কমলগঞ্জে বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন, জনগণ কোন জালিম সরকারকে আর ক্ষমতায় দেখতে চায়না, ডা: শফিকুর রহমান
প্রনীত রঞ্জন দেবনাথ : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, বাংলাদেশের জনগণ কোন জালিম সরকারকে আর ক্ষমতায় দেখতে চায়না, কোন জালিম সরকার যেন আর ফিরে না আসে। অনেক রক্ত ও ত্যাগের বিনিময়ে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমিতে একটা পরিবর্তন হয়েছে, যারা শাহাদাত বরণ করেছেন আল্লাহ তাদেরকে কবুল করুন। বিগত স্বৈরাচার সরকারের আমলে প্রধান টার্গেট ছিলো জামায়াতে ইসলামী। জামায়াতের অনেক নেতাকর্মী গুম খুনের স্বীকার হন। প্রত্যেক বছর নদী শাসনের জন্য বাজেট বরাদ্দ হয়। কিন্তু এটাকে সুষ্ঠুভাবে কাজ না লাগিয়ে লুটপাট করা হয়। লুটপাটের কুফল যন্ত্রণা জনগণকে ভোগ করতে হচ্ছে। এখন তারা পালাতে গিয়ে বস্তা নিয়ে পালায়।
শনিবার, ২৪ আগস্ট বিকালে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শনে এসে ভানুগাছ বাজারে উপজেলা জামায়াত আয়োজিত এক বিরাট পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
পথসভায় তিনি আরও বলেন, ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে এদেশ জালিম মুক্ত হয়েছে। সেনাবাহিনীর কমর ভেঙ্গে দিতে বিডিআর বিদ্রোহের ষড়যন্ত্র করে দেশ প্রেমিক ৫৭ জন সেনা অফিসারকে হত্যা করে শেখ হাসিনা। বিডিআর এর নাম, লগো পরিবর্তন করে সীমান্তের চৌকিদার বাহিনীতে পরিনত করা হয়। তিনি ছাত্র-জনতাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, সবাইকে সজাগ থাকতে হবে, কারো পাঁতা ফাঁদে পা দেওয়া যাবেনা। এ দেশে সংখ্যালঘু, সংখ্যাগুরু বলতে কিছুই নেই, বাংলাদেশ সবার। কমলগঞ্জ উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মাসুক মিয়ার সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি এডভোকেট মো: কামরুল ইসলামের সঞ্চালনায় পথসভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় কমিটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এড. এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, সিলেট মহানগর জামায়াতের আমির এড. ফখরুল ইসলাম, সিলেট মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি মোঃ শাহজাহান আলী, মৌলভীবাজার জেলা জামায়াতের আমির ইঞ্জিনিয়ার শাহেদ আলী, জেলা নায়েবে আমির আব্দুর রহমান, ঢাকা পল্টন থানা জামায়াতের আমির শাহীন আহমেদ খাঁন, মৌলভীবাজার জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি ইয়ামির আলী প্রমুখ।
পথসভা শেষে কমলগঞ্জ উপজেলা জামায়াতের আয়োজনে বন্যাদুর্গত মানুষের মাঝে খাদ্যা সামগ্রী বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন ডা. শফিকুর রহমান।
পথসভায় জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান আরো বলেন, বিগত সাড়ে ১৭ বছর জাতির ঘাড়ে বোঝা চাপিয়ে রাখা হয়েছিল। প্রথম দুই বছর আওয়ামী লীগের আন্দোলনের ফসল মঈন-ফখরুদ্দিন সরকার, তারপরের ১৫ বছর সরাসরি তারা নিজে। এই সাড়ে ১৫ বছরে জাতির কোমর ভেঙে দেওয়া হয়েছে। আওয়ামীলীগ যে জঘন্য কাজ করেছে, আপনার তা করবেন না। কারো বাড়ি ঘর সম্পদ নষ্ট করবেন না। এক জালেম সরকার বিদায় হয়েছে, আরেক জালেম যাতে ক্ষমতায় আসতে না পারে। সেদিকে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। তিনি আরও বলেন, আপনারা বললেন বাংলাদেশকে উন্নয়নের রাজপথে তুলে এনেছেন, কানাডা ও সিঙ্গাপুর বানিয়েছেন। আমাদের ইতিহাসজ্ঞানে তো কখনো দেখি নাই, কানাডা ও সিঙ্গাপুর বানিয়ে এইভাবে কোন শাসক ও দোসরদের দেশ ছেড়ে পালিয়ে বেড়াতে হয়। আপনারা পালাবেন কেন। আমাদের নেতৃবৃন্দকে আপনার হত্যা করেছেন আমাদের কোন নেতা দেশ ছেড়ে পালাননি। এটি আমাদের বাবা দাদাদের দেশ। আমাদের কোন খালা-মাসি-দাদার দেশ নয়। বাংলাদেশ আমাদের জন্ম-মৃত্যুর চিরস্থায়ী ঠিকানা।
মন্তব্য করুন