কুলাউড়ায় গান-বাজনায় বাধা দেয়ায় পঞ্চায়েত দ্বিধাবিভক্ত, টিলা কেটে মসজিদ নির্মাণের চেষ্টা

December 6, 2024,

কুলাউড়া প্রতিনিধি : কুলাউড়ায় গান-বাজনায় বাধা দেয়াকে কেন্দ্র করে স্থানীয় একটি পঞ্চায়েত দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছে। একপক্ষ পঞ্চায়েত থেকে বের হয়ে সরকারি খাস জমির টিলা কেটে আলাদা নতুন একটি মসজিদ নির্মাণের চেষ্টা চালাচ্ছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার টিলাগাঁও ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব ডরিতাজপুর গ্রামে। এ ঘটনায় প্রতিকার চেয়ে সম্প্রতি স্থানীয় পঞ্চায়েতের প্রায় ২০ জন ব্যক্তি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, টিলাগাঁও ইউনিয়নের পূর্ব ডরিতাজপুর খাসটিলা গ্রামের বাসিন্দা উস্তার মিয়া, তার ছেলে হান্নান মিয়া ও রফিক উল্লাহ’র ছেলে ওয়াছির মিয়া তাদের বাড়িতে প্রায়শই উচ্চস্বরে গান-বাজনা করে এবং মাদক সেবন করে থাকে। এমনকি বাহির থেকে মহিলা এনেও রাতভর গান-বাজনা করে। এতে এলাকায় শান্তির পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে। এলাকার লোকজন রাতে গান-বাজনার জন্য ঘুমাতে পারেনা। স্থানীয় যুবসমাজ ও এলাকাবাসী উস্তার মিয়া গংয়ের কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করলে তারা তাদের হুমকি প্রদান করে এবং গান-বাজনা বন্ধ করবে না বলে জানায়। স্থানীয় এলাকার গনমান্যব্যক্তিরা তাদের কর্মকান্ডের বিষয়ে সালিশ বৈঠক ডাকলে উস্তার গং সালিশে উপস্থিত হননি। বৈঠকে উপস্থিত না হয়ে উল্টো পঞ্চায়েত থেকে পৃথক হয়ে সরকারী খাস জমির টিলা কেটে নতুন আরেকটি মসজিদ নির্মাণ করার চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে উস্তার মিয়া বলেন, আমার বাড়িতে কোন গান-বাজনা করিনি। এসব সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ। টিলা কেটে মসজিদ নির্মাণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাগৃহাল গ্রামের সেলিম মিয়া তার দখলকৃত টিলা থেকে ৪শতক জমি দান করলে আমরা মসজিদ নির্মাণের জন্য টিলা কেটেছি। আমাদের বাড়ি থেকে পূর্ব ডরিতাজপুর মসজিদ ১ কিলোমিটার দুরবর্তী হওয়ায় আমরা বাড়ির পাশে মসজিদ তৈরি করতে চাচ্ছি।

পূর্ব ডরিতাজপুর জামে মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান, যুগ্ম সম্পাদক আজাদুর রহমান, গ্রাম্য সর্দার আসিদুর রহমান, মসজিদের সাবেক ইমাম মাওলানা আব্দুস সামাদ, বর্তমান ইমাম নুর উদ্দিন আহমদ বলেন, আমাদের এলাকা খুবই শান্তিপ্রিয়। পূর্ব ডরিতাজপুর জামে মসজিদে মোট ১১০টি পরিবার রয়েছে। তন্মধ্যে গ্রামের খাসটিলার বাসিন্দা উস্তার মিয়াসহ তিন পরিবার সবসময় গান-বাজনাসহ বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িত। এসব বিষয়ে প্রতিবাদ করায় তারা নিজ থেকে মসজিদ পঞ্চায়েত থেকে পৃথক হয়ে অন্যত্র সরকারি খাস জমির টিলা কেটে নতুন আরেকটি মসজিদ তৈরি করার পায়তারায় লিপ্ত রয়েছে। তারা আরো বলেন, এলাকার সম্প্রীতি বিনষ্ট ও পঞ্চায়েতকে বিভক্তি করে এলাকায় একটি অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করার জন্য উস্তার গং প্রভাব খাটিয়ে সরকারি খাস জমির টিলা কেটে মসজিদ নির্মাণ করতে চাচ্ছে। প্রতিকার চেয়ে আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে অভিযোগ দিয়েছি। আমরা এলাকার শান্তি ও সম্প্রীতি রক্ষায় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহ জহুরুল হোসেন বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর স্থানীয় ইউনিয়ন তহশিলদারকে পাঠিয়ে টিলা কাটা বন্ধ করিয়েছি। কোন অবস্থাতেই সরকারি জমিতে স্থাপনা তৈরি করা যাবেনা। আগামী রোববার অভিযুক্তদের শুনানির জন্য আমার কার্যালয়ে ডেকেছি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিন বলেন, অভিযোগটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে দায়িত্ব দিয়েছি।

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com