যুগপৎ নেতৃত্বের প্রতীক্ষায় ব্রিটেন : পাউন্ডের মুল্য আর শেয়ারবাজারে উর্দ্ধগতি : সিঙ্গেল মার্কেটে ইইউর সাথে বানিজ্য সম্পর্ক থাকবে অক্ষুন্ন
মুনজের আহমদ চৌধুরী॥ গনভোটের পর কোন পথে এখন ব্রিটেনের ভবিষ্যত…। লিটল ইংল্যান্ড নাকি লিটল ইউরোপমুখী যাত্রা শুরু হলো ব্রিটেনের ব্রেক্সিটমুখী জনরায়ে। ব্রিটেনের ইউরোপ ছাড়ার পক্ষে ভোট দিয়ে কী ভুল করলাম…। কেন এমন ফলাফল। ব্রিটেনের অর্থনীতি কী ভাঙ্গনের এই চাপ বা অর্থনৈতিক সংকট সইতে পারবে। ব্রিটেনের অভিবাসীদের জন্য বা বিশেষ করে বিলেতের বাঙ্গালীদের ক্ষেত্রে গনভোটের এ ফলাফল কী প্রভাব ফেলতে পারে…? এমন সব প্রশ্নের জবাব খুঁজছেন এখন ব্রিটেনের মানুষ।
ব্রিটিশ পাউন্ডের দামে ৩০ বছরের ব্যাবধানে বড় দরপতন,টাকার বিপরীতে পাউন্ডের দাম একলাফে ১২-১৩ টাকা কমে যাওয়া, শেয়ার মার্কেটের দরপতন, ইউরোপের বড় ব্যাংকিং গ্রুপগুলোর ব্রিটেনে বিনিয়োগ হ্রাসের হুমকি; এগুলোই এখন পর্যন্ত গনভোট পরবর্তী আর্থিক সংকটের মূল উপসর্গ। ঈদের আগে পাউন্ডের বড়ো দরপতন ছাড়া ব্রিটেনের প্রবাসী বাঙ্গালীর জীবনে বেক্সিটের তাৎক্ষনিক বড়ো প্রভাবের সম্ভাবনা নেই। গেল আট দিনে ব্রিটেনের রাজনীতির ময়দানেও বয়ে গেছে অস্থিরতার ঝড়ো হাওয়া।
ভোটে পরাজয়ের দায় মাথায় নিয়ে পদত্যাগী ক্যামেরনের পর থেরেসা মে,নাকি মাইকেল গোভ- কে আসছেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর আসনে,কে হচ্ছেন পার্টি লীডার- এ প্রশ্নের উত্তরের জন্য সেপ্টেম্বরে কনজারবেটিভ পার্টির কনফারেন্স পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। কেন এই গণভোট আর এমন ফলাফল, সে প্রশ্নের জবাবের খোজেঁ খানিকটা পেছনে ফিরতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী ক্যামেরন নিজের তৈরী ফাদেঁ পা মাড়িয়েছেন। ব্রিটেনের সাধারন নির্বাচনের আগে ইমিগ্রেশন নিয়ন্ত্রনে ব্যার্থতা আর সরকারের অব্যাহত বাজেট কাটে কনজারভেটিভে বিরক্ত আর ইউকিপমুখী ভোটারদের পক্ষে টানতে ইউরোপে থাকা না থাকার প্রশ্নে গণভোট দেবার ঘোষনা দেন ডেভিট ক্যামেরন। আবার সরকার গঠনে অবশ্য এর বিকল্পও ছিল না তাঁর। সে ঘোষনা দিয়ে ২০১৫ সালের ৭ মের সাধারন নির্বাচনে পুন:বিজয়ী হলেও ইউকিপমুখী ভোটারদের কনজারবেটিভে ধরে রাখতে ব্যার্থ হন ক্যামেরন। যার ফলাফল দেখা গেছে ব্রিটেনের সাধারন নির্বাচনে ইউকিপের দেশজুড়ে ৯.৫ ভোট বৃদ্ধির উত্তরণে। ২০১০ সালের নির্বাচনের পর গেল নির্বাচনে ব্রিটেনে সবচেয়ে বেশি ভোট বাড়ে বর্নবাদী আচরনে বিতর্কিত এ দলটির।
