কুলাউড়ায় রাস্তা পাকাকরণের দাবিতে এলাকাবাসীর মানববন্ধন, স্মারকলিপি

মাহফুজ শাকিল : কুলাউড়া সদর ইউনিয়নের শংকরপুর থেকে বালিচিরি পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা পাকাকরণের দাবিতে রাস্তায় নেমে এসেছেন স্থানীয় এলাকাবাসীসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা।
সোমবার ১৪ জুলাই সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বালিচিরি দিঘীর পাড়ে এলাকাবাসীসহ শিশু শিক্ষার্থীরা সমবেত হন। বিভিন্ন স্লোগান সম্বলিত প্ল্যাকার্ড ও ব্যানার নিয়ে শিক্ষার্থীরা রাস্তা পাকাকরণের দাবিতে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে।
স্থানীয় বাসিন্দা, সমাজকর্মী আব্দুল মোস্তাকিম তামিমের পরিচালনায় মানববন্ধনে একাত্মতা পোষণ করে বক্তব্য দেন সমাজসেবক হাজী ফোরকান আলী, সাবেক ইউপি সদস্য জমসেদ আলী, ইউনিয়নের বাসিন্দা, সিনিয়র সাংবাদিক ময়নুল হক পবন, মাহফুজ শাকিল, জীবন রহমান, সমাজসেবক হাফিজ রহমত আলী, হাফিজ ফরিদ আহমেদ, করিম মিয়া প্রমুখ। মানববন্ধনে স্থানীয় কয়েকটি গ্রামের প্রায় দুই শতাধিক লোক অংশ নেন।
এসময় বক্তারা বলেন, দীর্ঘদিন থেকে সংস্কারের অভাবে বালিচিরি-শংকরপুর রাস্তাটি এখন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। রাস্তার বেহাল দশার কারণে শুধু শিশুরা নয়, পুরো এলাকার মানুষই ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। বিশেষ করে সামান্য বৃষ্টি দিলে শিক্ষার্থীদের স্কুলে পৌঁছাতে অনেক দেরি হচ্ছে। অসুস্থ রোগীদের হাসপাতালে নিতে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। অতীতে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ইউনিয়নের কোন জনপ্রতিনিধি এই রাস্তার উন্নয়নের জন্য কোন উদ্যোগ নেননি। একাধিকবার সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিত অভিযোগ জানানো হলেও মিলছে না কোন প্রতিকার। তাই বাধ্য হয়ে মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করেছি। এসময় শিশু শিক্ষার্থীরা “শিক্ষার পথে কাঁদা কেন, ভাঙা রাস্তা উন্নয়নের লজ্জা, জন্ম থেকে দেখি কাঁদা, পাঁকা রাস্তা কি শুধু স্বপ্ন, গর্তে নয় আমরা চলতে চাই সমতল রাস্তায়, পাকা রাস্তা সবার হয়, বালিচিরি রাস্তার ভাগ্যে শুধু কাঁদা রয়, চলা যায় না, যাওয়া যায় না, এমন রাস্তায় ভোট হয়না, স্কুলে যেতে কষ্ট হয় তাই পাকা রাস্তা চাই, শুধু নির্বাচনের আগে রাস্তা মাপা হয়, তারপর আবার ভুলে যায়, আমাদের রাস্তায় জলাবদ্ধতা নয়, নিরাপত্তা দরকার, রাস্তা ঠিক করো, স্কুলে যেতে দাও” স্লোগান সম্বলিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে দাঁড়ালে উপস্থিত সবার নজর কাড়ে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সদর ইউনিয়নের শংকরপুর-বালিচিরি রাস্তাটি উপজেলা সদরের সাথে যোগাযোগের একমাত্র পথ। প্রতিদিন গুরুত্বপূর্ণ এ রাস্তাটি যোগাযোগ পথ হলেও দীর্ঘদিন ধরে তা অবহেলিত অবস্থায় পড়ে আছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই রাস্তায় সৃষ্টি হয় বড় বড় গর্ত ও কাদা-পানির জলাবদ্ধতা। এতে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির শিকার হচ্ছে স্কুলগামী শিশুরা।
এসময় এক শিক্ষার্থী বলেন, বৃষ্টি দিলে আমরা প্রতিদিন রাস্তা দিয়ে চলাচল করার সময় পা পিছলে পড়ে যাই। কেউ আমাদের দুর্ভোগের কথাটি চিন্তা করেনা। আমরা ছোট বলে কি কেউ আমাদের কথা শুনবে না?।
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল জলিল, আসুক মিয়া জানান, রাস্তার জন্য এতদিন আমরা বলেছি। এবার আমাদের শিশুদের বলতে হচ্ছে। এটা আমাদের প্রশাসনের জন্য খুবই লজ্জার। রাস্তা সংস্কার না হলে আমরা আরও কঠোর আন্দোলনে যাবো।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিন বলেন, রাস্তা পাকাকরণের দাবিতে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে একটি স্মারকলিপি পেয়েছি। উপজেলা পরিষদের মাসিক সভায় বিষয়টি গুরুত্বসহকারে আলোচনা করে উদ্বর্তন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাবনা পাঠানো হবে।
মন্তব্য করুন