ঐতিহ্যবাহী এম.সি.কলেজ হোষ্টেলে গৃহ বধু গনধর্ষন; এ লজ্জা রাখব কোথায়; এ লজ্জা ঢাকব কি দিয়ে?

October 15, 2020,

মুজিবুর রহমান মুজিব॥ ষাটের দশকের শুরুতে আমার প্রিয় কলেজ, ঐতিহ্যবাহী এম.সি.কলেজ হোষ্টেলে স্বামী সহ বেড়াতে আসা গৃহ বধুকে বিগত ২৫ সেপ্টেম্বর ছাত্রলীগ নামধারি রাজন, আইনুল গং ছয়জন বদমায়েস কর্তৃক গণ ধর্ষনে সিলেট-বাংলাদেশ-মিডিয়া ভূবন-সন্ধ্যাও মধ্য রাতের টক শো সমূহে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে- ঝড় উঠেছে। ছাত্র ও রাজনৈতিক দল সমূহ বে-আদব ও বদমায়েসদের এহেন ঘৃন্যতম-পাষবিক-জঘন্যতম ও ন্যাক্কার জনক দূর্ঘটনার ধিক্কার ও নিন্দা জ্ঞাপন করছেন। ধর্ষক রাজন-আইনুল-রা ছাত্রলীগ ও সরকার দল-সরকার সমর্থক হলেও আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ এর পক্ষ থেকে ও এই দূঃখজনক দূর্ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দাজ্ঞাপন করছেন। সরকারের মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন বরাবরের মত অপরাধী যেই হউক আইনের আওতায় এনে ন্যায় বিচারের আশ্বাস প্রদান করেছেন। ইতিপূর্বে ছাত্রলীগের কতেক সন্ত্রাসী কর্তৃক ঐতিহ্যবাহী এম.সি.কলেজ হোষ্টেল নিষ্টুরের মত জ্বালিয়ে দিলে, কলেজের কৃতি এবং সেকেন্ড ব্লকের আবাসিক ছাত্র আওয়ামীলীগ সরকারের তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ সাহেব ফুফিয়ে ফুফিয়ে কেঁদে ছিলেন। সাবেক বাম ভাব ধারার আবুল মাল আব্দুল মুহিত এবং নূরুল ইসলাম নাহিদ সাহেবদের অশ্রু বিসর্জন তাঁদের অশ্রু, আবেগ ও হৃদয়ানুভূতির প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেন নি-সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সমূহ। এম.সি.কলেজ হোষ্টেল অগ্নি সংযোগের মামলায় ন্যায় বিচার হয়নি, বিচার হীনতার সংস্কৃতি অপরাধীগণকে অপরাধ সংঘটনে উৎসাহিত করে, অপরাধীগণ পূনঃ মনের সুখে-খুস্যানন্দে-অপরাধ মূলক কর্মকান্ডে লিপ্ত হয়।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যরে অপরূপ লীলা ভূমি পাহাড়-টিলা-নদ-নদী-হাওর বাওর-দিগন্ত বিস্তৃত ফসলের মাঠ সমেত ইয়েমেনী বীর-পিরানে পীর হযরত শাহজালাল ইয়েমেনীর স্মৃতি ধন্য পূর্ন্য ভূমি সিলেট তিনশত ষাট আওলিয়ার মুল্লুক হিসাবে খ্যাত। সিলেটের সামাজিকতা, মেজবানি, মেহমানদারি, সাম্প্রদায়ীক সম্প্রীতির খ্যাতি দেশ নয়- দুনিয়া ব্যাপী। সনাতন ধর্মের অবতার ও ধর্ম প্রচারক শ্রী চৈতন্যের পিতৃভূমি এই সিলেট। সিলেটে হিন্দু-মুসলমান বৌদ্দ খৃষ্টান-খাসিয়া, মনিপুরী জাতি-উপজাতি পাশাপাশি হাজার বছর ধরে শান্তি পূর্ণ ভাবে বসবাস সহ অবস্থান করে আসছেন।
এম.সি.কলেজ, শিক্ষা দীক্ষায়, জ্ঞানে গরিমায় বৃহত্তর সিলেটের ঐতিহ্য-বাংলাদেশের গর্ব ও গৌরব। যুগের দাবী ও সময়ের প্রয়োজনে বর্ত্তমানে প্রত্যেক উপজেলায়-ইউনিয়ন-গ্রাম পর্য্যায়ে কলেজ প্রতিষ্ঠিত হলেও এম.সি.কলেজ আপন মহিমা ও ঐতিহ্যে বহাল আছে। কলেজটি আবাসিক। কলেজ এর ছাত্রাবাস ও ব্লক সমূহের স্বকীয়তা ও স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট বিদ্যমান। অপরূপ প্রাকৃতিক নিসর্গ, ধর্মীয় ও ঐতিহাসিক স্থান ও স্থাপনার কারনে বৃহত্তর সিলেট একটি পর্য্যটন এলাকা। শাহ জালাল ও শাহ পরানের মাজার জিয়ারতে ধর্ম প্রাণ মুসলমানগণ, ঢাকা দক্ষিনে শ্রী চৈতন্যের পিতৃভূমি দর্শন ও পূন্য প্রাপ্তির প্রত্যাশায় সনাতন ধর্মাবলম্বিদের শুভাগমন ঘটে॥ ইতিহাস ঐতিহ্য গত কারনে এম,সি, কলেজ-কলেজ এলাকা একটি দর্শনীয় স্থান। পর্য্যটন এলাকা। এখানেও পর্য্যটকদের শুভাগমন ঘটে। ষাটের দশকের শুরুতে ঐতিহ্যবাহী এম,সি, কলেজের ছাত্র ছিলাম। তখন শ্রদ্ধেয় সলমান চৌধুরী ছিলেন জাঁদরেল প্রিন্সিপাল। ইংরেজী বিভাগে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের খ্যাতিমান কবি ও কলামিষ্ট শ্রদ্ধেয় এ,এইচ, মোফাজ্জল করিম, বাংলা বিভাগে শ্রদ্ধেয় সুধীর চন্দ্র পাল ও শ্রদ্ধেয় আবুল বশর ছিলেন আমাদের শিক্ষক। বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ কবি আবৃত্তিকার ও সংঘটক এ.এইচ.মোফাজ্জল করিমের প্রেরনা ও রম্য লেখক ছাত্র সংসদ নেতা সর্ব প্রিয় সৈয়দ মোস্তফা কামাল এর নেতৃত্বে মুক্ত বুদ্ধির আন্দোলন বেগবান ছিল, আজ কালকের মত মুদ্রন শিল্পের সমাহার না থাকায় হাতে লেখা দেয়াল পত্রিকা সারথী নূতন লিখিয়েদের মাঝে দারুন সাড়া জাগিয়ে ছিল। তখন হলে হলে ছাত্রে-ছাত্রে-সৌহার্দ্য ও সম্প্রিতি ছিল যদিও ছাত্রলীগ ও ছাত্র ইউনিয়ন দুটি তুমুল প্রতিদ্বন্ধী ছাত্র সংঘটন ছিল। তখন আমাদের শিক্ষকগণ আমাদেরকে পুত্র বৎ-মিত্রবৎ-স্নেহ মমতা করতেন। আমাদের শ্রদ্ধেয় শিক্ষা গুরুদের মধ্যে এ.এইচ. মোফাজ্জল করিম এখনও সেই মায়া ও মমতার বন্ধনে আবদ্ধ করে রেখেছেন-যদিও কর্ম্ম জীবনে তিনি উচ্চতা ও প্রাপ্তির চূড়ান্ত শিখরে আরোহন করেছেন-সি.এস.পি অফিসার হয়ে সচিব হয়েছেন-অবসর গ্রহনের পর ও হাই কমিশনার হয়েছেন। আমাদের কালের এম.সি.কলেজের আমাদের ছাত্র নেতৃবৃন্দ স্বাধীনতা সংগ্রাম জাতীয় রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন-সাংসদ, মন্ত্রী, জন প্রতিনিধি হয়ে জনসেবা করছেন-কলেজের গৌরব বৃদ্ধি করতঃ পিতা-মাতা-দেশ ও জাতির মুখ উজ্জল করেছেন-করছেন। সত্তোর দশকে দেশব্যাপী ছাত্র ইউনিয়ন বিপুল ভাবে সমর্থিত ও ছাত্র প্রিয় ছাত্র সংঘটন হলেও বঙ্গঁবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাঙ্গাঁলি জাতীয়তাবাদি আন্দোলনের জোয়ার এবং ছাত্রলীগের সাংঘটনিক শক্তির কারনে কলেজ সমূহে ছাত্র সংসদ নির্বাচনে দেশব্যাপী একশত বেয়াল্লিশটি কলেজ ছাত্র সংসদ নির্বাচনে একশত বত্রিশটি কলেজ সংসদে ছাত্রলীগ মনোনীত প্রার্থীগণ বিপুল ভোটে জয়লাভ করে ছিলেন। ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার খবরে প্রকাশ বিগত তিন বৎসর যাবত সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগের কমিটি নেই। অভ্যন্তরীন কলহ কোন্দলের কারনে নয় জন ছাত্রলীগ কর্মি প্রাণ হারিয়েছেন।
স্বাধীনতা উত্তর কালে সময়ের সাহসী সন্তান নির্ভীক ও নির্লোভ মুজিব সৈনিক মৌলভীবাজার-সিলেটের সু-সন্তান সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ বৃহত্তর সিলেটে-বাংলাদেশে রিকসা-বাস চড়ে পায়ে হেঁটে ছাত্রলীগকে সংঘটিত করেছেন, বৃহত্তর সিলেটের সে সময় কার ছাত্রলীগ তাঁরই হাতে গড়া, সাংঘটনিক দক্ষতা, সততা, কর্মি বাৎসল্য এবং বাগ্মীতার কারণে সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি, ডাকসুর ভি.পি এবং অতঃপর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংঘটনিক সম্পাদক হয়েছিলেন। তিনি প্রথম বৃহত্তর সিলেটি যিনি এমন সব গুরুত্বপূর্ণ দায়দায়িত্ব পদ পদবী লাভ করেছিলেন। তাঁর- তাঁদের সময়ে ও পদ বানিজ্য ও দূর্নীতির অভিযোগ ছিল না। পরবর্তী পর্য্যায়ে মৌলভীবাজার জেলার সুসন্তান জাকির হোসেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক হয়ে জেলা ও বিভাগের মুখ উজ্জল করেছিলেন।