ব্রিটেনের ইউরোপে থাকা-না থাকার প্রশ্নে রেফারেন্ডাম দেবার ঘোষনা দিয়ে ইউকে ইন্ডিপেন্ডেন্ট পার্টির (ইউকিপ) মতো অভিবাসনবিরোধী ও কোন কোন ক্ষেত্রে বর্নবাদী রাজনীতির ধারাকেই যে জনমত গঠনে মোক্ষম ইস্যু হাতে তুলে দিয়েছিলেন ক্যামেরন, সেটা এখন নিরেট বাস্তবতা। এতে করে আগে থেকেই এবারের রেফারেন্ডাম ঘিরে নিজেদের পক্ষে জনমত গঠনের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সুযোগ পায় নাইজেল ফারাজের দল ইউকিপ। গনভোটের কিছুদিন আগে ক্যামেরনের বিরোধীতায় শটকার্টে প্রধানমন্ত্রীত্বের সপ্নে বিভোর হয়ে নিজ দল আর প্রধানমন্ত্রীকে আরো একদফা চ্যালেঞ্জে ফেলেন বরিস জনসন। একই দলে দুধারার প্রচারনায় ভোটার শিবিরেও বাড়ে বিভক্তি। তবে বৃহস্পতিবার বিকেলে যখন এ লেখা লিখছি তখন বাধ্য হয়েই পার্টির লিডারশীপের দৌড় নিজের সরে যাবার ঘোষনা দিয়েছেন বরিস। কারন বরিস বুঝতে পেরেছিলেন, পরিবর্তিত বাস্তবতায় প্রধানমন্ত্রীত্বের এবারের দৌড়ে শেষ-অবধি সাফল্যের সম্ভাবনা একেবারেই কম। নিজের সুবিধার দামে বিরোধীতার জন্য বিরোধীতার খেলায় এবার পার্টির ভেতরে-বাইরে অনেকটা ধরা পড়ে যান তিনি। এমনকি ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারাও বরিস জনসনের প্রধানমন্ত্রীত্বের লোভী খেলার (!) সমালোচনায় মুখর হয়ে উঠেন। তবে পরবর্তী দ্বিতীয় জাতীয় নির্বাচনের আগে আর প্রধানমন্ত্রীত্বের স্বাদ আস্বাদনের সুযোগ নেই সৌভাগ্যকে সাথী করে উঠে আসা রাজনীতিক বরিস জনসনের। কেননা, ইতিহাস আর বাস্তবতা বলছে,আগামী সাধারন নির্বাচনে কনজারভেটিভ পার্টির আর ব্রিেেটনের ক্ষমতায় যাবার সম্ভাবনা একেবারে ক্ষীন।
আমেরিকা-ব্রিটেনের দ্বৈত নাগরিক বরিস সাংবাদিকতায় ক্যারিয়ার গড়ে কৌশল আর সুযোগকে অতীতে কাজে লাগিয়ে সাফল্য পান। কিন্তু ক্যামেরনকে হারাতে গিয়ে বেক্সিট জয়ের ফলাফল শেষ অবধি নিজের ঘরেও তুলতে পারেননি তিনি। সমূহ পরাজয় এড়াতে সন্মানে সরে গেছেন বরিস। কনজারভেটিভের পার্টি লিডারশীপ আর প্রধানমন্ত্রীত্বের লড়াইয়ে বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী ক্যামেরনের সমর্থন বড়ো প্রভাবকের ভুমিকা রাখবে।
