জুড়ী-বটুলি সড়কে বর্ধিত মেয়াদেও অর্ধেক কাজ, ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে সওজ

আব্দুর রব॥ জুড়ী উপজেলার জুড়ী-ফুলতলা-বটুলি শুল্ক স্টেশন সওজ সড়কের উন্নয়নকাজের সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বর্ধিত মেয়াদেও নির্ধারিত কাজ সম্পন্ন করতে পারেনি। দুই বছর আগে সড়কের উন্নয়ন শুরু হয়। নির্ধারিত সময় ও বর্ধিত মেয়াদে সড়কটির কাজ হয়েছে মাত্র ৫০ ভাগ। সংস্কার কাজের ধীরগতিতে এলাকাবাসী চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী শাহাব উদ্দিনও সড়কের উন্নয়ন কাজের দীর্ঘসুত্রিতায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। এদিকে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে মৌলভীবাজার সড়ক ও জনপথ বিভাগ।
জানা গেছে, জুড়ী উপজেলা সদর থেকে বটুলি শুল্ক স্টেশন পর্যন্ত ভাঙাচোরা প্রায় ২২ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটি ৭২ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রশস্থ ও মজবুতকরণের কাজ ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে শুরু হয়। ওয়াহিদ কনস্ট্রাকশন ও স্পেকট্রা ইন্টারন্যাশনাল নামক দু’টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজের দায়িত্ব পায়। পরে প্রতিষ্ঠান দু’টি সড়কের ১০ কিলোমিটার জায়গার কাজের দায়িত্ব দেয় মৌলভীবাজার জেলা পরিষদের সদস্য বড়লেখার প্রথম শ্রেণীর ঠিকাদার শহিদুল আলম শিমুলকে। গত বছরের ৩১ আগস্টের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু করোনার কারণে বেশ কয়েক মাস কাজ বন্ধ থাকে। পরে কাজের মেয়াদ ২০২১ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হয়। বর্ধিত মেয়াদেও কাজ সম্পন্নে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
ওই সড়ক দিয়ে উপজেলার জায়ফরনগর, সাগরনাল, গোয়ালবাড়ী ও ফুলতলা ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার লোকজন উপজেলা সদরে যাতায়াত করেন। এ ছাড়া আমদানি-রপ্তানির কাজে বিভিন্ন ধরনের পণ্যবাহী গাড়ি বটুলি শুল্ক স্টেশনে চলাচল করে।
সড়কের সংস্কার কাজে ধীরগতি ও ধুলার কারণে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ১০ ফেব্রুয়ারী উপজেলা সদরের ভবানীপুর এলাকায় প্রায় এক ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রাখেন। ১৩ ফেব্রুয়ারী জুড়ী উপজেলা পরিষদের একটি কর্মসূচিতে যোগ দেন পরিবেশমন্ত্রী শাহাব উদ্দিন এমপি। এ সময় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা সড়কটির কাজে ধীরগতির কারণে জনদুর্ভোগের কথা তুলে ধরেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রী বলেন, ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। সড়ক বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন। তারা ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন বলেছেন।
সড়কটির সংস্কার কাজের তদারকির দায়িত্বে থাকা সওজের উপ-সহকারী প্রকৌশলী সহদেব সূত্রধর জানান, তাদের হিসাবে বর্ধিত মেয়াদসহ সড়কে এ পর্যন্ত ৫০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাইট ইঞ্জিনিয়ার মতিউর রহমান জানান, কিছুদিন বন্ধের পর তারা পুনরায় সড়কটির কাজ শুরু করেছেন। সড়কে ২/১টি কালভার্ট নির্মাণের কাজ এখনো বাকি। মার্চের প্রথম দিকে সড়কের প্রথম ৩ কিলোমিটার জায়গায় কার্পেটিংয়ের কাজ শুরু করা যাবে। তবে ৩১ মার্চের মধ্যে পুরো কাজ সম্ভব হবে না।
সড়কের ১০ কিলোমিটার অংশের উপ-ঠিকাদার শহিদুল আলম শিমুল জানান, ফুলতলা বাজার থেকে বটুলি শুল্ক স্টেশন পর্যন্ত সড়কের প্রায় ৫ কিলোমিটার জায়গা মজবুদিকরণ করতে হবে। যা ইষ্টিমেটে ধরা নেই। এ ব্যাপারে সওজের কাছ থেকে এখনো কোনো অনুমোদন মিলেনি। তাই ওই স্থানে কাজ শুরু করানো যাচ্ছে না। বাকি পাঁচ কিলোমিটারের কাজের প্রায় ৭০ ভাগ ইতোমধ্যে সম্পন্ন করেছেন।
মৌলভীবাজার সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী জিয়া উদ্দিন জানান, দ্রুত কাজ সম্পন্নের জন্য ঠিকাদারকে বারবার তাগিদ দেয়া স্বত্ত্বেও কাজের অগ্রগতি হচ্ছে না। এ পরিস্থিতিতে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া ছাড়া কোনো উপায় দেখছেন না।
মন্তব্য করুন