পতিত বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর ক্ষমতার অপব্যবহারে ২শ মা মলা ও ছেলেকে হ ত্যা র অভিযোগ মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবে ভোক্তভোগি দুই নারীর সংবাদ সম্মেলন

August 11, 2025,

স্টাফ রিপোর্টার : ৫’শ কোটি টাকার সম্পত্তির লোভে আমেরিকান প্রবাসী যুবককে খুন করা হয়েছে। খুনের মাস্টার মাইন্ড হিসেবে অভিযোগ উঠেছে পতিত স্বৈরাচারী সরকারের জ¦ালানী ও বিদ্যুৎ প্রতি মন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর বিরুদ্ধে। খুনের ঘটনা ধামাচাপা দিতে নিহত যুবকের মা মানবাধীকার কর্মীকে মৌলভীবাজার সহ দেশের বিভিন্ন জেলায় প্রায় ২’শ টি মিথ্যা মামলায় জড়িয়েছে তার লোকজন। একই ভাবে মামলায় জড়িয়েছে তার প্রতিবেশী বোনকেও।

১১ আগস্ট বিকেল ৩ টায় মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এমন অভিযোগ করেন মানবাধীকার কর্মী, হোপস ডোর বাংলাদেশ এর চেয়ারম্যান ও আমেরিকান প্রবাসী শামীমুন নাহার।

তিনি লিখিত বক্তব্যে জানান, মৌলভীবাজার শহরের মুসলিম কোয়ার্টার এলাকার ক্লাব রোডে বসবাসকারী উমায়রা ইসলাম ইমা নামের এক নারী আইনজীবীর সাথে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ২০২০ সালের নভেম্বর মাসের শেষ দিকে পরিচয় হয়। বিভিন্ন সময়ে ফোনে কথা বলায় তার প্রতি অগাদ বিশ^াস তৈরী হয় মানবাধীকার কর্মী শামীমুন নাহারের। সিলেটে আসলে হযরত শাহজালাল (র:) ও হযরত শাহপরান (র:) মাজার শরিফ জিয়ারত করতে নিয়ে যাওয়ার কথা জানান শামীমুন নাহার। উমায়রার আমন্ত্রণে গত ১৫/১২/২০২০ ইংরেজি পৌছান মৌলভীবাজার শহরের বাসায়। সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে মাজারে নিয়ে যাবে বলে মৌলভীবাজার সাকুরা মার্কেট দিকে রওয়ানা হয়। সাকুরা মার্কেটে না গিয়ে অন্য রাস্তায় নিয়ে আন্ডারগ্রাউন্ডে অবস্থিত ‘হাটবাজার’ দোকানে নিয়ে যায়। সেখানে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে আমেরিকান ক্রেটিড কার্ডের মাধ্যমে তার এবং তার পরিবারে জন্য প্রায় ৫ লক্ষ টাকার কাপড় ও অন্যন্য মালামাল ক্রয় করে। বাজার গুলো বাসায় পৌঁছানোর পর গাড়ির মধ্যে কালো রংয়ের ব্যাগ থেকে উমায়রা পিস্তল বের করে ৬টি গুলি ভরে। এরপর গাড়ির ভেতর তার শরীরে পিস্তল ঠেকিয়ে সাকুরা মার্কেট যাওয়ার সময় হুমকি দিয়ে পূর্ব থেকে প্রস্তুত রাখা বি-ল্যাটেরাল এগ্রিমেন্টে স্বাক্ষর নেয়। ওদিন মৌলভীবাজার এনসিসি ব্যাংকে তার টাকা দিয়ে শামীমুন নাহার নামে একটি একাউন্ট খুলে ও চেক বই তার তারে কাছে নিয়ে নেয়। ওই একাউন্টের মাধ্যমে সে প্রতারণা করে মানুষকে বিদেশ পাঠানোর নামে টাকা আত্মসাতের উদ্দেশ্য ছিলো।

তিনি আরও জানান, বি-ল্যাটেরাল এগ্রিমেন্টে স্বাক্ষর নেয়ার উদ্দেশ্য ছিলো তার বাবা এ.কে.এম রশিদ উদ্দিন সাবেক সচিব ঢাকার ৩টি বাড়ি ও দোকানসহ প্রায় ৫ শত কোটি টাকার সম্পত্তি আত্মসাৎ করা। এর মাস্টার মাইন্ড হিসেবে কাজ করে পতিত স্বৈরাচারী সরকারের জ¦ালানী ও বিদ্যুৎ প্রতি মন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। প্রতি মন্ত্রীর পরামর্শে মৌলভীবাজারে আনার অন্যতম সদস্য ছিলো আইনজীবী উমায়রা ইসলাম ইমা, কুলাউড়ার বরমচাল শাহ কালা মাজারের খাদিমের ছেলে আজমল আলী শাহ (সেন্টু), ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও কুলাউড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মমদূদ হোসেন, এডভোকেট আজিজুর রহমান সহ মৌলভীবাজার, ঢাকা ও বিদেশের অনেকেই এই সংঘবদ্ধ চক্রে জড়িত রয়েছে।

