রাজনগরে বিএনপির বিভিন্ন ইউনিয়ন কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, মামলা দায়ের

স্টাফ রিপোর্টার : মৌলভীবাজারের রাজনগরে বিএনপি-ছাত্রদলের সংঘর্ষে বিএনপি নেতা নুরুল ইসলাম সেলুনের গাড়ি ভাংচুরের ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। এতে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে হামলা ও গাড়ি ভাংচুর এবং চাঁদাবাজি অভিযোগ এনে ১৩ জনের নাম উল্ল্যেখসহ ৪০ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে মামলা করা হয়েছে।
১৩ ফেব্রুযারি বৃহস্পতিবার রাতে রাজনগর থানায় মামলাটি করেন উপজেলার মনসুর নগর ইউনিয়ন সেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি মশাহিদ আহমদ। এঘটনায় উভয় পক্ষসভা-সমাবেশ, শোডাউন করছে। যে কোনো সময় বড় ধরণের সংর্ষের ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানাযায়, গত ১১ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার বিকালে রাজনগর সদর ইউনিয়নের দত্তগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে মনসুর নগর ইউনিয়নে বিএনপির সভায় যাওয়ার সময় কলেজ পয়েন্টে পৌঁছালে উপজেলা বিএনপির সাবেক ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক ছাত্রদল নেতা মাহবুব আলম জামাল সহ তার কয়েকজন সহযোগি উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য নুরুল ইসলাম সেলুনের গাড়ি আটকিয়ে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। এনিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে সেলুনকে লক্ষ্য করে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে ছাত্রদল নেতা জামাল গুলি করেন বলে অভিযোগে উল্ল্যেখ করা হয়। এসময় লাঠিসোটা ও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে নুরুল ইসলাম সেলুনের টয়োটা প্রাডো গাড়ি ও একটি মোটর সাইকেল ভাংচুর করা হয়। ঘটনার পর থেকে উভয় পক্ষসভা-সমাবেশ ও শোডাউন করেছে। যে কোনো সময় বড় ধরণের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটতে পারে।
কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্দেশনার প্রেক্ষিতে মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির নেতারা জানুয়ারী মাসের প্রথম সপ্তাহে রাজনগর উপজেলার আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেন। এই কমিটিকে সকল ইউনিয়নে সভা করে কমিটি গঠনের নির্দেশ দেয়া হয়। সেই আলোকে কয়েকটি ইউনিয়নে কমিটি করতে উপজেলা বিএনপির কয়েক জন নেতাকর্মী সভা করেছেন। ১১ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত কামার চাক, টেংরা, রাজনগর ইউনিয়নের কমিটি করতে সভাকরা হয়। খবর পেয়ে উপজেলা বিএনপির সাবেক ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক ছাত্রদল নেতা মাহবুব আল জামালের নেতৃত্বে বিএনপি ও ছাত্র দলের কিছু নেতা কর্মী কলেজ পয়েন্টে অবস্থান নেয়। বিকেলে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য নুরুল ইসলাম সেলুন, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক চৌধুরী সহ বিএনপি নেতাকর্মীরা রাজনগর ইউনিয়নের দত্ত গ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সভা শেষে কলেজ পয়েন্টে গেলে তাদের উপর হামলা করা হয় বলে বিএনপি নেতারা অভিযোগ করেন। এসময় উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এ ব্যাপারে বিএনপি নেতা নুরুল ইসলাম সেলুন বলেন, জেলা থেকে উপজেলা বিএনপি’র নেতৃবৃন্দকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রাজনগরের সকল ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠন করতে। সেই লক্ষ্যে বিভিন্ন ইউনিয়নে সভা করে কমিটি গঠনের কাজ চলছে। তারই ধারাবাহিকতায় সদর ইউনিয়নের দত্ত গ্রামে মিটিং শেষে মনসুরনগরে যাওয়ার জন্য কলেজ পয়েন্টে পৌঁছালে জামালসহ
৪০-৫০ জন আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে আমার উপর গুলিকরে ও গাড়ি ভাংচুর করে। উপস্থিত নেতা কর্মীরা তাদের বাধা দিতে গেলে মারধরের শিকার হয়। আমার গাড়ি ও নেতাকর্মীদের মোটর সাইকেল তারা ভাংচুর করেছে। গাড়িতে হামলা করেছে। মিথ্যা বক্তব্য দিয়ে জামাল বলেছে, আমি তাদের গুলি করেছি। অথচ আমি সেদিন গাড়ি থেকে নামিনাই। দীর্ঘদিন ধরে লোকমারফত আমার কাছে চাঁদার জন্য খবর পাঠিয়েছে। আমি কোনো ভাবেই তাদেরকে চাঁদা দিবোনা বলেছি।
এবিষয়ে ছাত্রদল নেতা মাহবুব আলম জামাল বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করা হয়েছে তাসম্পূর্ন মিথ্যা। আমাদের দাবি ছিল, কলেজ পয়েন্টে ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি গঠনের লক্ষ্যে সভা হোক। কিন্তু নুরুল ইসলাম সেলুনসহ কয়েকজন নিজেদের সেচ্ছাচারিতা ও সুবিধার্থে দত্তগ্রাম স্কুলে সভা করেছেন। ইউনিয়ন বিএনপির ত্যাগী ও নির্যাতিত নেতাকর্মীদের নাজানিয়ে তারা কমিটি করছেন। ওইদিন কলেজ পয়েন্টে আমাদের একটি পথসভা ছিল। নুরুল ইসলাম সেলুন গাড়ি থেকে নেমে উপস্থিত নেতাকর্মীদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও গুলিছুড়েছেন। আমরাও মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।
উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক জামি আহমদের নিকট বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি অসুস্থ। এব্যাপারে আমার কোনো বক্তব্য নেই।
রাজনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মুর্শেদুল হাসান খান বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় মসাহিদ মিয়া নামের এককজন মামমা দায়ের করেছেন।
মন্তব্য করুন