কমলগঞ্জে ঘরে ঘরে চোখ ওঠা রোগী

প্রনীত রঞ্জন দেবনাথ॥ কমলগঞ্জে ঘরে ঘরে বাড়ছে চোখ ওঠা রোগে আক্রান্তদের সংখ্যা। গত এক সপ্তাহে এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন এ উপজেলার দুই থেকে তিন হাজার বাসিন্দা। জেলা-উপজেলায় সরকারি-বেসরকারি চক্ষু হাসপাতালে আক্রান্তদের ভিড় বাড়ছে। তাছাড়া স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চোখ ওঠা রোগীর সংখ্যা বাড়ছে দিন দিন।
এই রোগটি চোখ ওঠা নামেই পরিচিত। রোগটি ছোঁয়াচে। তাই দ্রুত অন্যদের মধ্যে ছড়ায়। চিকিৎসকরা জানান, গরমে আর বর্ষায় ও ঋতু পরিবর্তনের সময় চোখ ওঠা রোগের প্রকোপ বাড়ে। কনজাঙ্কটিভাইটিসের লক্ষণ হলো চোখের নিচের অংশ লাল হয়ে যাওয়া, চোখে ব্যথা বা অস্বস্তি। প্রথমে এক চোখ আক্রান্ত হয়। পরে অন্য চোখে ছড়িয়ে পড়ে। এ রোগে চোখ থেকে পানি পড়তে থাকে। চোখের নিচের অংশ ফুলে ও লাল হয়ে যায়। আলোয় চোখে অস্বস্তি বাড়ে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রতিদিনই চোখ ওঠা রোগে আক্রান্ত রোগীরা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসছেন। উপজেলা সদর ছাড়াও গ্রাম এলাকায় বাড়ছে এই রোগে আক্রান্তের সংখ্যা। তবে চিকিৎসকরা বলছেন, এ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার তেমন কিছু নেই। এটি এক ধরনের ভাইরাসজনিত রোগ। এক সপ্তাহের মধ্যে তা সেরে যায়। চিকিৎসা বিজ্ঞানে এই রোগটিকে কনজাঙ্কটিভাইটিস বা চোখের আবরণ কনজাঙ্কটিভার প্রদাহ বলা হয়।
চিকিৎসকরা বলেন, এ রোগটি আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শ থেকে ছড়ায়। রোগীর ব্যবহারের রুমাল, তোয়ালে, বালিশ অন্যরা ব্যবহার করলে এতে আক্রান্ত হয়। এ ছাড়া এটি বাতাসের মাধ্যমেও ছড়ায়। আক্রান্ত ব্যক্তিকে সাবান পানি দিয়ে কিছুক্ষণ পরপরই হাত পরিষ্কার করতে হবে। কোনো কারণে চোখ ভেজা থাকলে চোখ টিস্যু পেপার দিয়ে মুছে নিতে হবে। ব্যবহারের পর টিস্যু পেপারটি অবশ্যই ময়লার ঝুড়িতে ফেলে দিতে হবে। এছাড়া চোখ উঠলে কালো চশমা ব্যবহার করা ভালো। এতে চোখে স্পর্শ করা কমবে এবং ধুলাবালু, ধোঁয়া থেকে চোখ রক্ষা পাবে। আলোয় অস্বস্তিও কমবে। এছাড়া চিকিৎসকের পরামর্শে ড্রপ ও ঔষুধ ব্যবহার করা যায়।
চোখ ওটা রোগী মো. সাদেক মিয়া বলেন,‘গতকাল হঠাৎ দেখি চোখ লাল হয়ে গেছে,ভাবলাম চোখে বালি বা অন্য কিছু পড়েছে,তাই পাশের বাড়ি থেকে পানি পরা এনে চোখে দিলাম,কোন লাভ হলো না। পরের দিন দেখি এক চোখ পড়ো লাল হয়ে আছে,তখন বাড়ির পাশে উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র সেখানে গিয়ে ডাক্তারকে দেখালাম তখন তিনি বললেন আমার চোখ ওঠেছে। কিছু নিয়ম মানতে হবে সাথে ঔষুধ ও ড্রপ ব্যবহার করার জন্য বললেন। এখন আমার দুই চোখ লাল হয়ে আছে,ডাক্তারের দেওয়া ঔষুধ খাচ্ছি ও ড্রফ ব্যবহার করছি। দেখি কমে কি না।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মাহবুবুল আলম ভূঁইয়া জানান, ‘চোখ ওঠা একটি ভাইরাসজনিত রোগ। তবে এতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। তিনি বলেন, যেহেতু রোগটি ছোঁয়াচে তাই করোনায় যে রকম স্বাস্থ্যবিধি ঠিক অনেকটাই ওই রকমই মানতে হয়। তবে ড্রপ ব্যবহারের আগে এর মান ও মেয়াদ সম্পর্কে অবগত থাকতে হবে। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা সেবা নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।’
মন্তব্য করুন