উপরের উল্লেখিত চক্র তার আমেরিকায় জন্ম নেওয়া বড় ছেলে সাফায়েত ফরাইজি (৩৫) কে সেপ্টেম্বর ২০২১ সালে দেশে আসলে ১ জানুয়ারি ২০২২ সালে টার্গেট করে নৃসংশভাবে হত্যা করা হয়। ছেলে হত্যার বিচার চাওয়াতে তার উপর আক্রমণ চালায়। তাদের আক্রমণের শিকার হয়ে ৪ মাস ঢাকা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসা নেন ।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৌলভীবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত সিআর/মামলানং-২৩৭/২০২২ ইং এবং মামলার তারিখ  ২২ মে ২০২২ ইং মামলা দায়ের করেন মো: আজমল আলী শাহ (সেন্টু)।

মামলার এজাহারে উল্লেখিত তারিখ ও ঘটনারস্থল মিথ্যা  সিআইডির তদন্তে তা উঠে আসে। এই রিপোর্ট দেওয়ার পর পতিত ফ্যাসিবাদী সরকারের প্রতি মন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু ক্ষমতার অপব্যাবহার করে ওই তদন্তকারী কর্মকর্তাকে এখান থেকে সরিয়ে দেয়।

এরপর পুন:রায় সিআইডির মাধ্যমে আমাদের বিরুদ্ধে ফরামায়েশি তদন্ত রিপোর্ট দেয় মো: শামীম রেজা এসআই। এই রিপোর্টের পর থেকে আমার প্রতিবেশী বোন মানবাধীকারকর্মী ফৌজিয়া হাসান (৬০) সহ আমাকে ৫ বার ওয়ারেন্ট বের করে হয়রানী করা হয়। ৫ বারই আদালতে স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পন করেন ও জামিন নেন। এ ধরনের দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রায় ২০০টি মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়। আইনজীবী উমায়রা ইসলাম ফেসবুকে পবিত্র ধর্ম ইসলাম বিরোধী কটুক্তি করলে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। ওই মামলায় কারাগারে আছেন।

উল্লেখ্য যে ২০২৪ সালের ২৭ জুন মৌলভীবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের বিজ্ঞ বিচারক দাউদ হাসানের আদালতে দীর্ঘ শোনানী ও প্রকৃত মেডিকেল রিপোর্টের ভিত্তিতে আমাদের দুইজনকেই বেকসুর খালাস দেন। এরসাথে মামলাটিও খারিজ হয়ে যায়। দু:খের সাথে বলছি আইনজীবী উমায়রা তার আইন পেশাকে বেআইনীভাবে ব্যবহার করে প্রতি মন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর ক্ষমতা অপব্যবহার করে উল্লেখিত বিচারককেও স্ট্যান্ড রিলিজ করে দেওয়া হয়।

শামীমুন নাহার জানান, তাদের সকলের মূল উদ্দেশ্য হলো তার বড় ছেলের নির্মম হত্যাকান্ডের বিচার যেন না পাই। তারা আমার সম্পত্তি গ্রাস করতে মানুষিক, শারীরিক ও অর্থনৈতিক ভাবে আমাকে পঙ্গু করে দেওয়ার পায়তায় লিপ্ত রয়েছে। আমার ঢাকার বাড়িতে সাড়ে ৫ কোটির উপরে স্বর্ণালংকার, ইউএস ডলার এবং টাকা পয়সাসহ সব ডাকাতি করে নিয়ে যায়। আমি ওই সময় কোন আইনী সহায়তা না পেয়ে ফেসবুক লাইভে এসে সকল ঘটনা আমি অবগত করি। তারা এখনো আমার পিছু ছাড়েনি। তবে ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর থেকে আমার অনেকটা ন্যায় বিচার পাওয়া সম্ভাবনার ‘আশার আলো’ দেখছি। তিনি ন্যায় বিচারের লক্ষে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সুদৃষ্টি কামনা করেন।

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com