টিলা কাটার অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পেলেন ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল

কুলাউড়া প্রতিনিধি : টিলা কাটার অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পেলেন কুলাউড়া উপজেলার ভাটেরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ একেএম নজরুল ইসলামসহ আরো দুই জন। ১১ এপ্রিল রোববার পরিবেশ অধিদপ্তরের সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ে শুনানীতে টিলা কাটার সাথে ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ একেএম নজরুল ইসলামের কোন সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় অব্যাহতি প্রদান করেন বিভাগীয় পরিচালক মোহাম্মদ এমরান হোসেন। এছাড়াও অভিযুক্ত ৭ জনের মধ্যে আব্দুছ শুকুর ও বেগুন বেগম নামে স্থানীয় দুইজন অভিযুক্তকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। বাকি ৪ জনের সম্পৃক্ততা থাকায় তাঁদেরকে জরিমানা করা হয় ২ লাখ ২৫ হাজার টাকা। টিলা কাটায় সম্পৃক্ততা থাকায় ভাটেরার ইসলামনগরের বাসিন্দা মৃত তৈয়ব আলীর চার পুত্র নুরই মিয়াকে ১ লাখ ৮৭ হাজার টাকা, মতিন মিয়াকে ১২ হাজার ৫০০ টাকা, সিরন মিয়াকে ১২ হাজার ৫০০ টাকা, নিজাম মিয়াকে ১২ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়।
এর আগে এ ব্যাপারে পরিবেশ অধিদপ্তর, মৌলভীবাজার কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক বদরুল হুদা গণমাধ্যমকে ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ একেএম নজরুল ইসলামসহ ৭জনকে টিলাকাটার সাথে জড়িত থাকার সত্যতা নিশ্চিত হয়েই প্রতিবেদন দিয়েছেন বলে জানিয়ে ছিলেন। কিন্তু রোববার শুনানীতে ইউপি চেয়ারম্যান কিভাবে অব্যাহতি পেলেন এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি কোন সুদুত্তর না দিয়ে বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে পরিবেশ অধিদপ্তরের সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক ভালো বলতে পারবেন।’
কুলাউড়ার ভাটেরায় টিলার মাটি দীর্ঘদিন ধরে ধসে গিয়ে একটি স্কুল ও মসজিদের দেয়ালের উপর আছড়ে পড়ায় এতে হুমকির মুখে পড়ে স্কুল ও মসজিদসহ কয়েকটি বাড়ি। তাই ধসে যাওয়া মাটি অপসারণ করেন স্থানীয় এলাকাবাসী। আর সেই ধসে যাওয়া টিলা কাটার ও মাটি বিক্রির অভিযোগ এনে স্থানীয় ইউপি চেয়াম্যানসহ ৭ জনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন পরিবেশ অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়। এ নিয়ে স্থানীয় এলাকাবাসীর মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া তৈরী হয়।
বর্ষা এলে বৃষ্টির পানিতে টিলার মাটি ধসে স্কুলের ও মসজিদের ভবন ভেঙে যেতে পারে। এলাকার কয়েকজন লোক মাটিগুলো নিজ উদ্যোগে সরিয়ে নিয়েছিলেন। আর ধসে যাওয়া টিলাটি ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ একেএম নজরুল ইসলামসহ এলাকার নিরীহ লোকজন কেটে নিচ্ছেন এমন অপপ্রচারমূলক অভিযোগ তুলে কুচক্রী মহল। স্কুলটি এলাকার মানুষের শিক্ষার বিস্তারে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। অথচ একটি কুচক্রী মহলের ইন্দনে পরিবেশ অধিদপ্তরের লোকজন এলাকায় আসেন। তাড়াহুড়ো করে এলাকার লোকজনের বক্তব্য না শুনে মনগড়া প্রতিবেদন তৈরী করেন পরিবেশ অধিদপ্তর, মৌলভীবাজার কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক বদরুল হুদা। চেয়ারম্যানসহ এলাকার নিরীহ ৭জন লোককে টিলা কেটে মাটি বিক্রির অভিযোগে নোটিশ করেন।
এ ব্যাপারে ভাটেরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ একেএম নজরুল ইসলাম বলেন, স্কুল করার জন্য ওই এলাকায় সমতল কোন জমি ছিলোনা। এলাকার ছেলে-মেয়েদের পড়ালেখার সুবিধার্থে আমার টিলার পাদদেশে আমার নিজের ভূমিতে স্কুল ও মসজিদ নির্মাণ করি। ৩৩ শতাংশ জমিটি শিক্ষা সচিবের নামে রেজিস্ট্রিও করে দিয়েছি। টিলা থেকে মাটি ধসে স্কুল ও মসজিদ এর দেয়ালে আছড়ে পড়লে জনস্বার্থে এলাকাবাসী মাটিগুলো সরিয়ে নেয়। বৃস্টি হলেই ওই টিলায় মাটি ধসে পড়ে। ধসে পড়া মাটিগুলো এলাকাবাসী সরিয়ে নেয়। মাটি বিক্রির অভিযোগ মিথ্যে। সামনে নির্বাচন তাই আমার প্রতিপক্ষ নির্বাচনী ফায়দা লুটার জন্য আমার বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার চালিয়েছিলো। শুনানীতে টিলা কাটার সাথে আমার কোন সম্পৃক্ততা থাকার প্রমাণ মেলেনি তাই পরিবেশ অধিদপ্তরের বিভাগীয় পরিচালক আমাকে অব্যহতি দিয়েছেন।
মন্তব্য করুন