সিলেটের বন্যা কবলিত এলাকায় ত্রাণ ও উদ্ধার কার্যক্রমে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী

স্টাফ রিপোর্টার॥ সিলেট বিভাগে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় হেলিকপ্টারের মাধ্যমে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ ও উদ্ধার অভিযান পরিচালনার লক্ষ্যে বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নিয়েছে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী। এ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রাথমিকভাবে বিমান বাহিনীর ২ টি হেলিকপ্টার ও ১ টি পরিবহণ বিমান প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
এ উপলক্ষ্যে ১৯ জুন রবিবার দুপুরে মৌলভীবাজারের শমশেরনগরে অবস্থিত বিমান বাহিনী স্টেশন থেকে ১টি এমআই-১৭ এইচএস হেলিকপ্টার যোগে স্থানীয় সাংবাদিক ও বিমান বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে সিলেট ও সুনামগঞ্জের বন্যা কবলিত এলাকায় দুর্গত মানুষের উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য পর্যবেক্ষণ মিশন (রেকি) পরিচালনা করা হয়।
এই পর্যবেক্ষণ মিশনের মাধ্যমে বন্যা কবলিত এলাকার সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ, হেলিকপ্টার ল্যান্ডিং সাইট চিহ্নিতকরণ, যোগাযোগ ব্যবস্থার পরিস্থিতি নিরুপণ, ত্রাণ বিতরণ ও উদ্ধার কার্যক্রমের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। দ্রুততম সময়ে বিমান বাহিনীর পরিবহণ বিমান ও হেলিকপ্টার সমুহ বন্যা কবলিত এলাকায় ত্রাণ ও উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে বলে সোমবার দুপুরে বিমান বাহিনীর শমসেরনগর স্টেশনে সাংবাদিকদের এক প্রেসব্রিফিং-এ এসব তথ্য জানান, শমশেরনগর স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার গ্রুপ ক্যাপটেন ওয়াসিম মুস্তাক পিএসসি।
এসময় তিনি আরও জানান, দূরত্ব সুবিধার কারনে সিলেট ও সুনামগঞ্জের বন্যা কবলিত এলাকা থেকে উদ্ধার ও ত্রাণ বিতরণ শমসের নগরের এই বিমান ঘাঁটি থেকে সকল অপারেশনাল কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। কারণ শমশেরনগর থেকে সিলেটের দূরত্ব তেমন বেশি না।
পাঁচজন সাংবাদিক কে সাথে নিয়ে সিলেট ও সুনামগঞ্জ সদর, দিরাই, তাহিরপুর, জামালগঞ্জ ও বিস্বম্ভরপুর উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি আকাশ পথে পর্যবেক্ষণ করে ভয়াবহ তথ্য চিত্র প্রদান করেন। বিশেষ করে সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর ও দিরাই উপজেলা একেবারে বন্যার পানিতে ডুবে রয়েছে।
আকাশ থেকে সুনামগঞ্জ জেলার সব উপজেলার প্রায় ৯৫ ভাগ এলাকা পানির নিচে ডুবে রয়েছে এমন চিত্র দেখা যায়। কোথায় রাস্তা-ঘাট ও ঘরবাড়ী রয়েছে তা বুঝার কোন উপায় নেই, চারিদিকে শুধু পানি আর পানি।
বিমান বাহিনীর পরিবহন হেলিকপ্টারটি খুব নিচ দিয়ে চক্কর দিলেও কিন্তু তেমন কোন মানুষের দেখা মিলেনি। তাদের ভাগ্যে কি ঘটেছে তা হয়তো পরে জানা যাবে। এদিকে বৈরী আবহাওয়ার কারনে বিমান বাহিনী তাদের কার্যক্রম গত দুই দিন থেকে হাতে নিলেও পরবতীতে তা বাতিল করা হয়। রবিবার আবহাওয়া একটু ভালো হওয়ার কারনে ঢাকা থেকে আরেকটি বিশেষ হেলিকপ্টার ‘সার্চ অ্যান্ড রিসকিউ অগাস্টা’ ত্রাণ নিয়ে শমসেরনগর বিমান ঘাঁটিতে অবতরণ করে। পরে সেসব ত্রাণ সিলেটে পৌঁছে দেন হেলিকপ্টারটি।
ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছানোর পর আবারও হেলিকপ্টারযোগে সিলেট সুনামগঞ্জ সদর শহর সুনামগঞ্জের ৬ টি উপজেলা পর্যবেক্ষণ করা হয়। বিমান বাহিনী শমশেরনগর স্টেশন সূত্রে জানা যায়, সিলেটের বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর পক্ষ থেকে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ সহ সকল মানবিক কাজ অব্যাহত থাকবে।
মন্তব্য করুন