লেবার লিডার জেরেমি করবিন, আজীবন রাজপথের সংগ্রামী। মেহনতী মানুষের পক্ষে, যুদ্ধের বিরুদ্ধে সবসময় সোচ্চার ছিলেন সামনের কাতারে। তীব্র লড়াইয়ে লেবার পার্টির লীডার নির্বাচিত হবার পর ওল্ডহামের উপ-নির্বাচনে পার্টির সেফ-সীটে দলীয় প্রার্থীকে জিতিয়ে আশার সঞ্চার করেছিলেন তিনি। ব্রিটেনের লেবার পার্টি নিজেদের স্বকীয় ধারার শ্রমজীবি মানুষের রাজনীতি থেকে ক্রমেই সরে আসছিল। বাম ঘেষা রাজনীতিক জেরেমি করবিনের হাত ধরে লেবার পার্টি অতীতের আদর্শিক অবস্থানে পৌছুতেঁ পারবে এমন আশা ছিল পার্টির সমর্থকদের। রেফারেন্ডামে ফল বিপর্যয়ের জেরে ধারাবাহিক পদত্যাগে পার্টিতে করবিনের নেতৃত্বই এখন হুমকি আর প্রশ্নের মুখোমুখি। বুধবার ক্যামেরনও তাকে আহব্বান জানান পদত্যাগের । পদত্যাগ ছাড়া এখন বিকল্পও নেই করবিনের। করবিন বিদায় নিলে সাবেক শ্যাডো ক্যাবিনেট মিনিষ্টার এ্যাঞ্জেলা ঈগলের লেবার লীডার হিসেবে উঠে আসবার সম্ভাবনা প্রবল।
বাস্তবতা হলো, ২৩ শে জুনের রেফারেন্ডামে ব্রিটেনের ইউরোপে থাকার পক্ষে প্রচারনা চালালেও ইমিগ্রেশনের চাপে ত্যাক্ত-বিরক্ত ব্রিটেনের সাধারন মানুষকে যুক্তির নিরিখে ঐক্যবদ্ধ করতে ব্যার্থ হন ক্যামেরন-করবিন দুজনেই। ইমিগ্রেশন বোঝা নয়, একে দক্ষ জনশক্তিতে পরিনত করার সপ্ন জগগনকে দেখাতে ব্যার্থ হন তারা। আর কনজারভেটিভ -লেবারের এ ব্যার্থতায় ইউকিপ আর নাইজেল ফারাজ ক্ষুব্ধ মানুষের নেগেটিভ ভোটে ব্রিটেনের রাজনীতিতে নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী করেছে। নেতিবাচকতার এ ধারায় গত ১ সপ্তাহে ব্রিটেনে হেইট ক্রাইম বাড়ছে, যা ঐক্যবদ্ধ ব্রিটেনের পথে অন্ধকারময় অন্তরায়।
রেফারেন্ডাম পুববর্তী প্রচারনা-যুদ্ধ পর্যবেক্ষনে দেখা যায়, ক্যামেরন জনগন এমনকি বৃদ্ধ পেনশনারদের যেমন ইউরোপে থাকার পক্ষে ভয়-ভীতি দেখিয়েছেন, একইভাবে মিথ্যা তথ্য দিয়ে জনগনকে বিভ্রান্ত করেছে নাইজেল ফারাজ আর তার দল ইউকিপ। কার্যত ব্রিটেনের ইউরোপে থাকা-না থাকার মতো সংবেদনশীল ও গুরুত্বপুর্ন ইস্যুকে সামনে রেখে রাজনৈতিক প্রচারনার মাধ্যমে জনমত গঠনের যে দায়িত্ব ছিল কনজারভেটিভ বা লেবার পার্টির, তারা তাতে যে ব্যার্থ হয়েছেন তা প্রমানিত হয়েছে রেফারেন্ডামের জনরায়ে। সমন্বিত পরিকল্পনা না থাকায় শেষ অবধি জনগনকে ভয় দেখানো ছাড়া ভাল বিকল্প খুজেঁ পাননি তারা প্রচারনা যুদ্ধে। পক্ষগুলোর জেতার জন্য প্রচারনার মিথ্যাচার,মিথ আর গুজবে জনগন সঠিক সিদ্বান্ত নিতে বিভ্রান্তিতে পড়েছেন। রাষ্ট্রের বৃহত্তর প্রয়োজনে পলিটিক্যাল টীমওয়ার্ক- ফ্রেমওয়ার্ক ছাড়াই রেফারেন্ডামের ঘোষনা এবং এর ফলাফলে রাজনীতিকদের প্রত্যাশা-প্রাপ্তির ফারাক আসলে রাজনৈতিক নেতৃত্বের ব্যার্থতা এবং অ-সময়ের সিদ্বান্ত।