অনেকের মত আমার নিজের ও এম.সি.দ কলেজ এবং ছাত্রলীগ প্রসঙ্গেঁ-প্রাসঙ্গিঁক কথা মায়া মমতা দূর্বলতা ছিল। ছাত্র মাত্রই তাঁর শিক্ষক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতি মায়া মমতা স্মৃতি প্রীতি দূর্বলতা থাকে-থেকে যায়। এম.সি.কলেজ আমার নিজের কলেজ। কলেজের ছাত্রাবস্থায় ছাত্র রাজনীতিতে জড়িত হই। বাঙ্গাঁলি জাতীয়তা বাদী আন্দোলনের প্রবক্তা ছাত্র লীগের, সদস্য হিসাবে আমার ছাত্র রাজনীতিতে প্রবেশ। সে সময় এম.সি. কলেজ সিলেটে ছাত্রলীগ এবং ছাত্র ইউনিয়ন দুটি শক্তিশালী ছাত্র সংগঠন ছিল। তখন মিজানুর রহমান শেলী সাহেবের নেতৃত্বে ছাত্র শক্তি ও একটি ছাত্র প্রিয় ছাত্র সংঘটন ছিল, তবে তা ছিল সাময়ীক। আমার সহপাটি ও বিশিষ্ট বন্ধু আখলাকুর রহমান ছাত্র শক্তি করত, সে ছাত্র শক্তির কেন্দ্রীয় সভাপতি হয়েছিল। কর্ম জীবনে বন্ধুবর আখলাক অধ্যাপনায় যোগ দিয়ে নাম করা প্রর্ফেসর, গ্রহ্ণকার বোর্ড চেয়ারম্যান হয়েছিল। আমি ষাটের দশকের মধ্যভাগে প্রথমে মৌলভীবাজার মহাবিদ্যালয় শাখা অতঃপর মহকুমা শাখা ছাত্র লীগের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলাম। সে সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন কালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং তৎকালীন ইকবাল হল শাখা ছাত্র লীগের কর্মকান্ডে জড়িত হই এবং কেন্দ্রীয় নেতাদের সংস্পর্শে যাবার সাহচর্য্য পাবার সুযোগ লাভ করি। ইকবাল হলের একশত একষট্টি নম্বর কক্ষের আবাসিক ছাত্র ছিলেন অগ্রজ প্রতিম গিয়াস উদ্দিন মনির। সেখানে আমার অস্থায়ী ঠিকানা ছিল। পরে আমাদের নেতা সিরাজুল আলম খাঁন আমাকে ছাত্র লীগের কাজের প্রয়োজনে হাজি মোহাম্মদ মহসিন হলে স্থানান্তরিত করেন। আমাদের মনির ভাই এ সময় ছাত্র লীগের কেন্দ্রীয় সমাজে সেবা সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন। কর্মজীবনে তিনি বিসিএস প্রথম ব্যাচ এ, ফরেন সার্ভিসে যোগ দিয়ে বৃটেনের হাই কমিশনার হয়েছিলেন। সংঘটন হিসাবে ছাত্র লীগ আমার এবং আমাদের অনেকের জীবনে দারুন প্রভাবকে ফেলেছিল। আমার দেখা ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় আট নেতা বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে যেকৃতিত্বপূর্ণ ভূমিকা ও বীরত্ব পূর্ণ অবদান রেখেছিলেন তা স্বাধীনতা সংগ্রামের সংগ্রামী ইতিহাসে গৌরবোজ্জল অধ্যায়। এই আট নেতা হলেন মুজিব বাহিনীর চার আঞ্চলিক অধিনায়ক সর্ব জনাব সিরাজুল আলম খাঁন, শেখ ফজলুল হক মনি, তোফায়েল আহমদ এবং আব্দুর রাজ্জাক এবং চার খর্লিফা হিসাবে খ্যাত ও পরিচিত স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ এর চার নেতা আসম আব্দুর রব, শাহ জাহান সিরাজ, নুরে আলম সিদ্দিকী এবং আব্দুল কদ্দুস মাখন। প্রথমোক্ত চার নেতা ছাত্র লীগের প্রাক্তন কেন্দ্রীয় নেতা এবং শেষোক্ত চারজন এর মধ্যে আসম আব্দুর রব ডাকসুর