জুড়ীকে বন্যা দুর্গত এলাকা ঘোষনার দাবি উপজেলা পরিষদের

জুড়ী প্রতিনিধি॥ পাহাড়ি ঢলে বাঁধ ভেঙে জুড়ী উপজেলার সাগরনাল, গোয়ালবাড়ী ও ফুলতলা ইউনিয়নের প্রায় ৫০ টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে অন্তত ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। এক হাজার বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পানিতে সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় উপজেলা সদরের সঙ্গে সাগরনাল, গোয়ালবাড়ী ও ফুলতলা ইউনিয়নের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে সিলেট বন বিভাগের অন্তর্গত জুড়ী রেঞ্জ-১ এর আওতায় ধলাই ছড়া বাঁশ মহালের ২৬ টি হান্ডর ভেঙ্গে যাওয়ায় এবং দেড় লক্ষ বাঁশ নষ্ট হওয়ায় প্রায় তিন কোটি টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হন ধলাই ছড়া বাঁশ মহালের ইজারাদাররা। এ ছাড়া ভারী বৃষ্টিতে বড়লেখা উপজেলার মাধবকুন্ড জলপ্রপাতে ভূমিধসে বিভিন্ন স্থাপনা ভেঙে গেছে। জুড়ী নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধের ২০ টি স্থান ভেঙে যাওয়ায় নতুন করে উপজেলার প্রায় ছয়শত পরিবারের বসতঘরে পানি ঢুকেছে। তাঁদের কারও বাড়িতে কোমর আবার কারও বাড়িতে বুকসমান পানি। ডুবে গেছে রাস্তাঘাট, বিস্তীর্ণ এলাকা। বন্যাকবলিত অনেকে বাড়ি ছেড়ে চা-বাগানের উঁচু টিলায় ও আশপাশের উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছে।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গুলশান আরা মিলি ও ভাইস চেয়ারম্যান কিশোর রায় চৌধুরী মনি বলেন, বন্যাকবলিত বিভিন্ন এলাকা তাঁরা সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন। দুর্গত মানুষের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। সরকারের কাছে তাদের দাবি অবিলম্বে জুড়ীকে বন্যা দুর্গত এলাকা হিসেবে ঘোষনা করা হউক।
এদিকে ভারী বর্ষণে বড়লেখা উপজেলায় অবস্থিত মাধবকুন্ড জলপ্রপাতের ভেতরে টিলার মাটি ধসে একটি পর্যটকের পুলিশচৌকি, একটি শিবমন্দির, পর্যটকদের একটি ছাউনি ও জলপ্রপাতে প্রবেশের পাকা সড়কের কিছু অংশ ভেঙে গেছে। অপরদিকে কয়েক দফা ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে বড়লেখা পৌরসভার উত্তর চৌমোহনা এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে এলাকার দুই শতাধিক দোকানে পানি উঠেছে। এ ছাড়া বড়লেখা-শাহবাজপুর সড়কের উত্তর চৌমোহনা এবং বড়লেখা ডিগ্রি কলেজ এলাকা কয়েক ফুট পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ ছোট যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। উপজেলার দক্ষিণভাগ উত্তর ইউনিয়নের কাঁঠালতলি বাজার এলাকায় অর্ধশতাধিক দোকানে পানি উঠেছে। একইভাবে পৌর এলাকার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের আদিত্বের মহল এবং বড়লেখা সদর ইউনিয়নের গঙ্গারজল এলাকাতেও জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। অন্যদিকে পৌরসভার পানিধার এলাকার ৩০টি পুকুরের মাছ পানিতে ভেসে গেছে।
মন্তব্য করুন