কমলগঞ্জে রসালো তালের শাঁসের কদর বেড়েছে

May 24, 2025,

কমলগঞ্জ প্রতিনিধি : স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে রসালো তালের শাঁসের কদর বেড়েছে। একটু স্বস্তি পেতে রাস্তার পাশে ফুটপাতে বিক্রি হওয়া এই ফলের স্বাদ নিচ্ছেন অনেকে। এর বেশিরভাগ অংশ জলীয় হওয়ায় এটা খেলে দ্রুত শরীরে পানিশূন্যতা দূর হয়।

কমলগঞ্জ উপজেলার ভানুগাছ বাজারের চৌমুহনী রোড, আদমপুর, রানীবাজার, ভানুগাছ বাজার, শমশেরনগর, মুন্সিবাজার বাজারসহ অস্থায়ী বাজারগুলোতে বিক্রি হচ্ছে কাঁচা-পাকা তাল। বিক্রেতারা স্থানীয়ভাবে এগুলো সংগ্রহের পাশাপাশি দেশের নানা জায়গা থেকে আমদানিও করে থাকেন। মৌসুমি এ ফল এখন গ্রামীণ অর্থনীতিতেও ভূমিকা রাখছে। অনেকেই বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন রসালো শাঁস। দাম কিছুটা বেশি হলেও তাজা ও ফরমালিনমুক্ত তালের শাঁস শরীরের জন্য খুবই উপকারী। গরমের দিনে এতে থাকা জলীয় অংশ পানিশূন্যতা দূর করে, দৃষ্টিশক্তি উন্নত করে এবং মুখের রুচিও বাড়ায়। তালের শাঁসে রয়েছে ক্যালসিয়াম, ভিটামিন এ, বি ও সি-সহ নানা ধরনের পুষ্টি উপাদান।

সড়জমিনে বিভিন্ন উপজেলা ঘুড়ে দেখা যায়, উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজার ও ব্যস্ত সড়কের পাশে তালের শাঁস বিক্রি করছেন অনেকে। ক্রেতারাও আগ্রহ নিয়ে খাচ্ছেন এ ফল। সুস্বাধু এ ফলটি ধারলো দা দিয়ে তাল কেটে তালের শাঁস বের করছেন আর ক্রেতারাও অনেক আগ্রহ নিয়ে এগুলো কিনছেন। মৌসুমি অনেক ফলের সাথে এ ফলের চাহিদা বেড়েছে। যার ফলে বিভিন্ন শ্রেণির পেশার মানুষকে খেতে দেখা যায় এ সুস্বাধু তালের শাঁস।

কমলগঞ্জ পৌর এলাকার তালের শাঁস বিক্রেতা শাহজাহান মিয়া বলেন, উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে তাল সংগ্রহ করি। প্রতিটি তাল ১০ থেকে ১৫ টাকায় পাইকারি কিনে এনে বাজারে খুচরা ২০ থেকে ২৫ টাকা দরে বিক্রি করি।

তিনি আরও বলেন, এবছর আমি জেলার ১৪টি গ্রাম থেকে তাল সংগ্রহ করেছি। জেলার বিভিন্ন স্থানে গিয়ে তাল বিক্রি করছি। গরমের সঙ্গে তালের শাঁসের চাহিদা বেড়েছে। প্রতি বছর বৈশাখের মাঝামাঝি থেকে জ্যৈষ্ঠের শেষ পর্যন্ত তালের শাঁস বিক্রি করি। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ৩০০ থেকে ৪০০টি শাঁস বিক্রি হয়।

শমশেরনগর বাজারের বিক্রেতা রহিম মিয়া বলেন, একটি তালে দুটি বা তিনটি শাঁস থাকে। কেউ একটু তরল, কেউ একটু শক্ত শাঁস পছন্দ করেন। আমি প্রতিদিন ৪০ থেকে ৫০ কাঁদি (ছড়া) তাল বিক্রি করি। গাছ থেকে কাঁদি কেটে এনে বাজারে বিক্রি করি। কষ্ট হলেও লাভ ভালো হয়।

ক্রেতা লন্ডন প্রবাসী সুমন আহমেদ বলেন, তালের শাঁস খেতে খুবই সুস্বাদু ফল। গরম থেকে এসে খেতে ভালোই লাগে। এবারের প্রচণ্ড দাবদাহে তালের শাঁসের চাহিদা বেড়েছে।

পারভেজ আহমদ নামে আরও একজন ক্রেতা বলেন, এই গরমে স্বস্তি দিতে তালের শাঁস সবার পছন্দের ফল। বিক্রি করে আমরাও লাভবান হচ্ছি।

কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা ডা. মাহবুবুল আলম ভূইয়া বলেন, তীব্র গরমে শরীর ও পেট ঠাণ্ডা রাখে তালের শাঁস। প্রতি ১০০ গ্রাম তালের শাঁসে শূন্য দশমিক ৮ গ্রাম খাদ্যোপযোগী খনিজ পদার্থ, ২০ দশমিক ৭ গ্রাম শর্করা, শূন্য দশমিক ৮ গ্রাম আমিষ, শূন্য দশমিক ৫ গ্রাম আঁশ থাকে।

এছাড়া শূন্য দশমিক ৫ গ্রাম খাদ্য আঁশ থাকায় এটি হজমে সহায়ক। অবাক করার মতো খাদ্যশক্তি আছে। প্রায় ৮৭ কিলোক্যালোরি ও ৮ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম থাকায় এটি হাড় গঠনেও ভূমিকা রাখে। বিভিন্ন ভিটামিন ও খনিজ উপাদানে ভরপুর তালের শাঁস নানা রোগের প্রতিষেধক হিসেবেও কাজ করে।

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com