ভি,পি, আব্দুল কদ্দুস মাখন ডাকসুর জি,এস,এবং নুরে আলম সিদ্দিকী কেন্দ্রীয় ছাত্র লীগের সভাপত্তি এবং শাহ জাহান সিরাজ কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সেক্রেটারি ছিলেন। তাঁরা আট জনই স্বাধীনতার মহান স্থপতি বঙ্গঁবন্ধু শেখ মুজিবের খুবই বিশ্বস্থ ও স্নেহভাজন ছিলেন। আমি খুবই সৌভাগ্যবান ছাত্র লীগ এর কর্মকান্ডের কারনে এই আট নেতার সঙ্গেঁ আমার পরিচয়, সম্পর্ক ও সখ্যতা ছিল, এখন ও আছে। পাঁচ দশক পূর্বে ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন অনল বর্ষীবক্তা-কলম সৈনিক নূরে আলম সিদ্দিকী। এই পরিনত বয়সে ও ছাত্র লীগের ভালোবাসাকে বুকে ধারন করে ছাত্রলীগ ফাউন্ডেশন নিয়ে কাজ করছেন। ছাত্রলীগের মোহ ও মায়ার সঙ্গেঁ জড়িয়ে আছেন।
অথছ ইতিহাস স্বাক্ষী ছাত্রলীগের সংগ্রামী ইতিহাস বাংলা ও বাঙ্গাঁলির ইতিহাস। ছাত্রলীগ এবং বাংলাকে আলাদা করার অবকাশ নেই। শিশু রাষ্ট্র পাকিস্তানের জন্মের পরের বৎসরই আট চল্লিশ সালে বাঙ্গাঁলির ভাষা সংস্কৃতি ও ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্টার প্রত্যয়ে ছাত্র লীগের জন্ম। পাকিস্তান অতঃপর ছাত্রীগের জন্মের পর থেকে প্রতিটি আন্দোলনে সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছে ছাত্র লীগ। ছাত্র সমাজ জাতির জাগ্রত বিবেক, প্রচন্ড প্রাণ শক্তির অধিকারী। ফলতঃ পাকিস্তানের পঁচিশ বৎসর বাঙ্গাঁলির ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্টার লড়াইয়ে ছাত্রলীগের দেশ প্রেমিক নির্লোভ-নির্ভীক কর্মি বাহিনী ছিলেন সোচ্চার। পাকিস্তানী প্রতিক্রিয়াশীল গণধিকৃত শাসক গোষ্ঠী পাকিস্তানে গণতন্ত্রের চর্চা এবং প্রগতিশীল রাজনীতির বিকাশে বরাবর বাঁধার সৃষ্টি করেছে। এবডো, প্রডো, ডি,পি, আর, জাতীয় কালা কানুন জারী করে গণ রাজনীতির গতি পথ রূদ্ধ করে রেখেছে। বাঙ্গাঁলি জাতীয়তা বাদী আন্দোলনের জনক ও আপোষহীন নেতা বঙ্গঁ শার্দুল শেখ মুজিবুর রহমান মামলা মোকদ্দমা জেল ঝুলুম উপেক্ষা করে জাতীয়তা বাদী আন্দোলনকে সংঘটিত করেছেন। আন্দোলন-সংগ্রামে ছাত্রলীগের হাজার হাজার ত্যাগী কর্মি বাহিনী এবং পরিক্ষিত-মেধাবী নেতাদের মুখ্য ভূমিকা ছিল। বায়ান্নের ভাষা আন্দোলন, বাষট্টির কুখ্যাত হামদুর রহমান শিক্ষা কমিশন রিপোর্ট বাতিলের ছাত্র আন্দোলন, ছয়ষট্টি সালে বঙ্গঁবন্ধু শেখ মুজিবের প্রাদেশিক স্বায়ত্ত শাসনের দাবী সম্বলিত ঐতিহাসিক ছয় দফার আন্দোলন, উনসত্তোর সালে সর্ব দলীয় ছাত্র সমাজের এগারো দফায় আন্দোলন, সত্তোর সালের সাধারণ নির্বাচনে বঙ্গঁবন্ধুর প্রার্থীদের পক্ষে ছাত্রলীগের লক্ষ কর্মি বাহিনীর নির্বাচনী প্রচারাভিযান এবং একাত্তোরের মহান মুক্তিযুদ্ধে বেঙ্গঁল নিবারেশন ফ্রন্ট বি,এল,এফ, মুজিব বাহিনীর ঐতিহাসিক ভূমিকা, কৃতিত্বপূর্ণ অবদান ইতিহাসের অংশ গৌরবোজ্জল অধ্যায়।
