কুলাউড়ায় ইউপি সদস্যের নিঃশর্ত মু*ক্তিসহ মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

April 29, 2025,

কুলাউড়া প্রতিনিধি : কুলাউড়া উপজেলার কাদিপুর ইউনিয়নে সরকারি রাস্তায় মাটি ভরাট কাজে বাঁধাকে কেন্দ্র করে ইউপি সদস্য খাইরুল ইসলাম খসরুকে এক মহিলা কর্তৃক মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এমনকি উল্টো বিভিন্ন অভিযোগ এনে ওই ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা পর্যন্ত করেন ওই মহিলা।

২৩ এপ্রিল মৌলভীবাজার আদালতে জামিন নিতে গেলে বিজ্ঞ আদালত ইউপি সদস্য খসরু মিয়ার জামিন না মঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এদিকে মামলা প্রত্যাহার ও মেম্বারের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে ২৯শে এপ্রিল মঙ্গলবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলন করেন স্থানীয় এলাকাবাসী।

এলাকাবাসীর পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন স্থানীয় বাসিন্দা ও শিক্ষক সৈয়দ সিদ্দিক আলী। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে কাদিপুর ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ড থেকে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হন খাইরুল ইসলাম (খসরু মিয়া)। তিনি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে ওয়ার্ডের সামগ্রিক উন্নয়ন ও আইনশৃঙ্খলা সুন্দর রাখতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। ওয়ার্ডের সকল কাজ শতভাগ স্বচ্ছতার সাথে সম্পন্ন হয়ে আসছে। এতে ইর্ষান্বিত হয়ে কিছু স্থানীয় কুচক্রী মহল তার সাফল্যে দেখে তাকে অপদস্ত করতে নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। সম্প্রতি উপজেলা প্রশাসন থেকে সরকারিভাবে কাদিপুর ইউনিয়নের আমতৈল থেকে বিলেরপার রাস্তা সংস্কার কাজের জন্য মাটি ভরাট কাজ শুরু হয়। সেই কাজের প্রকল্প সভাপতি ইউপি সদস্য খসরু। প্রকল্প এলাকার সড়কের পাশে লন্ডন প্রবাসী আব্দুল বারী সাধন মিয়ার কিছু জায়গা রয়েছে। সেই জায়গায় রাস্তা প্রস্থ করার জন্য মাটি ফেললে গত ১৫ এপ্রিল পাশ^বর্তী বাড়ীর বাসিন্দা কাতার প্রবাসী রুবেজ আহমেদ রুবেলের দ্বিতীয় স্ত্রী দোলা খানম মাটি ভরাটের কাজে ইউপি সদস্য খসরুকে বাঁধা দেন। খসরু মিয়া ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান আতিককে বিষয়টি অবহিত করলে চেয়ারম্যান নিজে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এসময় দোলা খানম অশ্লীল ভাষায় চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্য খসরুকে গালিগালাজ শুরু করেন। ইউপি সদস্য খসরু তার প্রতিবাদ জানালে দোলা খানম আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। এক পর্যায়ে দেশীয় অস্ত্র লাঠি দিয়ে ইউপি সদস্য খসরুর মাথায় আঘাত করেন। এতে খসরু মিয়ার মাথা ফেটে যায়। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে কুলাউড়া হাসপাতাল ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে মেম্বার গ্রাম বাসীদের নিয়ে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। দোলা খানম ইউপি সদস্য খসরু মিয়াকে আঘাত ও লাঞ্ছিত করেও ক্ষান্ত হয়নি। গত ২২ এপ্রিল ইউপি সদস্য খসরুর স্ত্রী রাছনা বেগম এবং বড় ভাই আনোয়ারসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মারামারি ও শ্লীলতাহানির মিথ্যা অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন।

আমতৈল গ্রামের বাসিন্দা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুন্সী মুজাদ্দিদ জানান, খসরু মিয়া দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত। কিন্তু পতিত আওয়ামীলীগের দোসর প্রবাসী রুবেজ আহমেদ রুবেলের স্ত্রী দোলা খানমের ভিত্তিহীন একটি অভিযোগকে আমলে নিয়ে পুলিশ মামলাটি রেকর্ড করে দ্রুত আদালতে পাঠায়। এলাকাবাসী দ্রুত খসরু মিয়ার জামিন, মিথ্যা মামলা থেকে অব্যাহতি ও রাস্তার অসমাপ্ত কাজ সমাপ্তের দাবি জানান। চলমান রাস্তার কাজে প্রবাসী রুবেলের কোন জায়গা না থাকা সত্ত্বেও কেন তার স্ত্রী কাজে বাঁধা দিলেন। ওই রাস্তা সরাসরি কুলাউড়া শহরের রাস্তার সাথে সংযোগ হবে। এতে সুবিধা ভোগ করবে আমতৈল গ্রামের লোকজন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ইউপি সদস্য খাইরুল ইসলাম খসরুর বৃদ্ধ পিতা ইসমাইল আলী, স্থানীয়  বাসিন্দা কয়ছর মিয়া, ছয়ফুল মিয়া, কামাল মিয়া, খয়রু মিয়া, সারজান আহমদ, লিটন মিয়া, আবু তাহের, বেলায়েত হোসেন, ফয়েজ মিয়া, আজির আহমদ, জুবের আহমদ, কামরুল ইসলাম প্রমুখ। এর আগে গত ২৭ এপ্রিল শনিবার রাতে ইউপি সদস্য খসরু মিয়ার পক্ষে কুলাউড়া মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে এক সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন মামলার ১ নম্বর স্বাক্ষী আমতৈল গ্রামের বাসিন্দা রুবেজ। এসময় আরো বক্তব্য দেন মুজাদ্দিদ আহমেদ ও কামরুল ইসলাম।

এ ব্যাপারে জমির মালিক ও যুক্তরাজ্য প্রবাসী আব্দুল বারী সাধন মুঠোফোনে বলেন, স্থানীয় হাওরে কৃষকদের যাতায়াত ও এলাকার মানুষের চলাচলের সুবিধার্থে ইউপি সদস্য খসরু আমাকে রাস্তার কাজের জন্য মাটি নেওয়ার কথা বললে আমি মাটি নেবার অনুমতি দিয়েছি। এখানে প্রবাসী রুবেলের কোন মালিকানা নেই তাদের দাবি অযৌক্তিক। আমি জমির প্রকৃত মালিক,  জমির সমস্ত  কাগজাদি রয়েছে। যে মহিলা কাজে বাঁধা দিয়েছেন তার কোন এখতিয়ার নেই বাঁধা দেয়ার।

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com