চাঁদনীঘাট যেন একদিনের কোরবানির গো/সত বিক্রির অস্থায়ী জমজমাট হাট

June 9, 2025,

সালেহ আহমদ (স’লিপক) : মৌলভীবাজার জেলা শহরের বিভিন্ন অলিগলিতে পবিত্র ঈদুল আদ্বহার দিন সংগ্রহকৃত কোরবানির গোসত ক্রয়বিক্রয় হতে দেখা গেছে।

শনিবার ৭ জুন মৌলভীবাজার পৌর শহরের বিভিন্ন অলিগলি এবং বিশেষ করে চাঁদনীঘাট ব্রীজ সংলগ্ন ফুটপাতে পবিত্র ঈদুল আদ্বহার দিন বেলা গড়াতেই যেন জমে উঠেছে এক ব্যতিক্রমী কোরবানির গোসত বেচাকেনার হাট। এছাড়াও বিভিন্ন অলিগলি সড়কের মোড় ও গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতেও সংগ্রহকৃত কোরবানির গোসত বিক্রি করতে অনেককেই দেখা গেছে।

বিকেল ৩টার পর থেকেই চাঁদনীঘাট ব্রীজ সংলগ্ন ফুটপাতে পলিথিন কিংবা সিমেন্টের ব্যাগ বিছিয়ে গোসত বিক্রিতে নেমেছে একদল মানুষ। এছাড়াও শহরের বড়কাপন, দ্বারক এলাকা সহ বিভিন্ন অলিগলির মোড়ে ভাগাচুক্তিতে বিক্রি করতে দেখা গেছে সংগ্রহকৃত কোরবানির গোসত। স্বল্প আয়ের মানুষ, যারা কোরবানি দিতে অক্ষম তারাই মূলত ক্রয় করছেন এসব গোসত। একহাজার থেকে পনের শত টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে এসব গোসত। তবে কোথাও কোথাও এসব সংগ্রহকৃত কোরবানির গোসত ৬/৭ শত টাকাতেও বিক্রি করা হচ্ছে।

কোরবানির তিনভাগের একভাগ গোসত কোরবানিদাতা নিজের জন্য রেখে অন্য দু’ভাগের একভাগ দরিদ্র প্রতিবেশী ও স্বজনদের মধ্যে এবং অন্যভাগ গরিব-মিসকিনদের মধ্যে বিতরণ করা হয়। এই গরিব-মিসকিনদের মাঝে বিতরণকৃত গোসতই ক্রয়বিক্রয় হয় এরকম অস্থায়ী বাজারে কিংবা অলিগলির মোড়ে।

চাঁদনীঘাট ব্রীজ সংলগ্ন ফুটপাতে সংগ্রহকৃত কোরবানির গোসত বিক্রেতা আকিল মিয়া আলাপকালে জানান, সকাল থেকে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে এসব কোরবানির গোসত সংগ্রহ করেিেছ। এতো গোসত সংরক্ষণ করার উপায় নেই, একসাথে খাওয়াও যাবে না, তাই বিক্রি করতে নিয়ে এসেছি।

বেশ কয়েকজন বিক্রেতা ও ক্রেতার সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, এসব গোসতের মূল ক্রেতা স্বল্প আয়ের মানুষ। যারা গোসতের জন্য বাড়ি বাড়ি ঘুরতে পারেন না লোকলজ্জার ভয়ে। কিন্তু তারা কোরবানির ঈদের দিন পরিবারের মুখে গোসত তুলে দিতে চান। এছাড়াও কিছুকিছু হোটেল রেস্টুরেন্টের মালিকরাও সুলভে গোসত কেনার এ সুযোগ নেন বলেও জানান তারা।

গোসত ক্রেতা সিএনজি চালক আদিল মিয়ার সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, কোরবানি দেয়ার তো আর সামর্থ নেই। তাই ঈদের দিন চেষ্টা করি কম দামে কিছু গোসত কিনে পরিবারকে নিয়ে একসাথে খেতে। বাসায় বাচ্চারা গোসত খেতে চায়, কিন্তু বাড়ি বাড়ি ঘুরে গোসত সংগ্রহ করতে দ্বিধাবোধ করি। আবার বাজার থেকেও এত দাম দিয়ে গোসত কেনার সামর্থ হয়না সবসময়। তাই কোরবানির দিন একটু বেশি করে গোসত কিনে নিতে চাচ্ছি যাতে কিছুদিন চলে যায়।

এ ব্যাপারে শহরের মধ্যসারির হোটেল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গরিবের হোটেল এর মালিক বেলাল আহমদ এর সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, আলহামদুলিল্লাহ আমি প্রতি বছরই কোরবানি দেই, এবারও দিয়েছি। শুনেছি চাঁদনীঘাটে কোরবানির গোসত বিক্রি হয়। কখনো যাওয়া হয়নি। স্বল্প আয়ের মানুষেরা এখান থেকে গোসত কিনে দু’বেলা পরিবার পরিজন নিয়ে খেতে পেরে আত্মতৃপ্তি পাচ্ছেন এবং বিক্রেতারাও কিছু মুনাফা অর্জন করছেন, যা আমাদের অর্থনীতিতে সংযুক্ত হচ্ছে।

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com