আগস্ট মাসের বেতন প্রাপ্তি জটিলতার জের বড়লেখার চান্দগ্রাম ফাজিল মাদ্রাসার শিক্ষকদের ৫ দিন ধরে কর্ম বিরতি

September 22, 2018,

বড়লেখা প্রতিনিধি॥ বড়লেখার চান্দগ্রাম আনোয়ারুল উলুম ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসার ২৭ জন শিক্ষক-কর্মচারীর আগস্ট মাসের বেতনের প্রায় ৪ লাখ টাকা স্থানীয় জনতা ব্যাংক ছাড় না দেয়ায় শিক্ষকরা ৫ দিন ধরে কর্ম বিরতি পালন করছেন। এতে মাদ্রাসার সহ¯্রাধিক শিক্ষার্থী পাঠগ্রহণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তবে জনতা ব্যাংকের ম্যানেজার শৈলেন্দ্র শর্মা বললেন বেতন বিল বিধিসম্মত না হওয়ায় তিনি বেতন ছাড় দেননি।

জানা গেছে, চান্দগ্রাম আনোয়ারুল উলুম ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসার গভর্নিং বডির নির্বাচন নিয়ে অধ্যক্ষ মোস্তাক আহমদ চৌধুরীর সাথে সভাপতি ময়নুল হক ও উপাধ্যক্ষ ওহীদুজ্জামান চৌধুরীর বিরোধ চলছিল। এর জের ধরে প্রায় ৮ মাস পূর্বে গভর্নিংবডি অধ্যক্ষ মোস্তাক আহমদ চৌধুরীকে বরখাস্ত করে উপাধ্যক্ষ ওহীদুজ্জামান চৌধুরীকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিযুক্ত করে। ২৩ ফেব্রুয়ারী গভর্নিংবডির মেয়াদ শেষ হলে আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার গত ৭ আগস্ট মৌলভীবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আশরাফুর রহমানকে সভাপতি করে এডহক কমিটি গঠন এবং বরখাস্তকৃত অধ্যক্ষ মোস্তাক আহমদ চৌধুরীকে স্বপদে বহালের ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন। এদিকে গত ৯ সেপ্টেম্বর মাদ্রাসার ২৭ জন শিক্ষক-কর্মচারীর আগস্ট মাসের ৩ লাখ ৯৩ হাজার ৬৭০ টাকার বেতন বিল জনতা ব্যাংক বড়লেখা শাখায় জমা দেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ওহীদুজ্জামান চৌধুরী। এতে মেয়াদোত্তীর্ণ গভর্নিংবডির সভাপতির স্বাক্ষর থাকায় এবং আরবী বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দেশিত অধ্যক্ষের স্বাক্ষর না থাকায় জনতা ব্যাংক সংশ্লিষ্ট শিক্ষক-কর্মচারীর বেতন ছাড় দেয়নি।

বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিনে মাদ্রাসায় গিয়ে দেখা গেছে প্রত্যেক শ্রেণীকক্ষ ফাঁকা। কিছু শিক্ষার্থী ক্লাসে বই-খাতা রেখে মাঠে খেলাধুলা করছে। শিক্ষকরা মিলনায়তনে বসে সময় কাটাচ্ছেন। অস্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী উবায়দুর রহমান, আদনান আহমদ, জাহাঙ্গীর আলম জানায়, আগামী ১ নভেম্বর তাদের ফাইনাল পরীক্ষা। ২৭ সেপ্টেম্বর মডেল টেস্ট। গত ৫ দিন ধরে মাদ্রাসায় আসছে আর যাচ্ছে। উস্তাদরা পড়াচ্ছেন না। এতে আমাদের পড়াশুনার মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। শিক্ষক প্রতিনিধি রাজিব কুমার পোদ্দার, শিক্ষক ফুরকান উদ্দিন, আপ্তাব উদ্দিন জানান, ৪দিন ধরে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ওহীদুজ্জামান চৌধুরীকে কর্মস্থলে পাওয়া যাচ্ছে না। ৯ সেপ্টেম্বর ব্যাংকে বিল জমা দিয়ে এসে আমাদেরকে বলেন, একটি কাগজ জমা দেয়া বাকি থাকায় বেতন ছাড় হচ্ছে না। এরপর সুস্পষ্ট কিছুই বলেননি। বরং ৩ জন শিক্ষক বেতন পেয়েছেন বলে বিভ্রান্তি ছড়ান। শিক্ষকরা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বেতন না পেলে কর্মবিরতি পালনের আল্টিমেটাম দেন। বেতন না পাওয়ায় ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে সর্বসম্মতিক্রমে আমরা কর্মবিরতি পালন করছি।

শিক্ষার্থী অভিভাবক নজরুল ইসলামম কমর উদ্দিন, খয়রুল ইসলাম প্রমূখ জানান, গভর্নিংবডির দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্বে মাদ্রাসার স্বাবভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাপত হচ্ছে। গত ১ সপ্তাহ ধরে শিক্ষকরা কর্ম বিরতি পালন করছেন। এতে তাদের সন্তানরা পড়াশুনায় পিচিয়ে পড়ছে।

এ ব্যাপারে জানতে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ওহীদুজ্জামান চৌধুরীর মোবাইল ফোনে (০১৭৫২০৩২০৪৪) যোগাযোগ করলে রিং বাজলেও ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

জনতা ব্যাংক বড়লেখা শাখার ম্যানেজার শৈলেন্দ্র শর্মা জানান, চান্দগ্রাম আনোয়ারুল উলুম ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মোস্তাক আহমদ চৌধুরী এক পত্রে জানিয়েছেন আরবী বিশ্ববিদ্যালয় আগের গভর্নিংবডি বাতিল করে এডহক কমিটি গঠন করেছেন। আগস্ট মাসের বেতন বিল বিধিসম্মত না হওয়ায় বিলের বেতন পরিশোধ করা হয়নি।

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com