পরিবার থেকে রাষ্ট্র: ন্যায়ভিত্তিকসমাজ বিনির্মাণের উপায়- ড. মাহরুফচৌধুরী

একটি ন্যায়ভিত্তিক, মানবিক এবং জবাবদিহিমূলক কল্যাণরাষ্ট্র নির্মাণের আকাঙ্ক্ষা বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের মাঝে বহুদিনের। কিন্তু সেই আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন বারবার বাধাগ্রস্ত হয় যখন রাষ্ট্রব্যবস্থায় কর্তৃত্ববাদ, কাঠামোগত বৈষম্য এবং পরিবারতন্ত্রের মতো প্রথাগত অনাচারগুলো প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করে। আজকের সামাজিক, রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক বাস্তবতায় এই চিত্রগুলো আরও প্রকটভাবে দৃশ্যমান। অথচ রাষ্ট্রব্যবস্থার এই পরিবর্তনের সূচনা ঘটতে পারে একদম প্রাথমিক, কিন্তু গভীর প্রভাববিস্তারী সামাজিক একক ‘পরিবার’ থেকে। পরিবার যদি ন্যায়বোধ,মানবিকতা ও দায়িত্বশীলতার প্রথম পাঠশালা হয়ে উঠতে পারে, তবে সেটিই হতে পারে একটি সুবিচারভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর। গ্রীক দার্শনিক প্লেটো তাঁর ‘দ্যা রিপাবলিক’-এ যেমন ন্যায়ের ধারণাকে ব্যক্তিগত জীবন থেকে রাষ্ট্র পর্যন্ত বিস্তৃত করে দেখানোরচেষ্টা করেছেন, তেমনি আমাদের সমাজেও নৈতিক রাষ্ট্র গঠনের পথ রচিত হতে পারে বৈষম্যহীন, মানবিক ও নৈতিক পরিবারগঠনের মাধ্যমেই।
বাংলাদেশে আজ যে বহুমাত্রিক রাষ্ট্রীয় সংকট আমরা প্রত্যক্ষ করি, বিশেষ করে ক্ষমতার অপব্যবহার, স্বজনপ্রীতি, জবাবদিহির অভাব কিংবা সুশাসনের দুর্বলতা, তার গভীরতম শিকড় খুঁজে পাওয়া যায় আমাদের পারিবারিক কাঠামো, সংস্কার ও সংস্কৃতির অভ্যন্তরে। বহু পরিবারেই এখনো কর্তৃত্ববাদী মনোভাব, পক্ষপাতমূলক আচরণ এবং অসম দৃষ্টিভঙ্গির অনুশীলন চলছে, যা শিশুদের মানসিক ও নৈতিক গঠনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এর ফলস্বরূপ নাগরিক সমাজে গড়ে উঠছে অসহিষ্ণুতা, আত্মকেন্দ্রিকতা, সুবিধাবাদ এবং দায়িত্বহীনতাযা পরে রাষ্ট্রের প্রশাসনিক কাঠামোতেও প্রতিফলিত হয়। এমন পরিবেশেই গড়ে ওঠে এক জবাবদিহিতাহীন, অনমনীয় ও অস্বচ্ছ রাষ্ট্রব্যবস্থা। আমাদের সামাজিক প্রেক্ষাপটে সুইসদার্শনিকরুশো (১৭১২-১৭৭৮) যে ‘সামাজিক চুক্তি’ (সোসাল কন্ট্রাক্ট)-এর কথা বলেছিলেন, তা তখন কেবল কাগজে-কলমে থেকে যায়, বাস্তবতার সঙ্গে তার সংযোগ ছিন্ন হয়। এককেন্দ্রিক পরিবারতন্ত্র কেবল পারিবারিক পরিসরে সীমাবদ্ধ না থেকে রাজনৈতিক দল এবং রাষ্ট্রের শাসনব্যবস্থাকেও গ্রাস করে। ফলে রাষ্ট্রীয় পরিমন্ডলে গণতন্ত্র, মেধা ও ন্যায়ের ভিত্তিতে নেতৃত্ব বিকাশের পথ ক্রমাগত সংকুচিত হয়। এই প্রক্রিয়া সমাজে ‘ক্ষমতার উত্তরাধিকার’ নামক এক অনৈতিক ধারণা ও সংস্কৃতির জন্ম দেয়, যা জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণ ও রাষ্ট্রের প্রতি আস্থা হ্রাস করে।