অথছ দূঃখ ও দূর্ভাগ্য জনক ভাবে সাম্প্রতিক কালে ছাত্রলীগ নাম ধারী কতেক কাউয়া, কিংবা অনুপ্রবেশকারী কিংবা প্রকৃত ছাত্রলীগ কর্মি-সংঘটকের সংগঠন ও সমাজ বিরোধী অনৈতিক কার্য্য কলাপ-কুকর্ম্ম এবং কতেক কর্তা ব্যক্তিদের দায়িত্ব জ্ঞান হীনতা-আস্কারাও মৌনং সম্মতিতে ছাত্রলীগের সংগ্রামী ইতিহাসে কলংকের কালিমা লেগে গেছে। কাউয়া, অনুপ্রবেশকারী, আসল ছাত্রলীগ নয় নকল কিংবা কমিটি বাতিল-সাময়ীক বহিস্কার করলেই, বল্লেই দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না, দায়-দায়িত্ব থেকে যায়, রয়ে যায়। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং মাননীয় সড়ক মন্ত্রী, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের প্রাক্তন সভাপতি ওবায়দুল কাদের সাহেব অবশেষে একটি সঠিক ও খাঁটি কথা বলেছেন- দল যেহেতু ক্ষমতায়-সরকারে-সেহেতু দায়-দায়িত্ব এড়ানো যাবে না, নিতে হবে। ঘরের দরজা খুলা থাকলে, ঘরে মালামাল থাকলে ঘরে চুর ঢুকবে, চুরি করবে-এটা তার পেশা। হাওরে ক্ষেতের বেড়া না থাকলে কিংবা ভেঁঙ্গে গেলে ক্ষুধার্থ ও দুষ্ট গরু ছাগল ক্ষেতে ঢুকবে ফসল খাবে-এটাই তার কাজ। এখানে চোর কিংবা গরু ছাগলকে দুষারূপ করে লাভ নেই। ঘরের দরজা খুলা রাখা কিংবা ক্ষেতের জমিতে বেড়া না রাখা বুদ্ধি মানের কাজ নয়। বাংলাদেশের রাজনৈতিক দল সমূহের মধ্যে জামাতে ইসলামি এবং বাংলাদেশের কমিউনিষ্ট পার্টি-সিপিবি ও বাম ঘরানার ক্লাসিক্যাল পার্টি-সমূহে ইচ্ছা করলেই যে কেউ সদস্যপদ পাবেন না-একটি প্রচলিত প্রথা ও পদ্ধতি অনুসরন করতে হয়-মানতে হয়। সদস্য পদ প্রাপ্তিতেই যেখানে বাঁধা বিপত্তি সেখানে পদ পদবী প্রাপ্তি, দলীয় কর্মকর্তা হওয়া সহজ নয়- “দুর হ্যায় সুখকা গাঁও”। বুর্জোয়া কিংবা পেটি বুর্জোয়া-মাল্টিক্লাশ পলিটিক্যাল পার্টি-কথিত বড়দল সমূহে- যেহেতু সম্মেলন, কাউন্সিল অধিবেশন, নির্বাচন, অভ্যন্তরীন গণতন্ত্র, সাংবিধানিক বিধি বিধানের বালাই নেই, সেখানে সুজন, সুশীল সমাজ, মিডিয়া মারফত উত্থাপিত অভিযোগ-“পদ বানিজ্যের”-বিষয়টি ফেলনা নয়। ভাব বার বিষয়। ভোটের সময় এলে অভিযোগ উঠে সিট বানিজ্যের। কতেক পুঁজিপতি, শিল্পপতি নিজেদেরকে জাতির ভগ্নিপতি ভেবে দলের ত্যাগীবিত্ত-বেসাতহীন নেতাদের সঙ্গেঁ শালা সুলভ আচরন করে কথিত ডনেশনের নামে মনোনয়নটি বাগিয়ে নেন। সুজন, সুশীল সমাজ এনজিও, মিডিয়া যার নাম দিয়েছেন “সিট বানিজ্য”। এর নামই রাজনৈতিক বানিজ্যায়ন ও দূবৃত্তায়ন। এসব বন্ধ না করলে সুস্থ রাজনীতির বিকাশ হবে না। রাজনৈতিক দূর্বৃত্তদের দৌরাত্ব দিন দিন বেড়ে যাবে- যা সুস্থ সমাজ, দেশ ও জাতির জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। ইলেক্টনিক মিডিয়ার কল্যানে দেখা ও জানা গেল ঐহিত্যবাহী এম,সি,কলেজের প্রিন্সিপাল প্রফেসর সালেহ আহমদ সাহেব খুব চাপে আছেন। টিভির বিজ্ঞাপন অনেকটাই বিরক্তিকর হলেও মরহুম চিত্রনায়ক জাদরেল অভিনেতা জসিম এর একটি পাইপের বিজ্ঞাপন আমার খুবই ভালো লাগে- প্রাণ ছোঁয়ে যায়। আকর্ষনীয় পর চুলা পরিহিত-জাত শিল্পী জসিম, নাকি জসিমের মত অন্য কেউ হলেও হতে পারেন। পাঁচ দশক হল মেকআপ সহ মঞ্চে উঠি না, চার দশক হল সিনেমা হলে যাই না। “এত চাপ আমি কি করে সহ্য করব”। এত চাপ ক্লোজ শটে মডেলের আবেগ ও প্রাণবন্ত অভিনয় দারুন লাগে। কিন্তু এম.সি. কলেজের প্রিন্সিপাল প্রফেসর সালেহ আহমদ চাপে আছেন এমন দায়িত্ব জ্ঞান হীন উক্তি তাঁর অসহায়ত্ব ও ব্যর্থতার পরিচয় বহন করে। কিসের চাপ কাদের চাপ, কেন চাপ তা অধ্যক্ষ মহোদয় ব্যক্ত করেন নি। তাঁর এই অসহায় ও দায়িত্ব জ্ঞানহীন উক্তিতে দেশের উর্ধ্ব আদালত অসন্তোস প্রকাশ করেছেন। পূন্যভূমি সিলেট এখন বিভাগীয় সদর। সেকাল থেকে এ কাল পর্য্যন্ত সিলেটের রাজনৈতিক নেতৃত্ব প্রজ্ঞাবান। শিক্ষিত। সম্ভান্ত। স্বজ্জন। উচ্চ নৈতিকতার অধিকারি। মরহুম মাননীয় স্পীকার হুমায়ূন রশীদ চৌধুরী, মরহুম অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী এম.