আদরের ছোটবোন সৈয়দা কামরান লতিফ সুমী, ইস্কুলবেলার অগ্রজ এখনকার ব্রিটেনের ব্যাংকার সবুজ সালাউদ্দীন সহ অনেক প্রিয়জন সপ্তাহ ধরেই তাগিদ দিয়েছেন রেফারেন্ডাম পরবর্তী পরিস্থিতি ব্রেক্সিট নিয়ে লেখার জন্য। চাকুরি আর জীবিকার তাগিদে প্রতি বৃহস্পতিবার সাপ্তাহিক বাংলাটাইমসের জন্য লিখতেই হয়। সোয়ানসী থেকে আমার লেখার শ্রদ্বেয় পাঠক শাহবন্দর কসবার বাসিন্দা আতাউর সুমন আজ বলছিলেন, ব্রিটেন এককভাবেই বিশ্বে পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ। তার প্রত্যাশা, রেফারেন্ডাম পরবর্তী ব্রিটেনের এ আর্থিক সংকট দ্রুতই বিদায় নেবে।
আসলে, এক অর্থে নেই বলে কিছু নেই পৃথিবীতে। অগনণ বিকল্প থেকে খুজঁতে হবে সর্বোত্তম আর প্রায়োগিক সমাধান। গনতন্ত্রের সূতিকাগারে জনগন যে গনরায় দিয়েছেন,সে রায়কে সামনে রেখেই ইতিবাচতার গন্তব্যে এগুতে হবে ব্রিটেনকে।
ব্রিটেন ইউরোপ থেকে বেরিয়ে গেলেও ইইএর সদস্য হিসেবে সুইজারল্যান্ডের মতো ইউর সাথে বানিজ্য চুক্তি বহাল রাখতে পারবে। সুইজারল্যান্ড ইউরোপে না থাকলেও ইইএর সদস্য হিসেবে ইইউ দেশগুলোর সাথে প্রায় একই ধরনের চুক্তিতে বানিজ্য করছে। এছাড়া ইউরোপ থেকে যারা ব্রিটেনে এসে থিতু হয়েছেন তাদের ব্যাপারে আইনগত কোন পরিবর্তন আসার কথা লীভ ক্যাম্পেইনের আগেই নাকচ করা হয়েছে।
গনভোটের রায়ে ব্রিটেনের অর্থনীতি ধ্বসে পড়বে, ঝুকিঁতে পড়বে ইউনাইটেড কিংডমের অস্তিত্ব এসব আলোচনা আসলে নিতান্তই একপেশে। ইইউ পরিচয়ে আড়াল হয়ে যাচ্ছে ব্রিটেন আর ব্রিটিশ পরিচয়ের নিজস্বতা। কেবল ব্রিটেন নয় ইউরোপজুড়েই যে প্রবল জাতীয়তাবাদের উত্থান ঘটছে,সে বাস্তবতাকে তো আর অস্বীকার করা যায় না।
ব্রিটেনের অর্থনীতিবিদরা বলছেন, অর্থনীতির এ বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে খুব বেশি সময় লাগবে না ব্রিটেনের। ৩০ জুন বৃহস্পতিবার রাতে এ লেখাটি যখন লেখছি, তখনো রেফারেন্ডামের ফলাফলের সপ্তাহ না পেরুনোয় অর্থনীতির লাভ-ক্ষতির পুর্নাঙ্গ কোন নির্ভরযোগ্য পরিসংখ্যান খুজেঁ পাইনি। বিবিসির বিজনেস এডিটর কামাল আহমদ তাঁর নিবন্ধে বুধবার লিখেছেন, ব্রিটেনের ষ্টক মার্কেট উন্নতির ধারায় এগুতে শুরু করেছে। সুচকের হিসেবে এ অগ্রগতি ২ শতাংশের বেশি। ব্রিটিশ সরকারের লোনের ব্যায় কমেছে। পাউন্ডের মুল্যমান সেভাবে বড় ব্যাবধানে না বাড়লেও স্থিতিশীল হয়েছে। আর্টিকেল ৫০ অনুসৃত ধারায় ব্রিটেনের ইউরোপ থেকে বেরিয়ে আসার প্রক্রিয়ায় সময় লাগবে প্রায় দুবছর। অর্থাৎ নুন্যতম দুবছরের মধ্যে ইমিগ্রেশন সহ কোন