খুচরা কয়েনের পরিবর্তে চকলেট ও টোকেনের ছড়াছড়ি কমলগঞ্জে কয়েন টাকা নিয়ে ভোগান্তিতে গ্রাহক ও ব্যবসায়ীরা
কমলগঞ্জ প্রতিনিধি॥ কয়েন টাকা নিয়ে চরম ভোগান্তিতে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ ও কুলাউড়া উপজেলার গ্রাহক ও ব্যবসায়ীরা। খাবার হোটেল ও পেট্রোলের দোকান সমুহে খুচরা কয়েনের পরিবর্তে গ্রাহকদের হাতে ধরিয়ে দেয়া হচ্ছে চকলেট কিংবা কাগুজে টোকেন। অধিকাংশ সময়ে ব্যাংক বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে কয়েন টাকা গ্রহন না করায় এই ভোগান্তির সৃষ্টি হচ্ছে।
গ্রাহক ও ব্যবসায়ীরা জানান, সম্প্রতি সময়ে কমলগঞ্জ ও কুলাউড়া উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে খুচরা কয়েন নিয়ে দেখা দিয়েছে চরম ভোগান্তি। গ্রাহকদের কাছে কয়েন দেয়া হলে গ্রাহকরা সেটি গ্রহন করতে রাজি হচ্ছেন না। ব্যাংকে নিয়ে গেলেও বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে ব্যাংক কয়েন নিচ্ছে না। অপরদিকে খাবার হোটেলে গেলে বিল দেয়ার সময় ফেরত টাকা দিতে হোটেল ম্যানেজার খুচরা দুই টাকা, এক টাকা কয়েনের পরিবর্তে চকলেট কিংবা কাগুজে টোকেন ধরিয়ে দিচ্ছেন। একই অবস্থা ঘটছে বিভিন্ন পেট্রোলের দোকান সমুহে। খুচরা কয়েনের পরিবর্তে চকলেট দেয়া হচ্ছে। ফলে গ্রাহক ও ব্যবসায়ীদের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।
কমলগঞ্জের শমশেরনগর বাজারের ব্যবসায়ী সাইদুল ইসলাম, হারিছ মিয়া বলেন, ব্যাংক ও বিভিন্ন কোম্পানীর বিক্রয় প্রতিনিধিরা খুচরা কয়েন গ্রহন করেন না। ব্যাংকে খুচরা কয়েন নিয়ে গেলে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে খুচরা কয়েন রাখছে না। বিভিন্ন কোম্পানীর বিক্রয় প্রতিনিধিরা বলেন, ব্যাংক টাকা নিচ্ছে না তাই খুচরা কয়েন নিয়ে ঝামেলায় পড়তে চান না। অলটাইম ফুড কোম্পানীর কমলগঞ্জের বিক্রয় প্রতিনিধি জিতেন্দ্র মল্লিক বলেন, ব্যাংক খুচরা টাকা না নেওয়ার কারনে আমরাও খুচরা টাকা নিতে পারছি না। যে কারনে ব্যবসায়ীদের সাথে বিভিন্ন সময়ে বাক-বিতন্ডার সৃষ্টি হয়। অপরদিকে খাবার হোটেল ও পেট্রোল দোকান সমুহ খুচরা কয়েনের পরিবর্তে গ্রাহকদের কাছে চকলেট কিংবা কাগুজে টোকেন ধরিয়ে দিচ্ছে। মুন্সিবাজারের কিষোয়ান কোম্পানীর ডিলার শৈলেন্দ্র কুমার দাস বলেন, মার্কেট থেকে খুচরা কয়েন আসে, তবে এগুলো নিয়ে বেশ বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। তিনি বলেন, গ্রাহকরা এখন ২ ও ১ টাকার খুচরা কয়েন নিতে চান না।
শমশেরনগর বাজারের ক্রেতা দেলোয়ার হোসেন, আলমগীর হোসেন বলেন, খুচরা ২ টাকা ও ৫ টাকার কয়েন দেয়া হলে অনেক সময় ব্যবসায়ীরাও নিতে রাজি হননি। ফলে ব্যবসায়ীদের সাথে বাক বিতন্ডার সৃষ্টি হয়। কুলাউড়া উপজেলার পীরেরবাজারের ব্যবসায়ী আহমদ আলী, সুলতান আহমদ ও রাজা মিয়া বলেন, গ্রাহক, ব্যবসায়ী আর ব্যাংকের টানা হেচড়ার কারনে আমাদের কাছে অনেক কয়েন টাকা জমা রয়েছে। খুচরা কয়েন টাকা নিয়ে আমরা বিপাকে। আব্দুর রাজ্জাক, শেখ কালা, জিতু মিয়া, পাপপু আহমেদ বলেন, গ্রাহকদের কয়েন টাকা দিলে গ্রাহকরাও সেটি নিতে চান না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভানুগাছ শাখা জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপক ও কমলগঞ্জ ব্যাংক এসোসিয়েশন এর সভাপতি মো. সালাহউদ্দীন তাঁর ব্যাংকে খুচরা সাড়ে ৯ হাজার টাকার কথা স্বীকার করে বলেন, আমরা ব্যাংকে খুচরা কয়েন নিচ্ছি। তবে বিচ্ছিন্নভাবে খুচরা কয়েন নিয়ে আসলে কিছু সমস্যা দেখা দেয়। একসাথে একশত, দুইশত বা পাঁচশত টাকা নিয়ে আসলে কোন সমস্যা হয় না। মৌলভীবাজার পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপক মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, ব্যাংক খুচরা টাকা নিতে কোন বিধি নিষেধ নেই। সকল শাখায় খুচরা কয়েন নিতে বাধ্য।
এ ব্যাপারে কমলগঞ্জ উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো. রফিকুল আলম বলেন, বিষয়টি জানা নেই। তবে খতিয়ে দেখা হবে।
মন্তব্য করুন