রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক শাহেদকে নিয়ে মৌলভীবাজার জুড়ে তোলপাড়

July 15, 2020,

স্টাফ রিপোর্টার॥ ঢাকার রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক করোনা নমুনা পরীক্ষায় জালিয়াতি মামলার প্রধান আসামী শাহেদ ওরফে শাহেদ করিম কমলগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে পালানোর গুঞ্জনে কমলগঞ্জ উপজেলাসহ পুরো মৌলভীবাজার জেলাজুড়ে তোলপাড় চলে। শাহেদের সন্ধানে জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এই খবরে জেলা জুড়ে তোলপাড়। সীমান্ত দিয়ে ভারত পালিয়ে যেতে পারেন এমন খবরে সীমান্তবর্তী এলাকাগুলো বিশেষ নজরদারি চালানো হয়। সোমবার রাতভর ঢাকা থেকে আসা র‌্যাবের একটি টিম সহ আইনশৃংখলা বাহিনীর তৎপরতা শেষে মঙ্গলবার ১৪ জুলাই এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত শাহেদের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।
আত্মগোপনে থাকা ঢাকার রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক শাহেদ জেলায় অবস্থান করার গুঞ্জনে সীমান্ত এলাকায় চষে বেড়িয়েছেন জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের বেশ কয়েকজন ইলেকট্রনিক্স ও প্রিন্ট মিডিয়ার কর্মীরা। সোমবার রাতভর ছুটে চলা কমলগঞ্জের কুরমা সীমান্ত থেকে ধলাই সীমান্তসহ কমলগঞ্জের অন্য সীমান্ত এলাকা। সর্বশেষ মঙ্গলবার সকাল থেকে অবস্থান ছিল ধলই সীমান্তে। সোমবার দিবাগত রাত ১ টা ৩৮ মিনিটে কালো রংয়ের দুটি গাড়ি কমলগঞ্জের শমশেরনগর দিয়ে দ্রুতগতিতে ছুটে চলা আর মঙ্গলবার দুপুরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি গাড়ি ধলই সীমান্ত থেকে বেরিয়ে যাওয়া সব মিলিয়ে ভাল কোনো বার্তা না পেলেও জাতীয় ও স্থানীয় সংবাদকর্মী সবার চোখ ছিলো কমলগঞ্জের উপর।
সারা দেশ জুড়ে খবর ছড়িয়ে পরে যে শাহেদ মৌলভীবাজারের সীমান্তবর্তী দুই উপজেলা শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জের কোথাও লুকিয়ে রয়েছে। এমন খবর পেয়ে মাঠে নামে র‌্যাব-পুলিশ। পুলিশ বিভিন্ন সড়কে এলাকায় যানবাহনে তল্লাশী চালিয়েছে। শমশেরনগরেও আকস্মিক পুলিশি তৎপরতা শুরু হয়। শমশেরনগর চৌমুহনা থেকে ভারতের ত্রিপুরাগামী চাতলাপুর চেকপোস্ট সড়কের মুখে শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা দাঁড়িয়ে যানবাহন তল্লাশি করতে দেখা গেছে।
এদিকে একটি নির্ভরযোগ্য গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে জানা গেছে, মো: শাহেদ মৌলভীবাজারের চাতলাপুর, কুরমা বা ধলই সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়ে যেতে পারে এ খবরে ঢাকা থেকে র‌্যাবের একটি টিম শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ উপজেলায় অভিযান চালায়। র‌্যাবের টিম শ্রীমঙ্গল লেমন গার্ডেন, লাউয়াছড়া, কুরমা, ধলই ও চাতলাপুর সীমান্ত রোডেও তৎপরতা চালায়। তারা শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন গেস্ট হাউজেও তল্লাসী চালায়।
সোমবার সন্ধ্যায় খবর আসে ঢাকা হেডকোয়ার্টার থেকে র‌্যাবের একটি দল শাহেদকে ধরতে শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ এলাকায় অভিযান চালাচ্ছে।
তবে র‌্যাব-৯ এর শ্রীমঙ্গল ক্যাম্পের অধিনায়ক মেজর আহমেদ নোমান বলেন, এই রকম কোন তথ্য তাদের কাছে নেই এবং তারা নিজেও অভিযানে নেই। তবে র‌্যাবের হেড কোয়ার্টারের মাধ্যমে বা অন্যকোন ইউনিটের মাধ্যমে অভিযান চালানো হতে পারে বলে জানান তিনি। সোমবার বিকাল থেকে কমলগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গল উপজেলায় পুলিশি তৎপরতা বৃদ্ধি করা হয়।
পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক সূত্রে জানা গেছে, সিলেট বিভাগের সাথে ভারতের দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে। ফলে সব যায়গায় সতর্ক অবস্থানে আছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তবে কোন জায়গায় শাহেদ আছে এরকম নির্দিষ্ট করে কিছু বলা যাচ্ছে না।
র‌্যাবের মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক আশিক বিল্লাহ সাংবাদিকদের জানান, ঢাকা এবং ঢাকার বাইরে একাধিক দল শাহেদকে গ্রেপ্তারের জন্য কাজ করছে।
শমশেরনগর পুলিশ ফাড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক (তদন্ত) অরুপ কুমার চৌধুরী বলেন, শাহেদ এই দিকে আছে এমন কোন নির্দিষ্ট তথ্য নেই। যেহেতু সীমান্ত এলাকা তাই সে পালানোর চেষ্টা করতে পারে এটা সন্দেহ অতিরিক্ত সতর্কতা গ্রহন করেছি।
মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ জানান, শাহেদ এখানে আছে এই রকম সুনির্দিষ্ট কোন তথ্য নেই। তবে আমরা সব সময় সতর্ক আছি। এই সতর্কতার নির্দেশ সব যায়গায় দেওয়া আছে।

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com