পারিবারিক কলহ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর দ্ব/ন্দ্ব, প্রতি/বাদ করতে গিয়ে কুলাউড়ায় খু/ন হলেন প্রতিবেশী যুবক

মাহফুজ শাকিল : কুলাউড়ায় এক দম্পতির পারিবারিক কলহের বিরোধ মেটাতে প্রতিবাদ করায় দিনে দুপুরে খুন হয়েছেন শাহীন আহমেদ (২৭) নামক এক ব্যক্তি।
শুক্রবার ৩০ মে সকাল আনুমানিক সাড়ে ১০ টায় পৌর শহরের দক্ষিণ বাজার এলাকায় শাহীনকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায় আব্দুল হান্নান (৩০) নামে তারই এক প্রতিবেশী। পরে প্রত্যক্ষদর্শীরা
আহত শাহীনকে উদ্ধার করে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত শাহীন আহমেদ কুলাউড়া পৌরসভার জয়পাশা এলাকার বাসিন্দা ইসহাক আলীর পুত্র। সে একসময় অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতো৷ বর্তমানে সে দিনমজুরের কাজ করতো বলে জানা গেছে।
হত্যাকারী আব্দুল হান্নান বড়লেখা উপজেলার দক্ষিণভাগ ইউনিয়নের বাসিন্দা দলা মিয়ার ছেলে।
স্থানীয় সূত্র ও নিহত শাহীনের চাচাতো ভাই মুজাহিদ আহমদ বলেন, পৌরসভার জয়পাশা কলোনীতে বিয়ে করে ভাড়া বাসায় স্ত্রী নিয়ে বসবাস করতেন বড়লেখার দক্ষিণ ভাগ ইউনিয়নের বাসিন্দা দিনমজুর আব্দুল হান্নান। বিয়ের পর থেকে পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তার স্ত্রীর সাথে বিরোধ চলছিল। এমনকি হান্নান তার স্ত্রীকে প্রায়শই নির্যাতন করতো৷ বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় লোকজনের কাছে বিচারপ্রার্থী হয় হান্নানের স্ত্রী। একপর্যায়ে হান্নানের স্ত্রী গত বুধবার নির্যাতনের বিষয়টি জানায় জয়পাশার বাসিন্দা দিনমজুর শাহীন আহমদকে। শাহীন এ বিষয়ে প্রতিবাদ করে হান্নানের কাছে জানতে চায়, কেন সে তার স্ত্রীকে নির্যাতন করেছে। কেন ভরপোষন দিচ্ছে না। এ কথা বলার পর শাহীনের সাথে কথা কাটাকাটি হয় হান্নানের। একপর্যায়ে হান্নানের গালে একটি থাপ্পড় মারে শাহীন। পরে হান্নান তেলেবেগুনে জ্বলে উঠে শাহীনকে অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করে প্রাণনাশের নেবার হুমকি দেয়। সেই বিরোধের জেরে শুক্রবার সকালে দিনমজুর শাহীন শহরে বাজার করতে আসে৷ আনুমানিক সাড়ে দশটায় শহরের দক্ষিণ বাজার থেকে কাদিপুরমুখী রাস্তার পাশে বাজার করার সময় হঠাৎ একটি সিএনজি অটোরিকশা থেকে বসা থাকাবস্থায় শাহীনকে ছুরিকাঘাত করে দ্রুত পালিয়ে যায় হান্নান। এসময় প্রত্যক্ষদর্শীরা গুরুতর আহত শাহীনকে উদ্ধার করে কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই নিহত শাহীন আহমদের স্বজনরা হাসপাতালে ভীড় জমান। এসময় হাসপাতালে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। নিহত শাহীনের স্ত্রী ও এক ছেলে সন্তান রয়েছে।
কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: গোলাম আপছার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, নিহত শাহীনের মৃতদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আসামী হান্নানের পিতাকে আটক করে থানায় আনা হয়েছে হত্যাকারী হান্নানকে গ্রেপ্তারে পুলিশের কয়েকটি টিম অভিযান অব্যাহত রেখেছে।
মন্তব্য করুন