পরিবেশ মন্ত্রীর এলাকা বড়লেখায় বেপরোয়া পরিবেশ বিপর্যয় টিলা কাটায় ফরেস্ট গার্ডের উৎকোচ আদায়

February 14, 2019,

বড়লেখা প্রতিনিধি॥ পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী শাহাব উদ্দিন এমপির নির্বাচনী এলাকা বড়লেখায় বেপরোয়া পরিবেশ বিপর্যয় চলছে। স্থানীয় ফরেস্ট গার্ড আক্তারুল ইসলামকে উৎকোচ দিয়ে সরকারী টিলা কাটছেন বলে টিলা কাটায় জড়িত লোকজন জানিয়েছেন। মন্ত্রী গত ১৭ জানুয়ারী বড়লেখা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সাথে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় বন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিজেদের দুর্নীতি মুক্ত প্রমাণ করার আহবান জানান। কিন্তু কে শুনে কার কথা, রক্ষক হয়ে ভক্ষকের ভুমিকায় বনপ্রহরী আক্তারুল ইসলাম।

জানা গেছে, কতিপয় প্রভাবশালী ব্যক্তি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সরকারী খাস ও বনভুমির টিলা কেটে মাটি বিক্রি করছে। আবার অনেকেই নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে টিলা কেটে বসতবাড়ি নির্মাণ করছে। এতে পরিবেশের মারাত্মক বিপর্যয় ঘটার আশংকা রয়েছে। ইতিপুর্বে ভুমি ধসে মাটা চাপায় এ এলাকায় একাধিক ব্যক্তি নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ৯ ফেব্রুয়ারী ‘বড়লেখায় টিলা কাটা চলছেই মাইকিং করেই দায় সেরেছে প্রশাসন’ শিরোনামে বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ ছাপা হলে অসাধু টিলা খেকোরা ট্রাক ও ট্রাক্টরের বডি বস্তা দিয়ে ঢেকে মাটি পরিবহণ করতে শুরু করে।

১৩ ফেব্রুয়ারী বুধবার সরেজমিনে উপজেলার সদর ইউনিয়নের ডিমাই, মধ্যডিমাই ও উত্তর ডিমাই এলাকায় সরকারী খাস ও একোয়ার্ড ফরেস্টের টিলা কাটা অব্যাহত থাকতে দেখা গেছে। মধ্যডিমাই গ্রামের দুবাই প্রবাসী মকদ্দছ আলীর স্ত্রী সুরতুন নেছা জানান, টিলা কাটা নিষেধ তা জানেন না। বাড়ি তৈরীর জন্য টিলা কাটা শুরু করলে স্থানীয় বনবিটের ফরেস্টার আক্তারুল ইসলাম (বন প্রহরী) এসে বাঁধা দেন। টিলা কাটার খাজনা দাবী করায় তাকে ১ হাজার ৭শ’ টাকা দেই। একই এলাকার মৃত ফরমান আলী আলীর ছেলে দুবাই প্রবাসী ফয়জুর রহমান দাঁড়িয়ে থেকে ১০-১২ শ্রমিক দিয়ে ফরেস্টের বিশাল উচু টিলা কাটতে দেখা গেছে। জানতে চাইলে তিনি বলেন, ফরেস্টারকে জানিয়ে টিলা কেটে তিনি ক্ষেতের জমি তৈরী করছেন। মৃত বাচ্চু মিয়ার ছেলে সাহীন আহমদ টিলা কাটার ব্যাপারে জানান, গরীব মানুষ খাস জমিতে বসবাস করেন। ঘর ধসে পড়ার আশংকায় টিলা কেটে সমান করছেন। ফরেস্ট গার্ড আক্তারুল ইসলামকে টাকা দিয়ে তিনি টিলা কাটছেন। এছাড়া সেলিম উদ্দিনের বিশাল টিলার মাটি কেটে ট্রাকে করে ক্ষেতের জমি ভরাট করাচ্ছেন মৃত রমুজ আলীর ছেলে আব্দুল হান্নান মিন্টু। এ এলাকায় অন্তত অর্ধশত সরকারী টিলা কাটা চলতে দেখা গেছে।

এব্যাপারে বড়লেখা বনবিটের ফরেস্ট গার্ড আক্তারুল ইসলাম জানান, তিনি কোন টাকা পয়সা নেননি। কেউ প্রমাণ দিতে পারবে না। লোকজনকে বাধা দিলে তারা বাধা না মেনেই টিলা কাটে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সুহেল মাহমুদ জানান, টিলা কাটা রোধে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়েছেন। এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com