দীর্ঘদিন থেকে কুলাউড়া প্রাণিসম্পদ হাসপাতালে জনবল সংকট
স্টাফ রিপোর্টার॥ কুলাউড়ায় প্রাণী সম্পদ হাসপাতালে জনবল সংকটে ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসা সেবা। কর্মকর্তা, উপ-সহকারী কর্মকর্তাসহ ছয়টি পদ শূন্য থাকায় নূন্যতম সেবা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন উপজেলার খামার মালিকেরা।
জেলার মধ্যে কুলাউড়া হলো সবচেয়ে বড় উপজেলা। এ উপজেলায় রয়েছে ১৩টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা রয়েছে। জনসংখ্যা প্রায় ৫ লক্ষাধিক। এখানকার অধিকাংশ মানুষের পেশা কৃষি। প্রায় প্রতি বাড়িতেই রয়েছে হাঁস-মুরগি, গরু-মহিষসহ গৃহপালিত পশু। এ কারণে কুলাউড়ায় প্রাণিসম্পদ বিভাগের রয়েছে ব্যাপক গুরুত্ব। কিন্তু জনবল সংকটের কারণে এই উপজেলায় কাঙ্খিত প্রাণি সেবা দিতে পারছে না প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। সরকারি সেবা না পেয়ে হাতুড়ে চিকিৎসকের কাছ থেকে সেবা নিয়ে পশুর মৃত্যুসহ নানাভাবে ক্ষতির শিকার হচ্ছেন উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ। গুরুত্বপূর্ণ পদে জনবল না থাকায় উপজেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রাণি সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষ সেবা না পেয়ে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন প্রতিনিয়ত। এতে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন প্রান্তিক পর্যায়ের গবাদিপশু পালনকারীরা।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতাল থেকে জানা গেছে, উপজেলা প্রাণী সম্পদ কার্যালয়ে ১১টি পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন ৫ জন। উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা, এক জন উপ সহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (সম্প্রসারণ), ১২ বছর ধরে একজন উপ-সহকারী প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা (ইউএলএ), ৬ বছর ধরে একজন অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর, ১০ বছর ধরে ড্রেসার ও ২ বছর ধরে এমএলএসএস পদ শূন্য রয়েছে।
হাসপাতালে প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা মিঠুন সরকার ২০২৩ সালের ১৯ অক্টোবর নরসিংদী জেলার শিবপুরে বদলী হওয়ার পর তাঁর স্থলে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন রাজনগর উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা নিবাস চন্দ্র পাল। তিনি সপ্তাহে দুইদিন কুলাউড়ায় অফিস করেন। আর ৫ মে ভেটরিনারি সার্জন হিসেবে আব্দুর রহিম যোগদান করলেও এক সপ্তাহ তিনি অফিস করে ঢাকায় এক মাসের ট্রেনিংয়ে রয়েছেন।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় ১২৫টি গাভীর খামার, ২৬৭টি গরু পুষ্টকরণ খামার, ১১০ টি মহিষের খামার, ২৮৭টি ছাগলের খামার এবং ১৮২ টি ভেড়ার খামার, ৫৬০টি ব্রয়লার খামার, ১৬টি লেয়ার খামার, ৪৬টি হাঁসের খামার রয়েছে।
উপজেলা ডেইরি ফার্ম এসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক ও উপজেলা পোল্ট্রি এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মিনহাজুর রহমান আজাদ বলেন, প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে যে ধরনের সেবা পাওয়ার কথা সেটা আমরা পাচ্ছি না জনবল সংকটের কারণে। বিশেষ করে প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ও ভেটরিনারি কর্মকর্তা না থাকায় খামারিরা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। যার কারণে বাইরে থেকে সেবা নিতে হয়। এতে আমাদের খরচ অনেকটা বেড়ে যায়। ভোগান্তিও পোহাতে হয়।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) নিবাস চন্দ্র পাল বলেন, খামারীদের কথা চিন্তা করে দ্রুত জনবল সংকট পূরণ করা দরকার। মন্ত্রণালয়ে এ বিষয়ে একাধিকবার চাহিদা পাঠানো হয়েছে। জনবল ঘাটতি পূরণ হলে খামারিরা অনেক উপকৃত হবে।
মন্তব্য করুন