বিশ্ব ইতিহাসে পরিবারতন্ত্রের দীর্ঘস্থায়ী কুফল সুস্পষ্ট ও সুপ্রতিষ্ঠিত। প্রাচীন রোমে নেতৃত্বের বংশানুক্রমিক উত্তরাধিকার সাম্রাজ্যের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাকে বারবার বিঘ্নিত করেছে। বিশেষত ‘জুলিও-ক্লাউডিয়ান’ রাজবংশের স্বেচ্ছাচারিতার ইতিহাস আজও বিশ্বকে রাজনৈতিক পরিবারতন্ত্রের বিপদ সম্পর্কে সতর্ক করে। ভারতীয় উপমহাদেশে নবাবি ও জমিদারি শাসনেও দেখা যায়, নেতৃত্ব কেবল বংশগত পরিচয় ও সম্পদকেন্দ্রিক যোগ্যতার ভিত্তিতে বন্টিত হওয়ায় সে সময় জনগণের মত প্রকাশ ও অংশগ্রহণ ক্রমশ সংকুচিত হয়ে পড়ে। উপমহাদেশের আধুনিক রাজনীতিও এই একই ধারার প্রবর্তক, ধারক ও বাহক যেখানে নেতৃত্ব অনেক সময়ই ব্যক্তি বা পরিবারের ‘ঐতিহ্য’ রক্ষার হাতিয়ার হয়ে ওঠে। কার্যত, রাজনীতি ক্ষমতা কুক্ষিগত করে শাসন ও শোষণ অব্যাহত রাখার প্রচেষ্টায় রূপ নেয়, প্রকৃতপক্ষে জনসেবার মানসিকতা নয়। এর ফলে গোষ্ঠিতন্ত্র ও একচ্ছত্র ক্ষমতার এমন এক অদৃশ্য প্রাচীর গড়ে ওঠে, যা দুর্নীতি, বৈষম্য ও জবাবদিহিতার অভাবকে একটি ‘নতুন স্বাভাবিক’ (নিউ নর্মাল) অবস্থা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে। ফলে রাষ্ট্রের ন্যায়ভিত্তিক ও অংশগ্রহণমূলক কাঠামো দুর্বল হয়ে শাসন ব্যবস্থা স্বৈরাচারী ও বৈষম্যমূলক হয়ে পড়ে। জনকল্যাণের বদলে ক্ষমতার উত্তরাধিকার ও ক্ষমতায় টিকে থাকাই হয়ে ওঠে দলীয় বা গোষ্ঠিবদ্ধ রাজনীতির মুখ্য উদ্দেশ্য।
আমাদের গভীরভাবে অনুধাবন করা উচিত যে, পরিবারে চর্চিত মূল্যবোধই পরবর্তীকালে রাষ্ট্রের চরিত্র নির্ধারণে মুখ্য ভূমিকা পালন করে। পরিবার হল সেই প্রাথমিক প্রতিষ্ঠান, যেখানে রাষ্ট্রের ভবিষ্যত নাগরিকদের মনের গভীরে চিন্তা, নৈতিকতা ও সামাজিক আচরণের বীজ রোপণ করা হয়। আমেরিকান রাষ্ট্রবিজ্ঞানী রবার্ট এলান ডাহল (১৯১৫-২০১৪) তাঁর ‘বহুত্ববাদ’ (পোলিয়ার্কি) তত্ত্বে গণতন্ত্রের দুটি মৌলিক উপাদান হিসেবে ‘প্রতিযোগিতা’ ও ‘অংশগ্রহণ’-এর ওপর জোর দিয়েছেন। কিন্তু প্রচলিত পরিবারতান্ত্রিক কাঠামোয় এগুলোর চর্চা প্রায় অনুপস্থিত। সাংগঠনিক