ক্ষেত্রে কোন ধরনের আইন বা নীতিগত পরিবর্তনের কোন সম্ভাবনা নেই। ইইউ ত্যাগের প্রক্রিয়া শুরু হতে আরো অন্তত কয়েক মাস সময় লেগে যেতে পারে। চ্যান্সেলর জর্জ অসবর্ন বলেছেন, ব্রিটেন ইউরোপের সিঙ্গেল মার্কেটে সদস্য থাকবে। এখন কথা হলো ব্রিটেন ইইউর সিঙ্গেল মার্কেটে বানিজ্যের জন্য আলোচনার মাধ্যমে কতটা সুবিধা অর্জন করতে পারে, সেটি নির্ভর করছে এখন এই সমঝোতা আলোচনার কুশলতা আর কৌশলের উপর। সিঙ্গেল মার্কেটের ব্যাপারে ইইউ নেতাদের সাথে ব্রিটেনের পক্ষে কারা থাকছেন সে আলোচনায়, তাদের আন্তরিকতা ও অবস্থানের উপর নির্ভর করছে অনেক কিছু।
১৯৬৭টি তে গড়া ইউরোপিয়ান কমিউনিটিতে ৭৩ সালে ব্রিটেন যোগ দেয়। ১৯৭৫ সালে ব্রিটেনের লেবার পার্টি থেকে নির্বাচিত তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী উইলসনের আমলে অনুষ্ঠিত হয় ইউরোপিয়ান কমিউনিটিতে থাকার প্রশ্নে রেফারেন্ডাম। সে রেফারেন্ডামে ৬৬ শতাংশ হ্যা ভোট পড়ে ব্রিটেনের ইউরোপীয় কমিউনিটিতে থাকার পক্ষে । সে হিসেবে ব্রিটেন ইউরোপে আছে সক্রিয়ভাবে ৪০ বছরের বেশি সময় ধরে। দীর্ঘ চার দশকের পারস্পারিক নির্ভরতার সম্পর্কের সুতো ছিড়েঁ আচমকা বাইরে বেরুলে কিছুটা বিপর্যয় আসবেই। বরং এক্ষেত্রে বিপর্যয় না আসাটিই বরঞ্চ অস্বাভাবিক।
ব্রিটেনের এবারের পথচলা নিজেদের সার্বভৌমত্বকে সংহত রেখে অর্থনীতির চলতি গতি ধরে রাখার সংগ্রামে। অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত ইউরোপ ছাড়ার পক্ষে মত দিয়ে ব্রিটেনের জনগন যে ভুল করেননি, সেটি দ্রুত প্রমান করতে এখন দরকার যোগ্য রাজনৈতিক নেতৃত্বের। লীভ আর রিমেইনের ব্যাবধান ঘুচিঁয়ে, জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে দেশটির দুটি বৃহৎ দলের মতো জাতি হিসেবে ব্রিটিশরাও এখন যোগ্য নেতৃত্বের সন্ধানে। ইইউর সাথে সমঝোতা সহ সব ক্ষেত্রে ব্রিটেনের জাতীয় স্বার্থকে সবার সামনে রাখবেন, এমন একজন প্রধানমন্ত্রী আর যোগ্য নেতৃত্বেই আসতে পারে দ্রুত নির্ভরতা। এমন কাংখিত-কৌশলী নেতৃত্বের হাত ধরেই স্কটল্যান্ডে ভাঙ্গনের পথ পেরুতে হবে। ওয়ান ন্যাশনের যাদুকরী ঐক্যের সুর তোলা এক বিচক্ষন ও ইইউ সহ সব মহলে গ্রহনযোগ্য নেতৃত্বের প্রতীক্ষায় পথ চেয়ে আছেন ব্রিটেনবাসী। যাঁর যুগপৎ নেতৃত্বে লিটল ইউরোপকে পিছু ফেলে সমৃদ্ধির যাত্রায় নবমাত্রায় এগুবে ব্রিটেন। দেশ আর জাতিসত্বার প্রশ্নে ব্রিটেনের ৬৫ মিলিয়নের বেশি মানুষের এমন আশাবাদ পুর্নতায় বির্দীণ হবে-ই।
মন্তব্য করুন