রাজনগরে দুই মাস থেকে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের পদ শূণ্য

November 26, 2025,

শংকর দুলাল দেব : রাজনগর উপজেলায় দুই মাস ধরে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের পদ শূণ্য থাকায় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সরকারি দপ্তর সহ সার্বিক উন্নয়ন কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। রাজনগরের সহকারী কমিশনার(ভূমি) আর্থিক ক্ষমতাহীন ভারপ্রাপ্ত ইউএনও হিসেবে দায়িত্ব পালন করায় সৃষ্টি হয়েছে জটিলতা। ইউএনও’র স্বাক্ষর ছাড়া যেমন বেতন ভাতা হয় না কর্মচারীদের তেমনি উপজেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ বিভিন্ন দাপ্তরিক কর্ণধার হওয়ায় বিভিন্ন ফাইলে তাকেই স্বাক্ষর দিতে হয়। কিন্তু বিগত দুই মাস ধরে এ জনগুরুত্বপূর্ণ পদটি চলছে আর্থিক ক্ষমতাহীন ভারপ্রাপ্ত দিয়ে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অফিস সূত্রে জানাযায়, সাবেক উপজেলা নির্বাহী অফিসার আফরোজা হাবিব শাপলা গত ৬ অক্টোবর বদলি হওয়ার পর থেকে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে রুটিন দায়িত্ব পালন করেছেন রাজনগর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফাতেমা তুজ জহুরা। তিনি দায়িত্ব গ্রহন করে সাধারণ বিষয় গুলো দেখভাল করলেও আর্থিক বিষয়ে স্বাক্ষরের দায়িত্ব তাকে দেয়া হয়নি। এদিকে উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এডহক কমিটির সভাপতি হওয়ায় প্রতিষ্ঠান গুলোতে আর্থিক লেনদেন বন্ধ রয়েছে। ফলে চলমান বার্ষিক পরীক্ষা, আসন্ন জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষা, বোর্ড সংশ্লিষ্ট কার্যক্রমে চরম অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভূমি)কে ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসারের রুটিন দায়িত্ব দিলেও আর্থিক বিষয়ে স্বাক্ষরের ক্ষমতা দেয়া হয়নি। এছাড়া সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কার্যক্রমেও একই অবস্থা। উপজেলা প্রকল্প অফিসের টিআর, কাবিখা’র ১ম পর্যায়ের তালিকা প্রস্তুত করলেও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের স্বাক্ষরের অভাবে তা পাস হয়নি। এছাড়াও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের বিভিন্ন কাজের বিল প্রস্তুত হলেও নির্বাহী অফিসারের স্বাক্ষরের কারণে আটকে আছে উন্নয়ন কার্যক্রম। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানগুলা বিল পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিস, শিক্ষা অফিস, ইউনিয়ন পরিষদ সহ বিভন্ন প্রাতিষ্ঠানিক কাজে অচলাবস্থা বিরাজ করছে। আটকে আছে শিক্ষক, কর্মচারীদের বেতন ভাতা। বিগত মাসে বেতন পাননি নির্বাহী অফিসারের কর্মচারীরাও। চলতি মাসেও বেতন ভাতা হবে কিনা সন্দেহ রয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মচারী জানান, আমরা ছোট চাকরি করি। আমাদের বেতনও সামান্য। বর্তমান উচ্চ মূল্যের বাজারে এমনিতেই বেতনে পুষেনা। বাকিতে মাসের বাজার চালাই। কিন্তু নির্বাহী অফিসার না থাকায় আমাদের বেতন ভাতা হচ্ছে না। গত মাসে বেতন পাইনি। চলতি মাসের বেতন কবে পাবো তাও বলতে পারছি না। অপর এক কর্মচারী বলেন, আমি দোকান থেকে বাকিতে খাই। মাস শেষে বেতন পেয়ে তা পরিশোধ করি। কিন্তু বিগত মাসে পরিশোধ করতে পারিনি।

এবিষয়ে মৌলভীবাজারের নবনিযুক্ত জেলা প্রশাসক তৌহিদুজ্জামান পাভেলের মোবাইল কল দিলেও তিনি কল রিসিভ করেন নি। এব্যাপারে রাজনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ফাতেমা তুজ জহুরা বলেন, আমি ভারপ্রাপ্ত হিসেবে রুটিন দায়িত্ব পালন করছি। আর্থিক বিষয়ে আলাদা করে দায়িত্ব দিতে হয়। এটি না থাকায় আমি স্বাক্ষর করতে পারছি না।

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com