হাকালুকির নিস্ব বাতির মিয়ার আহাজারি

হোসাইন আহমদ॥ বোরো ধান ও খামারের হাঁস বারিয়ে এখন নিস্ব বাতির মিয়া। এবারের বোরো মৌসুমে ঋণ করে সাড়ে ৩ একর জমি চাষাবাদ করে ছিলেন। কিন্তু সর্বনাশা বন্যা, অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢলে সব ধান তলিয়ে পানির নিছে। এর কয়েক দিন পরে হাওরের বিষাক্ত পানি খেয়ে খামারের সাড়ে ৬শত হাঁসও মারা যায়। ধান আর হাঁস হারানোর যন্ত্রনায় এখন তিনি অর্ধপাগল। ৫ মেয়ে, ৩ ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে অনাহারে অর্ধাহারে দিন নিপাত করছেন হাকালুকি পারের বাতির মিয়া। সন্তানদের মধ্যে কেউ রোজঘারের উপযোগী নয়। বড় ছেলে ব্যতিত সবাই লেখাপড়া করতেছে।
সরেজমনি রবিবার কুলাউড়া উপজেলা ভুকশিমইল ইউনিয়নের নবাবগঞ্জ বাজারে গেলে দেখা হয় বাতির মিয়ার সাথে। সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে সাথে সাথে তিনি কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, ভাই দেখে যান গত দিনের ঝড়ে আমার ঘর-দোয়ার ভেঁঙ্গে গেছে। বাড়িতে গেলে দেখা যায় ঝড়ে লন্ডভন্ড করে দিছে ছোট টিনের চাউনিটি। বৃষ্টি হলে পানি পড়ে ঘরে। এমন অবস্থায় বাচ্চাদের নিয়ে কোনরকম দিন নিপাত করছেন বাতির মিয়া। রাত হলে ভয়ে ঘুম আসেনা ওদের। কখন যানি ঝড়ে লন্ডভন্ড করে দিবে তাদের শেষ সম্ভল টুকু।
তিনি বলেন, ৮ বছর আগে অগ্রণী ব্যাংকের ভুকশিমইল শাখা থেকে খামার করতে ঋণ আনেন। কয়েকটি হাঁস দিয়ে ২০০৮ সালে খামারটি শুরু করলেও শেষ পর্যন্ত প্রায় ১১শত হাঁস ছিল। কিন্তু সর্বনাশা বন্যার পানি খেয়ে এবারের বন্যায় সাড়ে ৬শত হাঁস মারা যাওয়ায় এখন তিনি নিস্ব। পারিবার, ছেলে-মেয়ে ও খামারের খরচ পরিচালনা করা এখন উনার পক্ষে সম্ভব নয়। ঋণের বুঝা মাথায় নিয়ে এখন প্রায় অর্ধপাগল।
বাতির মিয়া’র সাথে কথা হলে তিনি বলেন, খামারের হাঁস ও বোরো ধান হারিয়ে ঋণের মামলার বুঝা নিয়ে রাস্তায় বসেছি। পূনরায় খামার শুরু করার মতো আর্থিক অবস্থা আমার নেই। যদি সরকারি ভাবে আমাকে প্রশিক্ষণ ও সহযোগীতা করা হয় তাহলে আবার ঘোরে দাঁড়াতে পারব।
মন্তব্য করুন