সাইফুর রহমান, সাবেক অর্থমন্ত্রী এ.এম.এ. মুহিত বর্তমান পররাষ্ট মন্ত্রী ডক্টর এ.কে.মুমেন, মরহুম সাংসদ খন্দকার মালেক সিলেট সদরের জন প্রতিনিধিত্ব-মন্ত্রীত্ব করেছেন-করছেন, সিলেটের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও অত্যন্ত দায়িত্ববান এবং বরাবর সন্ত্রাস-ধর্ষন-বিরোধী-এরা কেউই ধর্ষকদের পৃষ্ট পোষক-সমর্থক-শুভাকাংখী নহেন। স্থানীয় কাউন্সিলার এবং নির্ভীক মুজিব সৈনিক আজাদুর রহমান আজাদ সাহেব সম্প্রতি দেশের প্রাচীনতম দৈনিক যুগভেরীতে একটি দীর্ঘ সাক্ষাতকারে বহুবিধ মূল্যবান কথা ও অভিমত ব্যক্ত করেছেন। যুগভেরীর নির্বাহী সম্পাদক অপূর্ব শর্মার এই এই মহৎ কর্মটি অপূর্ব ও সময় উপযোগী। রাজনীতিবিদ আজাদুর রহমান আজাদ পরিষ্কার ও দের্থহীন ভাষায় বলেছেন তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতিতে গ্রুপিং করেন না, তাঁর কোন গ্রুপ-কেডার বাহিনী নেই, তিনি বঙ্গঁবন্ধু ও জননেত্রী শেখ হাসিনার রাজনীতি ও দল করেন, ধর্ষন-সন্ত্রাস-চাঁদাবাজির ঘোর বিরোধী তিনি। সরকার দলীয় কোন পর্য্যায়ের কোন নেতাই যেখানে এসব ধর্ষক-অপরাধীগণকে পৃষ্ট পোষকতা করেন না, আশ্রয় প্রশ্রয় দেন না, সেখানে এম.সি.কলেজের প্রিন্সিপাল মহোদয় চাপ এবং ভীতির মধ্যে থাকবেন তাত বিশ্বাস যোগ্য হতে পারে না। প্রভাব খাটান প্রভাবশালী লোকজন-ক্ষমতাসীন-ক্ষমতাবান ব্যক্তিবর্গ। রাস্তার টোকাই, দাগ খতিয়ানহীন কটাই-মজর-যদু-মধুর ভয়ে চাপে যদি দায়িত্ব পালনে অধ্যক্ষ মহোদয় অসহায় বোধ করেন তাহলে তাঁর সে দায়িত্বে থাকার নৈতিক অধিকার নেই। ইংরেজীতে একটি কথা আছে-“একাওয়ার্ড ডাইজ মেনি টাইমস্ বিফউর হিজ ডেথ”। এম.সি.কলেজের প্রিন্সিপাল কাওয়ার্ড-কাপূরুষ-তা আমরা মেনে নিতে পারি না। বাংলায় আছে “ভয়ে কাঁপে কাপূরুষ, লড়ে যায় বীর”। আমরা বিশ্বাস করি-দাবী জানাই এম.সি. কলেজের প্রিন্সিপাল সত্য ও ন্যায় এর জন্য বীরের মত লড়ে যাবেন।
অধ্যক্ষ সালেহ আহমদ সাহেব এর স্মরণ রাখা উচিত ষাটের দশকে এই চেয়ারে বসতেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ-দক্ষ অধ্যক্ষ-সিলেটের সু-সন্তান প্রিন্সিপাল ছলমান চৌধুরী সাহেব। তখন এই কলেজ ছাত্র রাজনীতির প্রাণ কেন্দ্র। তৎকালীন ডাক সাইটে ছাত্র নেতৃবৃন্দের মধ্যে দেওয়ান নুরুল হোসেন চঞ্চল, গুলজার আহমদ, নুরুল ইসলাম নাহিদ, আখতার আহমদ, শাহ আজিজুর রহমান, মোঃ লুৎফুর রহমান, আশরাফ আলী, প্রমুখের আসা যাওয়া-আনা গুনা-লেখাপড়া ছিল এই কলেজে। আয়ূবী স্বৈর শাসন বিরোধী সভা সমাবেশ মিটিং মিছিলে সরগরম থাকত এই কলেজ ক্যেম্পাস, কিন্তু কোন সন্ত্রাস, সংঘর্ষ, নৈরাজ্য ও অনৈতিক কর্মকান্ড ছিল না। দুর্দন্ড প্রতাপশালী প্রিন্সিপাল ছলমান চৌধুরী যখন প্রিন্সিপাল টিলায় তাঁর অফিস থেকে বেরিয়ে কোমরে দুই হাত দিয়ে দাঁড়াতেন, রক্ত চক্ষুতে তাকাতেন তখন কলেজ পিন্ড অব সাইলেন্স-পীন পতন নীরবতা বিরাজ করত। এ দৃশ্য আমাদের দেখা। এই ছিল আমাদের কালের আমাদের প্রিয় এম.সি.কলেজ।
