পঙ্গত্ব হওয়ার শংকায় প্রিং খাসিয়া : আসামীরা পেলেন জামিন

শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি॥ গাছ চুরিতে বাধা দেওয়ায় দায়ের কুপে গুরুতর আহত হন প্রিং খাসিয়া (৪০)। এখন অংগহানীর আশংকায় নিয়ে তার সময় কাটছে হাসপাতালের বিছানায়। এ ঘটনার মামলার পর আসামীদের শাস্তি হবে,এই আশায় ছিলেন প্রিং খাসিয়াসহ পুন্জির অন্যরা। কিন্তু আসামীরা জামিন পাওয়ায় এখন নতুন করে হামলার আতংকে আছেন সবাই। পান জুম এলাকায় গত ৪ অক্টোবর সকালে গাছ কাটছিল একদল গাছচোর। এতে বাধা দেওয়ায় দা দিয়ে কুপিয়ে প্রিং খাসিয়াকে আহত করা হয়। এ ঘটনা নিয়ে দেশের বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক ও অনলাইনে সংবাদ প্রকাশ হয়। ডবলছড়া খাসিয়া পুন্জির হেডম্যান বি’ প্রধান বলেন,ঘটনার পর থেকে আসামীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়িয়েছেন।থানায় মামলা করার ১মাস ৯দিন পার হলেও পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।এখন আসামিরা আদালতে হাজির হয়ে জামিন পাওয়ায় খাসিয়া পুন্জিতে নতুন করে আতংক বিরাজ করছে। আদালত-সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানায় ওই ঘটনায় ৫অক্টোবর কমলগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেন ভিক্টর সুমের খাসিয়া।এতে জয়নাল মিয়া(৪০),জমশেদ মিয়া (৩৮),ও কামরুল মিয়াকে(৩৫) আসামি করা হয়।এই তিন আসামী সোমবার ৫ নভেম্বর মৌলভীবাজার কমলগঞ্জ আমলী আদালতে হাজির হন।এরপর তাঁরা আইনজীবীর মাধ্যমে জামিন প্রার্থনা করেন। পুলিশের আদালত পরিদর্শক জামিন না মন্জুর করার আবেদন করেন।তবে আদালত শুনানি শেষে আসামিদের জামিন আবেদন মন্জুর করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কমলগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ফরিদ মিয়া বলেন,আসামিদের জামিন লাভে তারাও হতবাক হয়েছেন।কারন যেসব ধারায় মামলা হয়েছে,তাতে সাধারনত জামিন হওয়ার কথা নয়। এরপরও কিভাবে জামিন হলো, সেটি বিজ্ঞ আদালতের বিষয়।আসামি ধরতে না পারার বিষয়ে তিনি বলেন,অনেক চেষ্টা করেছি আসামিদের খুজে পাইনি।মামলাটির তদন্ত শেষ পর্যায়ে রয়েছে এবং শিগগিরই অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হবে বলে জানান তদন্ত কর্মকর্তা। এদিকে হামলায় আহত প্রিং খাসিয়াকে প্রথমে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।অবস্থা বিবেচনা করে পরে তাকে ৪ অক্টোবর রাতেই সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে দুদিন পর ঢাকায় পঙ্গু হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।এরপর থেকে তিনি সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাঁর বাঁ হাত আর কখনো ভালো না-ও হতে পারে বলে হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন। এ অবস্থায় মামলার আসামিদের জামিন আরও দুশ্চিন্তায় ফেলেছে পরিবারটিকে। মামলার বাদী প্রিং খাসিয়ার চাচাতো ভাই ভিক্টর সুমের তিনি বলেন প্রিং খাসিয়ার পরিবারে বৃদ্ধ বাবা- মা ছাড়াও দুই ছেলে তিন মেয়ে রয়েছে।বড় মেয়ে ঢাকায় ইডেন কলেজে পড়েন। প্রিং খাসিয়ার হাত অকেজো হয়ে গেলে পরিবারটি অসহায় হয়ে পড়বে জানিয়ে ভিক্টর সুমের বলেন,এই আশংকার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আসামিদের জামিনের বিষয়টি। কারন ঘটনার পর থেকেই আসামিরা নানাভাবে ডবলছড়া খাসিয়া পুন্জির সদস্যদের হুমকি দিয়ে আসছিলেন। এখন যেহেতু তাঁরা জামিন পেয়েছেন সেহেতু আবারও খাসিয়াদের ওপর হামলা হতে পারে।
মন্তব্য করুন