প্রবাসীর স্ত্রীকে ফ্রান্স পাঠানোর কথা বলে ১৪ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে দালাল মানবপাচার ট্রাইব্যুনালে মামলা

আউয়াল কালাম বেগ॥ মৌলভীবাজারের রাজনগরে প্রবাসীর স্ত্রীকে ফ্রান্স পঠানোর কথা বলে ১৪ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে কয়েশ আহমদ নামে এক দালাল। বারবার ধরনা দিয়ে ও এলাকার লোকজন মিলেও কোন টাকা আদায় করতে পারেন নি তারা। প্রবাসীর উপার্জিত টাকা হারিয়ে বাকরুদ্ধ তিনি। এ ঘটনায় মানবপাচার ট্রাইব্যুনালে মামলা করেছেন ভূক্তভোগির ভাই রায়হান আহমদ। এদিকে মামলার জেরে দালালের হয়রানির প্রতিকার চেয়ে রাজনগর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন রায়হান আহমদ।
মামলার সূত্রে জানা যায়, রাজনগর উপজেলার উমরপুর গ্রামের লিয়াকত মিয়া লেবুর মেয়ে খাদিজা আক্তার সীমাকে তার প্রবাসী স্বামী বুরহান উদ্দীনের নিকট পাঠানোর জন্য একই এলাকার কান্দিগাঁও গ্রামের মৃত আবুল বাশারের ছেলে মানব পাচারকারী মো. কয়েশ আহমদ প্রলুব্ধ করেন। এজন্য তারা ১৪ লক্ষ টাকা দাবী করেন। ফ্রান্সের ভিসার জন্য ইন্ডিয়া যাওয়ার আগে ১ লক্ষ ৩০ হাজার ও ফ্রান্স পৌছার পর বাকি টাকা দেয়ার কথা ছিল। প্রথম ধাপে ১ লক্ষ ৩০ হাজার নেয়ার পর ভারতে পাঠায় মানব পাচারকারী কয়েশ আহমদ। ২০১৮ সালের ১৮ আগস্ট ভারতের দিল্লিতে খাদিজা আক্তার সীমাকে ও তার দেবর রায়হান আহমদকে ভারতে পাঠায়। দিল্লির এরোপাথ- নামি হোটেলে নিয়ে মানব পাচারকারী কয়েশের ভারতীয় এজেন্ট বাকি টাকা আদায়ের জন্য তাদের পাসপোর্ট ছিনিয়ে নেয় এবং জিম্মি করে রাখে। বাংলাদেশে বাকি টাকা দুইটি চেক শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক লিঃ দরগা গেইট শাখার খাদিজা আক্তার সীমার নামিীয় ১৯০৩১২১০০০৯৯১০৫ নম্বর হিসাবেব ৮৮৪৬৬৪৫ নম্বর যুক্ত ছয় লক্ষ টাকার একটি চেক এবং একই ব্যাংকের রাহান আহমদ নামীয় ১৯০৩১২১০০০৫৭৭২০ হিসাবের ০০০০০১২ নম্বরযুক্ত ছয় লক্ষ সত্তর হাজার টাকার আরেকটি চেকে মোট ১২ লক্ষ সত্তর হাজার টাকা দালাল কযেশের কথামত প্রদান করেন। কয়েশের ভারতীয় এজেন্ট ফ্রান্সের জাল ভিসা লাগিয়ে তাদের পাসপোর্ট ফেরত দিলে তারা বাংলাদেশে আসেন। এদিকে মানব পাচারকারী কয়েশ ফ্রান্সে ফ্লাইট দেয়ার জন্য আবারো ভারতে পাঠায়। দিল্লি এয়ারপোর্ট থেকে ফ্লাইট দেয়ার কথা থাকলেও পরে ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যের অমৃতসরে নিয়ে যায়। অমৃতসর এয়ারপোর্টে খাদিজা আক্তার সীমার পাসপোর্টে দেয়া ভিসা জাল বলে চিন্নিত করে এবং তাকে আটক করে সেখানকার ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ। পরে বিষয়টি পরিস্কার হলে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ তার ভারতীয় ভিসা বাতিল করে বাংলাদেশে ফেরত পাঠায়। এদিকে বিষয়টি নিয়ে মানব পাচারকারী মো. কয়েশের সঙ্গে টাকা ফেরত দেয়ার জন্য বারবার যোগাযোগ করা হলে সে টালবাহানা করতে থাকে। এনিয়ে গত ২৭ আগস্ট সিলেট মানবপাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা (৭০/২০২০) করেন প্রতারনার শিকার খাদিজা আক্তার সীমার দেবর রায়হান আহমদ। মামলাটি পিবিআই তদন্ত করছে। এদিকে মামলা করার পর থেকে কয়েশ আহমদ বাদি ও প্রতারণার শিকার খাদিজা আক্তার সীমার পিতা লিয়াকত মিয়া লেবুকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি দিচ্ছে এবং মামলার ভয় দেখাচ্ছে। এনিয়ে রাজনগর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন রায়হান আহমদ। এসময় উপস্থিত ছিলেন খাদিজা আক্তার সীমা ও তার পিতা লিয়াকত মিয়া লেবু।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বিআিই-র পুলিশ ইন্সপেক্টর শহিদুল ইসলাম বলেন, রায়হান আহমদ লেট মানবপাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা করেছেন। বিষয়টি এখন তদন্তাধীন আছে।
মন্তব্য করুন