খবরে আরো প্রকাশ-অনু সন্ধানেও জানা গেল ধর্ষক-বদমায়েশ-বজ্জাতের দল এম.সি.কলেজের নিয়মিত ছাত্র নয়, তারা হোষ্টেল ও হল সুপার এর কামরা-কক্ষ দখল করে অবৈধ ভাবে বসবাস করছিল। এটিও একটি গর্হিত অপরাধ বটে। এ ব্যাপারে হল হোষ্টেল সুপার সাহেবকে দায়িত্ব নিতে হবে, তিনি নিজে এই বে-আইনী কাজ করে ছাত্রদেরকে প্রশ্রয় দিয়েছেন। দন্ডবিধির ১৩৪/১০৯ ধারা মোতাবেক হোষ্টেল সুপার সাহেব অপরাধি। তদন্তকারী কমিটি-আইন শৃংঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনী তদন্ত করে সকল অপরাধি, তাদের সহযোগি, গড ফাদারগণকে আইনের আওতায় আনবেন জেলা ও দেশ বাসি তাই প্রত্যাশা করেন।
এম.সি.কলেজ সিলেটের ধর্ষন মামলায় আইন শৃংঙ্খলা রক্ষা কারি বাহিনীর ভূমিকা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। তড়িৎ গতিতে এজহার নামীয় প্রায় সকল বিবাদীগণকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। অতীব প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করেছেন ঐতিহ্যবাহী সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতিও । সিলেটের কোন বিজ্ঞ আইনজীবী ফি-এর বিনিময়ে ধর্ষকদের পক্ষাবলম্বন করেন নি-ঘৃনার সাথে বিবাদীগণের প্রস্তাব প্রত্যাখান করেছেন। পত্রিকান্তরে এ সংবাদ জেনে সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সম্মানিত সভাপতি, বিশিষ্ট আইনজীবী এডভোকেট এ.টি.এম. ফয়েজ উদ্দিন প্রিয় বরেষুকে ফোন মারফত আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়েছি। কতেক বিবাদী ফৌ: কা: বি: আইনের ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দিয়েছে। ক্যেপিটাল পানিসমেন্ট এর মামলায় জেলা জজ সাহেব বিবাদী পক্ষকে ষ্টেইট ডিফেন্স-সিষ্টেমে আইনজীবী নিয়োগ দিতে পারেন-তবে এই পদ্ধতিটি বিচার প্রার্থী দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য। অর্থাভাবে কোন বিচার প্রার্থী যাতে আইনজীবী ও ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত না হয় সেই জন্য এই ষ্টেইট ডিফেন্স সিষ্টেম। এই প্রথায় বিজ্ঞ আইনজীবীগণকে সরকারি কোষাগার থেকে ফি- প্রদান করা হয়- যদিও সেই অর্থের পরিমান খুবই কম। আমি নিজে একজন ষ্টেইট ডিফেন্স ল’ ইয়ার, আমার জেলার প্রাক্তন পাবলিক প্রসিকিউটার-তবে আমি কোষাগার কিংবা বিচার প্রার্থীদের কাছ থেকে কোন ফি গ্রহণ করি না- শেষ বয়সে বিনা ফি’তে আমি আমার রাষ্ট্রকে এই সামান্য সেবা দিয়ে থাকি। ষ্টেইট ডিফেন্স এর প্যানেল অব ল-ইয়ার্স-এ-সিনিয়র ল’ ইয়ার ও আছেন-মর্মে আমার এই থাকা। তাছাড়া এই বিবাদীগণ দরিদ্র নহেন বিধায় ষ্টেট ডিফেন্স এর আইনজীবীও পাবেন না, পাওয়া উচিত নয়, তবে তারা নিজেরাও তাঁদের মামলা পরিচালনা করতে পারেন-এতে আইনে কোন বিধি নিষেধ নাই। সম্প্রতি দেশ ব্যাপী দাবী উঠেছে-ধর্ষকদের ফাসি চাই। বিদ্যমান আইনে ধর্ষনের শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদন্ড-মৃত্যো দন্ড নয়। ধর্ষকের মৃত্যোদন্ডের বিধানের সঙ্গেঁ তাঁর যাবতীয় সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে ধর্ষিতার অনুকূলে প্রদানের বিধান রাখা যেতে পারে। আইনটি সংশোধিত হয়েছে, মৃত্যোদন্ডের বিধান রাখা হয়েছে। তবে শুধু আইন করলেই হবে না ন্যায় বিচার ও নিশ্চিত করতে হবে। প্রভাবশালী-পয়সা ওয়ালা ধর্ষক গুন্ডাপান্ডা অর্থ কড়ির জোরে দরিদ্র স্বাক্ষী এবং ঘুষ খোর-সাইলেন্স ফি খেকো কতেক অসৎ পাবলিক প্রশিকিউটার-পি.