হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের বিক্ষোভ মিছিল, সরকার ঘোষিত মজুরি বাস্তবায়ন ও হোটেল শ্রমিক হ/ত্যা/র বিচার দাবি

স্টাফ রিপোর্টার : হোটেল সেক্টরে সরকার ঘোষিত নিম্নতম মজুরি বাস্তবায়ন, বর্তমান বাজারদরের সাথে সংগতিপূর্ণভাবে ৩০ হাজার টাকা মজুরি ঘোষণা, ৮ ঘন্টা কর্মদিবস, নিয়োগপত্র-পরিচয়পত্র প্রদানসহ শ্রমআইনের সুযোগ-সুবিধা প্রদান এবং সিলেটের কাজিরবাজারস্থ শাপলা হোটেলের শ্রমিক দিনার আহমেদ রুমনকে নৃশংসভাবে হত্যার দৃষ্ঠান্তমূলক বিচারের দাবিতে মৌলভীবাজার জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন বিক্ষোভ মিছিল করেছে।
২২ জুলাই মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শহরের চৌমুহনাস্থ কার্যালয়ে জমায়েত হয়ে হোটেল শ্রমিকরা বিক্ষোভ মিছিল বের করে চৌমুহনী এলাকাসহ শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুণরায় দলীয় কার্যালয়ে সমাপ্ত হয়। পরে কার্যালয়ে জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি তারেশ চন্দ্র দাশের সভাপতিত্বে এক সভা অনুষ্টিত হয়। সভায় সভায় বক্তব্য রাখেন মৌলভীবাজার জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মোঃ শাহিন মিয়া, সহ-সভাপতি জামাল মিয়া, হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন চৌমুহনা আঞ্চলিক কমিটির আহবায়ক বিজয় দেবনাথ, পশ্চিমবাজার আঞ্চলিক কমিটির নেতা কামরুল ইসলাম, জিয়াউর রহমান, রুহুল আমিন প্রমূখ।
সভায় বক্তারা বলেন শ্রমিকরা নিতান্ত জীবিকার তাগিদে কাক ডাকা ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করেও যেমন পায় না ন্যায্য মজুরি তেমনি জীবনের নিরাপত্তা থাকে না। এমন কি শ্রমিকরা শ্রমআইন অনুযায়ী প্রাপ্য সুযোগটুকুও পায় না। হোটেল-রেস্টুরেন্ট-সুইটমিট শ্রমিকরা যে মজুরি পান তা দিয়ে বর্তমান ঊর্দ্ধগতির বাজারদরে পরিবার-পরিজন নিয়ে একজন শ্রমিক ১০ দিনও চলতে পারেন না। চাল, ডাল, তেল, চিনিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন উর্দ্ধগতির পাশাপাশি বাড়িভাড়া, গাড়িভাড়া বৃদ্ধির কারণে জনজীবন দিশেহারা। এমতবস্থায় গত ০৫ মে ২০২৫ হোটেল-রেস্টুরেন্ট শিল্প সেক্টরে সরকারের নিম্নতম মজুরি হার ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করেন। ঘোষিত নিম্নতম মজুরি বর্তমান বাজারদর এবং ৬ সদস্যদের একটি পরিবারের ভরণপোষণের প্রেক্ষিতে শ্রমিকদের দাবি থেকে অনেক কম। কিন্তু তারপরও সরকার ঘোষিত নিম্নতম মজুরি সর্বস্তরে বাস্তবায়ন করা হয়নি। অথচ হোটেল মালিকপক্ষ সরকারী আইনের তোয়াক্কা না করলেও সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এব্যাপারে নির্বিকার। শ্রমআইনে স্বাস্থ্যকর পরিবেশে কাজ ও বাসস্থানের বিধান থাকলেও শ্রমিকদের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে কাজ করতে ও থাকতে বাধ্য করা হয়। শ্রমিকদের দৈনিক ১০/১২ ঘন্টা অমানবিক পরিশ্রম করে অর্ধাহারে-অনাহারে পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে বাধ্য হয়। সভায় বক্তারা ক্ষোভ করে গত ১৩ জুলাই সিলেটের কাজিরবাজারস্থ শাপলা হোটেলের শ্রমিক দিনার আহমেদ রুমনকে তুচ্ছ কারণে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। এই ঘটনার মধ্যে আবারও হোটেল শ্রমিকদের জীবনের নিরাপত্তাহীনতার বিষয়টি সামনে আসে। এরআগেও মৌলভীবাজারে শিশু শ্রমিক তানিম ও ঢাকার ঘরোয়া হোটেলের কিশোর শ্রমিক রিয়াদকে হত্যা করা হলেও দৃষ্ঠান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত না করায় একের পর এক শ্রমিককে নির্মমভাবে খুন হতে হচ্ছে। মাত্র ২২ বছরের তরতাজা যুবক দিনার আহমেদ রুমন হত্যার দৃষ্ঠান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সিলেট, সুনামগঞ্জ, জুড়ী, চট্টগ্রাম, যশোর, ঢাকাসহ সারাদেশের হোটেল শ্রমিকরা বিক্ষোভ করেন।
মন্তব্য করুন