ও প্রশাসনিক কাঠামোয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় অনেক ক্ষেত্রেই অংশগ্রহণ নেই, প্রশ্ন করার সুযোগ নেই, আর মতভিন্নতা বরদাশত করার সংস্কৃতিও গড়ে ওঠে না। এর ফলেই একটি শৈথিল্যপূর্ণ, কর্তৃত্বনির্ভর ও অনুৎসাহিত রাষ্ট্রীয় সংস্কৃতির জন্ম হয়। একটি সত্যিকার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণ করতে হলে আমাদের পরিবারগুলোকেই হতে হবে গণতান্ত্রিক চর্চার পাঠশালা। পরিবারে যদি সমতা, সহমর্মিতা, পরমতসহিষ্ণুতা ও দায়িত্বশীলতার চর্চা হয়, তবে তা নাগরিকদের মধ্যে ন্যায়বোধ, মানবিকতা এবং অংশগ্রহণমূলক মনোভাব গড়ে তুলবেযা পরবর্তীকালে ন্যায়কেন্দ্রিক রাষ্ট্র গঠনে সহায়ক হবে। অতএব এটা অনস্বীকার্য যে,রাষ্ট্র সংস্কারের অন্যতম পূর্বশর্ত হল পরিবার সংস্কার।
চীনা দার্শনিক কনফুসিয়াস গভীর অন্তর্দৃষ্টির সঙ্গে বলেছিলেন, ‘যদি রাষ্ট্রকে সুশাসিত করতে চাও, তবে আগে পরিবারকে শুদ্ধ করো’। তাঁর চিন্তায় পরিবার ছিল সামাজিক ও নৈতিক শৃঙ্খলার মূল ভিত্তি, যার উপর রাষ্ট্রের ন্যায়ের স্থাপত্য দাঁড়িয়ে থাকে। আগেই উল্লেখ করা হয়েছে, একইভাবে গ্রিক দার্শনিক প্লেটো ‘রিপাবলিক’-এ রাষ্ট্রকে পরিবারের সম্প্রসারিত রূপ হিসেবে কল্পনা করেছেনযেখানে ব্যক্তির চারিত্রিক গুণাবলি ও নৈতিকতা প্রভাব ফেলে রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারণ ও শাসনপ্রক্রিয়ার ওপর। সমাজতাত্ত্বিকরাও পরিবারকে সমাজের ‘প্রাথমিক স্তর’ (প্রাইমারি গ্রুপ) হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন, যেখানে সর্বপ্রথম মানুষ পারস্পরিক সম্পর্ক, দায়িত্ববোধ, সংহতি ও নৈতিকতা সম্পর্কে শিক্ষা পায়। পরিবারই হলো সেই ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র সমাজ, যেখানে ‘আমি’ থেকে ‘আমরা’-র বোধ জন্ম নেয়। সুতরাং পরিবার যদি হয়ে ওঠে মমতা, সমতা, মানবিকতা ও ন্যায়বোধের আদর্শ চর্চার ক্ষেত্র, তবে রাষ্ট্রও হয়ে উঠতে পারে এক বৃহত্তর মানবিক পরিবারযেখানে প্রতিটি নাগরিক কেবল শাসিত নয়, বরং সক্রিয় অংশগ্রহণকারী, সহনশীল এবং দায়িত্বশীল সদস্য।
