বড়লেখায় টিলা কেটে মাটি পাচারকারীরা বেপরোয়া

আব্দুর রব॥ বড়লেখা পৌরশহরের সরকারি কলেজ রোডে কৃষি জমিতে পাঁচতলা ভবন নির্মাণের অনুমোদন নিয়ে জমি ভরাটে প্রাকৃতিক টিলা ধংসের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গাছপালা উজাড় করে নির্বিচারে টিলা কেটে আনা মাটি দিয়ে ভিটা ভরাটের কাজ অনেকটা প্রকাশ্যে চললেও নির্বাক রয়েছে স্থানীয় ভূমি প্রশাসন। দীর্ঘদিন ধরে ইউএনও ছুটিতে আর এসিল্যান্ডের পদ শূন্য থাকায় অসাধু পাহাড় টিলা খেকোরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ২০০৬ এর উপধারা ‘খ’ অনুযায়ী পাহাড় টিলা কাটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
এছাড়া মাটি ব্যবস্থাপনা ও অট্টালিকা নির্মাণ আইনে সব ধরণের টিলা কাটা, মাটি পাচার, ভরাট ও কৃষি জমি খনন দণ্ডনীয় অপরাধ।
জানা গেছে, বড়লেখায় গত ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি মাতৃত্বজনিত ছুটি ও পদোন্নতি জনিত কারণে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারি কমিশনার (ভূমি) পদ শূন্য হয়ে পড়ে। এই দুই পদে অতিরিক্ত দায়িত্ব পান পাশ্ববর্তী উপজেলা নির্বাহী অফিসার লুসিকান্ত হাজং। নিজ উপজেলার দায়িত্বের পাশাপাশি বড়লেখা উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ দুই পদের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন সঠিকভাবে তারপক্ষে স্বাভাবিকভাবেই কষ্টসাধ্য হয়ে উঠে। আর এই সুযোগে অবৈধভাবে ফসলি জমির মাটি পাচারকারী ও পাহাড়-টিলা খেকোরা তৎপর হয়ে উঠে। সঙ্গবদ্ধ অসাধু চক্র মাত্র প্রায় দুই মাসে উপজেলার মোহাম্মদনগর, দক্ষিণভাগ দক্ষিণ কাশেমনগর, চন্ডিনগর, উত্তর শাহবাজপুর, বিওসি কেছরিগুল, তালিমপুর, সুজানগরসহ বিভিন্ন এলাকায় নির্বিচারে ব্যাপক টিলা সাবাড় ও ফসলি জমির মাটি পাচার করেছে। এতে পরিবেশ বিপর্যয়ের পাশাপাশি অবৈধ ট্রাক-ট্রাক্টরে মাটি পরিবহনের কারণে অসংখ্য গ্রামীণ রাস্তা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
সরেজমিনে জানা গেছে, পৌরশহরের সরকারি কলেজ রোডে বৃক্ষবন্ধু নার্সারী সংলগ্ন কৃষি জমির উপর পাঁচতলা ভবন নির্মাণের জন্য পৌরকর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিয়েছেন প্রবাসী মো. আব্দুল খালিক। সরকারি নিচু জমি ভরাট করে মুল ভিটায় যেতে হয়। এজন্য ভুমি মালিক আব্দুল খালিক বাদল মিয়া নামে গ্রামতলা এলাকার মাটি ব্যবসায়ি এক ব্যক্তিকে নিচু জমি ভরাটের কন্টাক দিয়েছেন। বাদল মিয়া মোহাম্মদনগর এলাকার একটি উঁচু প্রাকৃতিক টিলা অবৈধভাবে কেটে ট্রাক্টরে মাটি বহন করে ভিটা ভরাট করছেন।
স্থানীয় লোকজন জানান, বাদল মিয়া রাতের বেলা নিজের ট্রাক্টরে টিলার মাটি এনে প্রবাসী আব্দুল খালিকের ভিটা ভরাট করছেন। টিলা কাটায় একদিকে পরিবেশ বিপর্যয় অন্যদিকে রাস্তার পাশের সরকারি জমি ভরাটে পানি নিষ্কাষনের পথ রুদ্ধ হয়ে আসন্ন বর্ষায় কলেজ রোডে মারাত্মক জলাবদ্ধতার আশংকা রয়েছে।
এব্যাপারে জানতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারি কমিশনার (ভূমি) (অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা) লুসিকান্ত হাজংয়ের সাথে ফোনে বারবার যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু রিং বাজলেও ফোন রিসিভ না করায় তার কোনো বক্তব্য নেওয়া যায়নি।
মন্তব্য করুন