রবিরবাজারের দুর্গন্ধময় ময়লা আবর্জনা দুষিত হচ্ছে কর্মধা

May 19, 2025,

কুলাউড়া প্রতিনিধি : কুলাউড়া উপজেলার রবিরবাজারের খাস পুকুর পরিস্কার করে পুকুরে জমে থাকা প্লাস্টিক, পলিথিন সহ দুর্গন্ধময় পদার্থ কর্মধা ইউনিয়নের প্রবেশদ্বার রবিরবাজার-কর্মধা সড়কের পাশে শুকনা ছড়া নদীর তীরে ফেলা হয়। এলাকাবাসীর আপত্তির কারণে কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার নির্দেশ দিয়ে কিছু ময়লা অপসারণ করান।

কিন্তু গত ১৫ মে থেকে রবিরবাজারের বিভিন্ন ধরনের ময়লা আবর্জনা ভ্যানে করে নিয়ে শুকনা ছড়া নদীর তীরে রবিরবাজার-কর্মধা সড়কের পাশে ফেলা হচ্ছে।

কর্মধা ইউনিয়নে অবস্থিত কালা পাহাড়, পাহাড়ের পাদদেশে ছোট-বড় অসংখ্য ঝর্ণা, রাঙ্গিছড়া লেক, ফানাই লেক, চা-বাগান অসংখ্য দর্শনীয় স্থানে প্রতি দিন দেশে বিভিন্ন স্থান থেকে পর্যটকদের সমাগম হয়। কিন্তু কর্মধা ইউনিয়নে প্রবেশের প্রধানতম সড়কের পাশে এভাবে ময়লার ভাগার করার ফলে আগত পর্যটকদের মধ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

বিষয়টি নিয়ে ১৮ মে রবিবার কর্মধাবাসীর পক্ষ থেকে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসকের সাথে বিস্তারিত বর্ণনা দিয়ে একটা দরখাস্ত দেওয়া হয়েছে। দরখাস্তে বয়ানী থেকে যানা যায় “রবিরবাজার থেকে প্লাস্টিক, পলিথিনসহ বিভিন্ন ধরণের ময়লা আবর্জনা কর্মধা ইউনিয়নের প্রবেশদ্বার, বারুয়াকান্দি গ্রামের সম্মুখ ভাগে শুকনা ছড়া নদীর তীরে রাস্তার পাশে ফেলা হয়েছে। রবিরবাজার ভূমি অফিসের মাধ্যমে জানতে পারলাম ইউনিয়নের প্রবেশদ্বার ও বারুয়াকান্দি গ্রামের সম্মুখ ভাগে শুকনা ছড়া নদীর তীরে কিছু খাস জমি রয়েছে, সেখানে ময়লা ফেলার বন্দোবস্ত করা হচ্ছে। আমরা কর্মধা ইউনিয়ন বাসীর পক্ষ থেকে তৎক্ষনাৎ তাদের কাছে মৌখিক ভাবে আপত্তি জানিয়েছি।

পরবর্তীতে গত ২৪ এপ্রিল ভূমি অফিসের লোকজন এসে উক্ত খাস জমি লাল পতাকা দিয়ে চিহ্নিত করে যায়। বিষয়টি কর্মধা ইউনিয়নবাসীর জন্য গভীর উদ্বেগের। কারণ অপচনশীল, দুর্গন্ধময় ও দুষিত এসকল বর্জ্য পদার্থ কর্মধা ইউনিয়নের প্রবেশদ্বার (রবিরবাজার-কর্মধা সড়কের পাশে বারুয়াকান্দি গ্রামে) ঘনবসতিপূর্ণ এলাকার পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি নদীর পানি দূষিত হয়ে অত্র এলাকায় রোগজীবাণু ছড়িয়ে পড়তে পারে। কর্মধা ইউনিয়নের প্রবেশদ্বার হওয়ায় অত্র ইউনিয়নের জন-সাধারন রবিরবাজার সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করতে হয়। ফলে সমস্ত ইউনিয়নবাসী এর মাধ্যমে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই প্লাস্টিক সহ পলিথিনের ময়লা আবর্জনা শুকনা ছড়া নদী থেকে ফানাই নদী হয়ে হাকালুকি হাওরে গিয়ে পড়বে। যার ফলে তৎসংলগ্ন এলাকার পরিবেশ নষ্ট হবে।

বিষয়টি মৌখিক ভাবে কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহোদয় কে ম্যাসেজে ও ফোনে অবগত করলে তিনি নির্দেশনা দিয়ে গত ২৮ ও ২৯ এপ্রিল কিছু ময়লা অপসারণ করান।

কিন্তু তারপর গত ১৫ মে থেকে পুনঃরায় ভ্যানে করে রবিরবাজারের ময়লা আবর্জনা কর্মধা ইউনিয়নের প্রবেশদ্বারে ফেলা হচ্ছে।

পূর্বে এই গ্রামে অপরিকল্পিত ভাবে একটি ইট ভাটা নির্মান করার ফলে বর্তমানে অত্র এলাকার লোকজনের শ্বাসকষ্ট, হাঁপানি, সর্দিসহ প্রায় সারা বছর হাঁচি-কাশি লেগে থাকে। এই অবস্থায় একই স্থানে আবারও ময়লার ভাগার স্থাপন করা হলে এই এলাকার মানুষের স্বাভাবিক জনজীবন পরিবেশ দূষণের নেতিবাচক প্রভাবে দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতির সম্মুখীন হবে”।

এ বিষয়ে কয়েকজন সিএনজি চালক বলেন প্যাসেঞ্জার নিয়ে যাতায়াতের সময় দুর্গন্ধে অনেকে শারীরিক অসুস্থতা অনুভব করেন।

এডভোকেট এস সাইফুর রহমান বলেন কর্মধার ত টি প্রবেশ পথের মধ্যে প্রধানতম সড়কের পাশে এভাবে ময়লার ফেলে কর্মধাবাসীর সাথে অবিচার করা হচ্ছে।

লংলা কলেজের সহকারীন অধ্যাপক মো: গোলাপ মিয়া বলেন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর কর্মধা ইউনিয়নের প্রবেশদ্বারে এভাবে অপচনশীল বর্জ্য পদার্থ ফেলা হলে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকার মানুষের জন-জীবন ও স্বাস্থগত বিষয় হুমকির মুখে পড়বে। তবে আমরা আশাবাদী জেলা প্রশাসক মহোদয়ের মাধ্যমে বিষয়টির একটি স্থায়ী সমাধান হবে।

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com