একটি কল্যাণমুখী ও ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র নির্মাণে শিক্ষাকে সবচেয়ে কার্যকর হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে হলে শিক্ষার ভিত্তিকে পরিবারমুখী ও নৈতিকতায় প্রোথিত করতে হবে। এজন্য শিক্ষা ব্যবস্থার তিনটি ধারায় তথা অনানুষ্ঠানিক, উপানুষ্ঠানিক ও আনুষ্ঠানিক শিক্ষার পরিসরেপারিবারিক শিক্ষার গুরুত্ব স্বীকৃত ও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হওয়া জরুরি। পরিবারের মধ্যে যে নৈতিক ও মানবিক মূল্যবোধের চর্চা হয়, তা যদি শিক্ষা প্রক্রিয়ার কেন্দ্রবিন্দুতে স্থান পায়, তবে শিক্ষা কেবল সার্টিফিকেটমুখী নয়, বরং হবে চরিত্রনির্মাণমূলক। এই রূপান্তর সম্ভব করতে রাষ্ট্রকে নিতে হবে সুস্পষ্ট, কার্যকর ও দীর্ঘমেয়াদি উদ্যোগ। পরিবারগুলোর নিরাপত্তা, স্বাস্থ্যসেবা, প্রাথমিক শিক্ষার সুযোগ এবং নৈতিক বিকাশের উপযোগী পরিবেশ নিশ্চিত করতে সরকারকে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সামাজিক কাঠামো গড়ে তুলতে হবে। সেই সঙ্গেরাষ্ট্রীয় উন্নয়ন কৌশলের অংশ হিসেবে পারিবারিক শিক্ষা ও মূল্যবোধকে নীতিগতভাবে সংহত করতে হবে। এ উদ্দেশ্যে একটি সুনির্দিষ্ট ‘পারিবারিক শিক্ষা নীতি’ প্রণয়ন এবং তার যথাযথ বাস্তবায়নে কাঠামোগত পদক্ষেপ গ্রহণ অপরিহার্যযাতে আগামী প্রজন্মকে গড়ে তুলতে প্রতিটি পরিবার হয়ে উঠতে পারে মানবিক রাষ্ট্রের বীজতলা।
পরিবার-রাষ্ট্র সম্পর্ককে টেকসই ও কল্যাণমুখী করে তুলতে হলে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা পর্যায়ে ‘পরিবারতত্ত্ব’, ‘নৈতিক শিক্ষা’ এবং ‘দায়িত্বশীল আচরণ’-ভিত্তিক পাঠ্যক্রম অন্তর্ভুক্ত করা সময়ের দাবি। শিক্ষার্থীদের কেবল পেশাগত দক্ষতা নয়, বরং নৈতিক আত্মচর্চার পথে প্রস্তুত করাও একটি সুশিক্ষিত রাষ্ট্রের লক্ষণ। গ্রীক দার্শনিক অ্যারিস্টটল তাঁর ‘নিকোমাকিয়ান এথিকস’-এব্যাখ্যা করেছেন, কিভাবে পারিবারিক গুণাবলিযেমন সততা, সংযম, দয়া ও সুবিবেচনাইত্যাদিন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র গঠনের ভিত্তিভূমি হিসেবে কাজ করে। এই দৃষ্টিভঙ্গি আজকের রাষ্ট্রচিন্তাতেও সমানভাবে প্রযোজ্য। কেননা নৈতিকতা ও দায়িত্ববোধহীন নাগরিক দিয়ে কখনোই জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্র গড়ে ওঠে না। তাই পাঠ্যসূচির পাশাপাশি স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে পিতামাতাদের জন্য সচেতনতামূলক ও প্রশিক্ষণমূলক কর্মসূচি চালু করাও প্রয়োজনযাতে তাঁরা সন্তানদের মধ্যে মানবিকতা, সহমর্মিতা ও সমাজসচেতনতার বীজ বপন করতে পারেন। পরিবারকে যদি নৈতিক শিক্ষার জীবন্ত পাঠশালা হিসেবে গড়ে তোলা যায়, তবে রাষ্ট্রও হয়ে উঠতে পারে ন্যায়ের প্রতিষ্ঠানে।
পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রকে নৈতিকতায় ভিত্তিশীল কল্যাণমুখী কাঠামোয় রূপান্তরের জন্য প্রয়োজন পরিকল্পিত, সমন্বিত ও সচেতন উদ্যোগ। এই রূপান্তরের রূপরেখা কেবল নীতিমালায় সীমাবদ্ধ থাকলে চলবে না, তা হতে হবে জনমানসে প্রোথিত এক সাংস্কৃতিক আন্দোলনের মতো। ব্যাপক জনশিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি করে মিডিয়া, সামাজিক সংগঠন এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহকে সম্পৃক্ত করা যেতে পারে এই রূপান্তর প্রক্রিয়ায়। নৈতিক ও পারিবারিক শিক্ষার গুরুত্ব নিয়ে নির্দেশনামূলক নাটক, প্রামাণ্যচিত্র, গণমাধ্যম-ভিত্তিক সচেতনতামূলক অভিযান আয়োজনের মাধ্যমে সমাজে ইতিবাচক মূল্যবোধের বীজ বপন করা সম্ভব। একই সঙ্গে, স্কুল পর্যায়ে নৈতিক শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক ও সক্রিয় অংশগ্রহণভিত্তিক করে গড়ে তোলা যেতে পারে ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের ভিত্তি। এভাবে পরিবার ও রাষ্ট্র পরস্পরবিরোধী নয়, বরং একে অপরের পরিপূরক হয়ে উঠবেযার ফলে সম্ভব হবে একটি ন্যায়ভিত্তিক, মানবিক, উন্নয়নকামী ও স্থিতিশীল সমাজ বিনির্মাণ।
রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা, ন্যায়পরায়ণতা এবং টেকসই উন্নয়নের ভিত্তি গড়ে ওঠে সচেতন নাগরিক ও দায়িত্বশীল নেতৃত্বের মাধ্যমে। আর এর পেছনে থাকে একটি সুশিক্ষিত, নৈতিক ও সহানুভূতিশীল পরিবারের সুদূলপ্রসারী নিরবিচ্ছিন্ন প্রভাব। তাই পরিবারকে কেবল একটি সামাজিক একক হিসেবে নয়, রাষ্ট্রগঠনের মৌলিক ভিত্তি হিসেবে পুনর্মূল্যায়ন করা জরুরি হয়ে পড়েছে। এই প্রেক্ষিতে সামষ্টিক কল্যাণে পরিবারতত্ত্ব কেবল সমাজতাত্ত্বিক পরিভাষা নয়, বরং একটি নৈতিক দর্শন, যার পরিপূর্ণ প্রয়োগ ঘটাতে পারলে রাষ্ট্র হয়ে উঠতে পারে এক বৃহত্তর মানবিক পরিবার। পরিবারেই শুরু হোক ন্যায়ের শিক্ষা, দায়িত্ববোধের অনুশীলন ও মানবিকতার বিকাশযা বিস্তার লাভ করে রূপ নেবে ন্যায়ের রাষ্ট্রে। এই অভিযাত্রায় পরিবার হবে ন্যায়ের পাঠশালা, আর রাষ্ট্র হবে তার বিস্তৃত ও সুগঠিত রূপযেখানে নাগরিকতা ও শাসনব্যবস্থা উভয়ই মূল্যবোধের ভিত্তিতে সামষ্টিক কল্যাণে পরিচালিত হবে আর তারই ফলে রাষ্ট্রীয় আদর্শ ‘বৈচিত্র্যের মাঝে এক্য’ প্রতিফলন ঘটবে সকল নিয়মনীতি ও কর্মকান্ডে।
লিখেছেন: ড. মাহরুফচৌধুরী, ভিজিটিং ফ্যাকাল্টি, ইউনিভার্সিটি অব রোহ্যাম্পটন, যুক্তরাজ্য। Email: mahruf@ymail.com
মন্তব্য করুন