কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন : ভোটের দিনেও ছুটি নেই চা শ্রমিকদের!
প্রনীত রঞ্জন দেবনাথ॥ কমলগঞ্জ উপজেলায় বুধবার ২৯ মে ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয়ধাপে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও এবার বাগানে নেই সাধারণ ছুটি। ফলে চা বাগানের চা শ্রমিক ভোটাররা পড়েছেন বিপাকে।
জানা যায়, কমলগঞ্জ উপজেলার ২২টি চা বাগানের প্রায় ৪০ হাজার ভোটার রয়েছেন। বুধবার চা-শ্রমিকরা নিজেদের নির্ধারিত ছুটি থেকে ভোটের দিন ছুটি নিতে পারবেন বলে চা বাগান ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানান। ফলে চা শ্রমিক ভোটারদের জন্য সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে বলে চা শ্রমিক নেতারা জানান।
উপজেলা পরিষদের সাধারণ নির্বাচন উপলক্ষে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটি চা বাগানে কার্যকর করার দাবীতে গত রোববার চা শ্রমিকদের পক্ষ থেকে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী রিটার্ণিং অফিসারের লিখিত আবেদন জানানো হয়েছে। আবেদনে উপজেলা নির্বাচন উপলক্ষে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটি যদি উপজেলার সকল প্রতিষ্ঠানের জন্য প্রযোজ্য হয়, তাহলে চা শ্রমিকরা যেন এই সাধারণ ছুটি থেকে বঞ্চিত না হয়, সেই ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানানো হয়। লিখিত আবেদনের অনুলিপি মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক, রিটার্ণিং অফিসারসহ বিভিন্ন দপ্তরে প্রেরণ করা হয়।
লিখিত আবেদনে চা শ্রমিক নেতৃবৃন্দ জানান, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কর্তৃক ভোট গ্রহণের দিন ২৯ মে বুধবার সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকায় সাধারণ ছুটি ঘোষনা করা হয়েছে। কিন্তু কমলগঞ্জের চা বাগান ব্যবস্থাপক এই ছুটি দিতে সম্মত হয়েছেন এমন সংবাদ আমাদের কাছে নেই। বাগান কর্তৃপক্ষের কেউ বলছেন উপজেলার অন্য বাগান দিলে আমরাও দিব। কেউ বলছেন আমাদের পাওনা ছুটি হতে ছুটি নিয়ে নিতে, কেউ বলছেন বুধবারে ছুটি দিলে সাপ্তাহিক ছুটির দিন রোববারে কাজ করে দিতে হবে।
আলীনগর চা বাগানের চা ছাত্র যুব পরিষদের নেতা সজল কৈরী বলেন, এতদিন যতগুলো নির্বাচন হয়েছে সবগুলো নির্বাচনে চা বাগানে ছিল সাধারণ ছুটি। ফলে ছুটির মধ্যে থেকে উৎসবমুখর পরিবেশে চা শ্রমিক ভোটাররা কেন্দ্রে গিয়ে নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়েছেন। আর এবার কাজের চাপ আর ভোটের চিন্তা দুটি মাথায় থাকলে চা শ্রমিকদের ভোটকেন্দ্রে উপস্থিতি কম হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের মনু-ধলই ভ্যালির (আঞ্চলিক) কার্যকরী কমিটির সাধারণ সম্পাদক নির্মল দাশ পাইনকা বলেন, এ অবস্থায় চা শ্রমিক ভোটাররা চিন্তায় পড়ে গেছেন। তারা যদি আনলিভ নেন তা হলে পরের সাপ্তাহিক ছুটির দিন কাজ করতে হবে। এটি নির্বাচনে কিছুটা হলেও প্রভাব ফেলতে পারে।
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের উপদেষ্টা ও কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান রামভজন কৈরী বলেন, কমলগঞ্জে ২২টি চা বাগানে প্রায় ৪০ হাজার ভোটার রয়েছে। সাধারণ ছুটি না হলে সব চা শ্রমিক নিজেদের নির্ধারিত ছুটি থেকে একদিনের ছুটি নিয়ে ভোট দেবেন কিনা তা নিয়ে তারা চিন্তিত। তারা আনলিভ নিলে আবার পরে কাজ করে তা পুষিয়ে দিতে হবে। এতে কিছুটা হলেও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রভাব ফেলতে পারে।
আলীনগর চা বাগান ব্যবস্থাপক হাবিব আহমেদ চৌধুরী বলেন, ভোটের দিন চা শ্রমিকরা একদিনের আনলিভ নিয়ে ভোট দিতে পারবেন।
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী রিটাণির্ং অফিসার জয়নাল আবেদীন বলেন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চা বাগানও বন্ধ থাকবে। চা বাগানে তারা তাদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ভোটের দিন ছুটি দিয়েছে। পরে তারা অন্যভাবে কভার করবে।
মন্তব্য করুন