পি.গণকে বশীভূত করে আইনের ফাঁক ফো করে পার পেয়ে যায়, বেরিয়ে যায়। এ ক্ষেত্রে দলীয় বিবেচনায় নিয়োগ না করে এটর্নি সার্ভিসের মাধ্যমে যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগ দিলে ন্যায় বিচার নিশ্চিত করা যেতে পারে। এ ব্যাপারে ইতিপূর্বে সরকারি উদ্যোগ গ্রহণ করা হলেও এখন তা স্থিমিত হয়ে গেছে। পি.পি. সাহেবানগণ কোন বেতন, বাড়ি ভাড়া, টি,এ,ডি,এ, পান না। দৈনিক দেড়শত টাকা থেকে আড়াইশত টাকা, মাসিক বাজে খরছ বাবত এক হাজার টাকা পান তা সম্মান জনক নয়। একজন আইন কর্মকর্তা মাসিক দশ হাজার টাকাও পান না, যা কষ্টকর, দূঃখ জনক। ফলতঃ দূর্নীতিবাজ বিত্তবানগণ টাকার দাপটে বিচারাঙ্গঁনকে কলুসিত করেন। এ ব্যাপারেও সরকারের এখনই ভেবে দেখার সময়। আইন সংশোধনের সঙ্গেঁ সঙ্গেঁ ধর্ষনের মামলা সমূহ বিশেষ জাজের মাধ্যমে দ্রুত বিচার আদালতে বিচার এর ব্যবস্থা করা উচিত। আমাদেরকে মনে রাখতে হবে-জাষ্টিস ডিলে, জাষ্টিস-ডিনাইড এর নামান্তর। মনে রাখতে হবে একজন দরিদ্র নারীর ইজ্জত রাজ সিংহাসন ও রাজকীয় ধন দৌলতের চেয়েও অধিক। কারণ একজন নারীর ইজ্জত লুন্ঠিত হলে আর ফিরে পাওয়া যাবে না, দুনিয়ার দৌলত দিয়েও তাঁর মূল্যায়ন করা যাবে না, কিন্তু রাজ্য-রাজ সিংহাসন রাজকীয় ধন দৌলত-চলে গেলে- লুন্ঠিত হলে আবার ফিরেও পাওয়া যায়। মানব ইতিহাসে এমন নজির আছে।
পল্লী প্রধান বাংলাদেশের পল্লী গ্রামে শীত কাল-শুস্ক মৌসুমে গরু মহিষকে হাওরে-“বাথানে”-পাঠানো হয়। বাথানে “পালান” খেয়ে গরু মহিষ অসম্ভব রকমের মোটাতাজা হয়। এসব মোটা তাজা ষাঢ় এবং বয়রা (পূরুষ মহিষ) কে বাগে আনা নিয়ন্ত্রনে রাখা খুব কঠিন হয়ে যায়, তাদের জৈবিক ক্ষুধা বৃদ্ধি পায় মারাত্মক ভাবে। গাভী এবং বয়রি (স্ত্রী মহিষ) দেখলে এসব ষাঢ় ও বয়রা দৈহিক মিলনের জন্য উন্মদ ও হয়ে যায়। তখন ষাঢ়-বয়রাকে বেঁধে রাখার জন্য-নাকা-দিতে হয়। কারণ গলাও পায়ে বাঁধা নাইলনের বৃহদাকৃতির রশি ষাঢ় ও বয়রা ছিড়ে ফেলে। এসব কাম উত্তেজিত পশুকে বশে আনতে তখন তাঁদের নাসারন্দ্রে ফুক্কা করে-নাকা বাঁধতে হয়। এই নাকে বাঁধার নামই-নাকা-প্রথা। নাক ও নাসারন্দ্র দূর্বলও নাজুক বলে রশিতে আর টানাটানি করা যায় না, কারণ পশুর নিজের নাকে ব্যথা লাগে। নাকা-বাঁধা পশু তখন রাগে-গোম্বায়-ঘোত ঘোত ও হাম্বা হাম্বা রব করতে থাকে।
আদমে আওলাদ-মানুষ সৃষ্টির শ্রেষ্ট জীব। আশরাফুল মকলুখাত। সনাতনী শাস্ত্রানুসারে নররুপী নারায়ন। মানুষের মেধা ও মনন, প্রজ্ঞা ও পান্ডিত্য, শিক্ষা ও জ্ঞান, সর্ব্বোপরি মানুষের মনুষত্ব, মানুষকে এই শ্রেষ্টত্বের মর্য্যাদা দিয়েছে। ধর্ষক তারেক, রনি, অর্জুন, রবিউল, মাহফুজুর রহমানের কারণে মানুষের এই মর্য্যাদা ম্লান হতে পারে না ম্লান হতে দেয়া যায় না। তাই আমাদের অস্থিত্ব-মনুষত্ব-মানমর্যাদা-ইতিহাস-ঐতিহ্য রক্ষার প্রয়োজনে এসব বে-আদব, বেদতমিজ, বদমায়েশ, ধর্ষকদের-নাকা-দেয়ার এখনই সময়। কারণ আমাদের অনেক সময় নষ্ট হয়ে গেছে। আর নষ্ট করার মত সময় আমাদের হাতে নেই।
[ষাটের দশকে এম.সি.কলেজের ছাত্র। মুক্তিযোদ্ধা। সিনিয়র এডভোকেট হাইকোর্ট। সাবেক সভাপতি মৌলভীবাজার প্রেসক্লাব।]

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com