কাজে ‘অনিয়ম’ নিয়ে ফেসবুকে লাইভের সময় সাংবাদকর্মীকে ঠিকাদারের গালাগাল, তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন

June 14, 2025,

সাইফুল ইসলাম : পর্যটন শহর  মৌলভীবাজার শ্রীমঙ্গল শহরের ফুটপাতে টাইলস বসানোর কাজে অনিয়ম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তুলে ধরার সময় এক সংবাদকর্মীকে অশ্লীল ভাষায় গালাগাল করার অভিযোগ উটেছে। এ ঘটনায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। শুক্রবার ১৩ জুন দুপুরে শ্রীমঙ্গল পৌর শহরের গুহ রোড এলাকা পরিদর্শন শেষে এই তদন্ত কমিটি গঠনের কথা জানান শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক মো: ইসলাম উদ্দিন।

পরিদর্শনের সময় তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জহিরুল ইসলাম, সংশ্লিষ্ট কাজের ঠিকাদার মো. কুতুব উদ্দিন এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘রেদোয়ান এন্টারপ্রাইজ’-এর স্বত্বাধিকারী ফয়ছল আহমদ।

পরিদর্শন শেষে ইউএনও মো: ইসলাম উদ্দিন বলেন, “আমরা সরেজমিনে কাজের সাইট পরিদর্শন করেছি। কাজের গুণগতমান ও অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ে একটি তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে রয়েছেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, উপজেলা প্রকৌশলী এবং উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা।”

তিনি আরও জানান, “তদন্ত কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে মতামতসহ বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদন প্রাপ্তির পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার ১২ জুন বেলা সাড়ে তিনটার দিকে শহরের গুহ রোডের ফুটপাতে টাইলস বসানোর কাজে অনিয়মের অভিযোগ তুলে ফেসবুক লাইভ করেন স্থানীয় এক সংবাদকর্মী। সেই সময় ঠিকাদার কুতুব উদ্দিন লাইভ চলাকালে তাঁকে অশ্লীল ভাষায় গালাগাল করেন বলে অভিযোগ ওঠে।

লাইভের ১৪ মিনিট ৪৭ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, ফুটপাতে পুরোনো টাইলস ভেঙে নতুন টাইলস বসানো হচ্ছিল। এসময় সংবাদকর্মী অভিযোগ করেন, “এখানে বালুর পরিমাণ বেশি, সিমেন্ট কম দেওয়া হচ্ছে।” ঠিক ওই মুহূর্তে ঠিকাদার ঘটনাস্থলে এসে তাঁকে অশোভন ভাষায় গালাগাল করেন এবং বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে স্থান ত্যাগ করেন।

এ বিষয়ে ফেসবুক লাইভে সাংবাদ কর্মী এসকে দাশ সুমন বলেন, “সকাল থেকেই অনেক মানুষ আমাকে ফোন করে জানায় এখানে অনিয়ম হচ্ছে। প্রমাণ রাখতে আমি ফেসবুকে লাইভে আসি। তখন ঠিকাদার এসে আমাকে এবং আরও একজন সাংবাদিককে অশ্লীল ভাষায় গালাগাল করতে শুরু করেন।”

অন্যদিকে, অভিযোগ অস্বীকার করে ঠিকাদার কুতুব উদ্দিন বলেন, “আমি সিকিউরিটি মানি জমা দিয়ে নিয়ম অনুযায়ী কাজের ওয়ার্ক অর্ডার নিয়েই কাজ শুরু করি। কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দেওয়ার আগ পর্যন্ত কাজের মালিক আমি। সাংবাদিক কোনো কিছু না জানিয়ে সরাসরি লাইভে এসে বলেন আমি বালি দিয়ে টাইলস বসাচ্ছি। আমি তাকে বলেছি—এভাবে কি কেউ সাংবাদিকতা করে? তার উচিত ছিল আগে আমাকে, প্রকৌশলীকে অথবা পৌর প্রশাসককে জানানো। সরাসরি লাইভে এসে কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন তোলা কতটা যুক্তিযুক্ত, তা সবার ভাবা উচিত।”

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com