নির্বাচনের ৫ বছর পর বিজয়ী হিসেবে রায় পেলেন ইউপি সদস্য

বিকুল চক্রবতী॥ শ্রীমঙ্গলে নির্বাচনের ৫ বছর পর বিজয়ী হিসেবে ঘোষনা পেলেন এক জনপ্রতিনিধি। বিজয়ের খবর পেয়ে এলাকার মানুষ ও তার সমর্থিত ভোটাররা অভিনন্দন জানাতে ভিড় করছেন তার বাড়িতে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার কালাপুর ইউনিয়ন পরিষদের ১নং ওয়ার্ডের সদস্য পদে।
বিগত ২০১৬ সালের ২৮ মে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সদস্য পদে নির্বাচন করেন শ্রীমঙ্গল উপজেলা আওয়ামীলীগের বর্তমান ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক শেখ উপরু মিয়া মহালদার। নির্বাচনের দিন তার ভোট সেন্টারে ভোট গ্রহন শেষে প্রথমে বিজয়ী হিসেবে তার নাম ঘোষনা করা হয়। পরে অল্প সময়ে ব্যবধানে তার নিকটতম প্রার্থী আব্দুল মুকিতকে বিজয়ী দেখানো হয়।
শেখ উপরু মিয়া মহালদার জানান, তার ওয়ার্ডের ভোট সেন্টারে তাকে বিজয়ী ঘোষনা করার পর পরই তার নিকটতম পরাজিত প্রার্থীকে পুন বিজয়ী ঘোষনা করে। এ সময় সাথে সাথে তিনি ভোট সেন্টারের প্রিজাইডিং অফিসারের কাছে ভোট পুণ গননার আবেদন করেন। কিন্তু পিজাইডিং অফিসার এলাকায় ঝামেলা হতে পারে বলে উপজেলায় পুন: গণনা হবে বলে রেজাল্টসহ ব্যালেট পেপার উপজেলায় প্রেরণ করেন।
উপরু মিয়া শ্রীমঙ্গল উপজেলা রিটানিং অফিসারের কাছে গিয়ে আবারও চেলেঞ্জ করেন। এ সময় তার আবেদনকে কর্ণপাত না করে উপজেলায়ও আব্দুল মুকিতকে বিজয়ী ঘোষনা করা হয়। সে সময় নিরাশ হলেও হাল ছাড়েননি উপরু মিয়া। তার এলাকার ভোটারের অনুরোধে তিনি স্মরনাপন্ন হন আদলতের।
আদালতের দীর্ঘ বিচারকার্যে ও উভয়ের আইনজীবির উপস্থিতিতে ভোট পুণ: গণনা করে উপরু মিয়ার মোরগ মার্কা ৬ ভোট বেশি পাওয়ার প্রমান মিলে। এ পেক্ষিতে রায় উপরু মিয়ার পক্ষে এলেও পরাজিত প্রার্থী আব্দুল মুকিত প্রথমে জজ কোর্টে আপিল করেন পরে হাইকোটে আপিল করেন। সব আদালতেই রায় আসে উপরু মিয়ার পক্ষে সর্বশেষ আব্দুল মুকিত আপিল করেন ঢাকাস্থ চেম্বার জজে। এই মামলায়ও খারিজ হয়ে যাওয়ায় উপরু মিয়ার রায় বহাল থাকে। উপরু মিয়া রায়ের কপি নির্বাচন কমিশনে জমা দিলে এবং রায়ের পেক্ষিতে নির্বাচন কমিশনের উপ-সচিব আতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত এক পত্রে গত ২৮ সেপ্টেম্বর আব্দুল মুকিতের বিজয়কে অবৈধ ঘোষনা করে উপরু মিয়াকে বিজয়ী ঘোষনা করে গেজেট প্রকাশ করা হয়।
গেজেটের কাগজ ৩০ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে এসে পৌছালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওই দিনই তাকে বিজয়ী সদস্য হিসেবে শপথ বাক্য পাঠ করান।
এ ব্যাপারে উপরু মিয়া মহালদার আরো বলেন, “জনগন আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে। এটি ডাকাতি করেছে একটি চক্র। আমি জনগণের আমানত হিসেবে দীর্ঘ লড়াই করে তা ফিরিয়ে এনেছি। এ সময় তিনি ন্যায় বিচারের জন্য আদালতের প্রতি ও নির্বাচন কমিশনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
এদিকে উপরু মিয়াই মেম্বার (সদস্য) ছিলো এ খবর চাউর হওয়ার পর এলাকায় বইছে আলোচনার ঝর। অনেকেই তার বাড়িতে গিয়ে শুভেচ্ছো জানাচ্ছেন।
এ ব্যাপারে কালাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান মুজুল বলেন, উপরু মিয়া দায়িত্বকাল শেষ হয়েগেছে। মাস দু একের মধ্যেই আগামী নির্বাচনের তফসিল ঘোষনা হওয়ার কথা। তবে যে কয়দিনই আছে এই সময়ের জন্যই তারা তাকে দু এক দিনের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে বরণ করে নিবেন।
এ ব্যাপারে শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম জানান, নির্বাচন কমিশনের গেজেট পেয়ে তিনি তাঁকে বিধি মোতাবেক শপথবাক্য পাঠ করান।
এ ব্যাপারে আব্দুল মুকিতের সাথে যোগাযোগ করলে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।
মন্তব্য করুন