কমলগঞ্জে ছোট ভাইয়ের কোদালের আঘাতে বড় ভাইয়ের মৃত্যু : এক মাসেও আসামী গ্রেফতার হয়নি

প্রনীত রঞ্জন দেবনাথ॥ জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার সীমান্তবর্তী ইসলামপুর ইউনিয়নের কালারায়বিল গ্রামে ২৬ নভেম্বর ছোট ভাইয়ের কোদালের আঘাতে গুরুতর আহত কৃষ্ণ কান্ত সিংহ (৭০) সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৪ দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে ৩০ নভেম্বর বিকেলে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। আহত বড় ভাইয়ের মৃত্যুর খবর শুনে ঘাতক ছোট ভাই লাল মোহন সিংহ (৫০) স্বপরিবারে পলাতক রয়েছে। এ ঘটনার এক মাসের অধিক সময় পার হলেও পুলিশ আসামীকে গ্রেফতার করতে পারেনি। বরং আসামী পক্ষের লোকজন মামলাটি প্রত্যাহার করে নিতে নিহতের পরিবারের সদস্যদের নানাভাবে হুমকি প্রদান করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন নিহত কৃষ্ণকান্ত সিংহের মেয়ে রুমা সিনহা।
ঘাতক ছোট ভাই লাল মোহন সিংহ (৫০) কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসে ডুপ্লিকেটিং অপারেটর পদে চাকুরি করেন। ঘটনার পর থেকে খুনী ছোট ভাই স্ব-পরিবারে পলাতক রয়েছে। এ ব্যাপারে কমলগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। কুলাউড়া উপজেলঅ নির্বাহী অফিসার এ, টি, এম ফরহাদ চৌধুরী জানান, গত এক মাস ধরে তাঁর কার্যালয়ের ডুপ্লিকেটিং অপারেটর অনুপস্থিত রয়েছেন, বেতন-ভাতাও বন্ধ রয়েছে। আদালতের নির্দেশনা আসলে তার বিরুদ্ধে যখাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে নিহত কৃষ্ণকান্ত সিংহের মেয়ে রুমা সিনহা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ছোট কাকা ভাই লাল মোহন সিংহের সাথে জমিজমা নিয়ে বিরোধ চলছিল তার বাবা কৃষ্ণ কান্ত সিংহের। ঘটনার দিন সকালে বাড়ির পার্শ্বের জমিতে সবজি ক্ষেত পরির্চচা করতে জমিতে গেলে কৃষ্ণ কান্ত সিংহকে কোদাল দিয়ে মাথায় কুপ দেয় ছোট কাকা লাল মোহন সিংহ। মাথায় কুপের কারণে কৃষ্ণ কান্ত সিংহকে গুরুত্ব আহতাবস্থায় সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ রাতেই তার অবস্থার অবনতি হলে নিবির পর্যবেক্ষণ ইউনিটে (আইসিইউতে) নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩০ নভেম্বর সন্ধ্যায় তার মৃত্যু হলে ওই রাতেই তিনি বাদি হয়ে কমলগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
তিনি আরও বলেন, দীর্ঘ এক মাস অতিবাহিত হলেও পুলিশ হত্যাকারী কাকা লাল মোহন সিংহকে গ্রেফতার করতে পারেনি। উল্টো ঘাতক কাকার লোকজন তাদেরকে নানাভাবে হুমকি প্রদর্শণ করছেন। তাই তারা এখন আতঙ্কে আছেন। হত্যাকারীকে অবিলম্বে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করি।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কমলগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক ফজলে এলাহী জানান, ঘটনার পর থেকেই আসামীরা পলাতক রয়েছে। ময়না তদন্ত পাওয়ার জন্য আদালতে আবেদন জানানো হয়েছে।
কমলগঞ্জ থানার অফিসার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আরিফুর রহমান বলেন, হত্যা মামলার আসামীদের গ্রেফতারের সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে। সেইসাথে পরিবারকে হুমকির বিষয়টি পুলিশ খতিয়ে দেখছে।
মন্তব্য করুন