্রান্তিতে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকেরা মহাসমারোহে চুঙ্গা পিঠা বানিয়ে অনুষ্ঠানাদি সম্পন্ন করতো। বর্তমানে এগুলো স্বপ্নের মতোই মনে হয়। বৃহত্তর সিলেটের এই ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার পতনউষারে কবি জয়নাল আবেদীন ব্যতিক্রমী চুঙ্গাপিঠা উৎসবের আয়োজন করেন। বৃহস্পতিবার ১১ ফেব্রুয়ারী রাত ১০ টায় নিজ বাড়িতে এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।
সিলেটের আঞ্চলিক ভাষায় উন্মুক্ত অনুষ্ঠানে আলোচনা, গান, গল্প, কৌতুক, কবিতা আবৃত্তি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে মধ্যরাত পর্যন্ত চুঙ্গাপিঠা উৎসব পরিচালিত হয়। সংস্কৃতি কর্মী মহসিন আহমদ কয়েস ও আব্দুল মুকিত হাসানীর সঞ্চালনায় এসব অনুষ্ঠানে অংশ নেন কবি শহীদ সাগ্নিক, টি এস্টেট স্টাফ এসোসিয়েশনের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক মো. জাকারিয়া, সাংবাদিক নূরুল মোহাইমীন মিল্টন, রাজনীতিবিদ অলি আহমদ খান, টি এস্টেট স্টাফ এসোসিয়েশনের নেতা তালুকদার আমীনুর রহমান, সমাজ সেবক তোয়াবুর রহমান, শিক্ষক আব্দুল লতিফ, হরমুজ আলী প্রমুখ। সঙ্গীত পরিবেশন করেন মুজিবুর রহমান চৌধুরী শেফুল, কবি জয়নাল আবেদীন, আব্দুল জলির।
চুঙ্গা পিঠা উৎসবের আয়োজক জয়নাল আবেদীন জানান, আমাদের হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে এবার তৃতীয় বছরের মতো আয়োজন। এজন্য ব্যাপক উৎসাহের মধ্যদিয়ে সন্ধ্যার পর থেকে বাঁশের মধ্যে চালের গুড়ি প্রবেশ করানো হয়। পরে বিছিয়ে রাখা খড়ের মধ্যে চালের গুড়ি ভর্তি বাঁশের চুঙ্গার উপর আগুন লাগিয়ে দেয়া হয়। একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় প্রায় আধাঘন্টা সময়ে বাঁশের চুঙ্গা পুড়তে থাকে। এরপর আখের রস থেকে তৈরি লালি দিয়ে সিদ্ধ ও গরম গরম পিঠা আপ্যায়নের উৎসব শুরু হয়। পরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com