বড়লেখার দরমাছা খালে অবৈধ বাঁধ পানি নিষ্কাষনে প্রতিবন্ধকতা, সীমাহীন দুর্ভোগে অর্ধশত পরিবার
আব্দুর রব॥ বড়লেখা উপজেলার দাসেরবাজার ইউনিয়নের রসগ্রাম এলাকার দরমাছা খালের বিভিন্ন স্থানের অবৈধ বাঁধে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে অর্ধশত পরিবার প্রায় এক যুগ ধরে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। স্থানীয় কতিপয় প্রভাবশালী ব্যক্তি খালের পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ করে ব্যক্তিগত সুবিধার জন্য বাঁধ অথবা বসত বাড়ির রাস্তা তৈরি করায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসীর চরম দুর্ভোগ দূর করতে স্থানীয় সমাজসেবক বদরুল ইসলাম সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে বারবার লিখিত আবেদন করেন। কিন্তু অদৃশ্য কারণে অর্ধশত পরিবারের চরম দুর্ভোগ লাগবে আজও নেওয়া হয়নি কোনো উদ্যোগ।
সরেজমিনে ও লিখিত আবেদন সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার রসগ্রাম এলাকার দরমাছা খাল (সরকারি রেকর্ডভুক্ত) দিয়ে একসময় নিজ বাহাদুরপুর ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের ও দক্ষিণ শাহবাজপুর ইউনিয়নের পাহাড়ি এলাকার বর্ষার পানি নিষ্কাশন হতো। কিন্তু গত প্রায় ১ যুগর ধরে রসগ্রাম এলাকার কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি তাদের ব্যক্তিগত সুবিধার জন্য সরকারি খালের জায়গা ভরাট করেছেন। কেউ কেউ কিছু ব্যক্তিগত ও কিছু সরকারি জায়গা দখল করে বসত বাড়িতে প্রবেশের রাস্তা নির্মাণ করেছেন। এতে পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে মারাত্মক জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। খালের উপর সরকারি রাস্তা ও প্রভাবশালীদের অবৈধ বাঁধের কারণে ৫-৭টি পরিবার উপকৃত হলেও স্থানীয়ভাবে দুর্ভোগে পড়েছেন ৫০টি পরিবার। ফলে বর্ষা মৌসুম ছাড়াও ওই এলাকার কৃষি জমিগুলোতে সারা বছরই জলাবদ্ধতা থাকে। এলাকাবাসীর এই দুর্ভোগ থেকে মুক্তির আশায় স্থানীয় বাসিন্দা প্রবীণ মুরব্বি ও সমাজসেবক বদরুল ইসলাম ২০১৯ সাল থেকে জেলা প্রশাসকসহ স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত আবেদন করেন। কিন্তু অদৃশ্য কারণে অর্ধশত পরিবারের চরম দুর্ভোগ লাগবে অদ্যাবধি কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। সর্বশেষ বদরুল ইসলামের আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০২৩ সালের ৪ এপ্রিল বড়লেখার তৎকালীন সহকারী কমিশনার (ভূমি) জাহাঙ্গীর হোসাইন রসগ্রামের দরমাছা খালের পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা বন্ধ হওয়া সংক্রান্তে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে একটি প্রতিবেদন দেন। প্রতিবেদনে তিনি ওই এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে গোয়ালটাবাজার-সুড়িকান্দি-রসগ্রাম-আদমপুর সড়কের উপযুক্ত স্থানে কালভার্ট (এলজিইডির) নির্মাণের সুপারিশ করেন। এতে করে ওই এলাকায় জলাবদ্ধতা নিরসন হবে মর্মে প্রতিবেদনে তিনি উল্লেখ করেন।
রসগ্রাম এলাকার বাসিন্দা প্রবীণ মুরব্বি বদরুল ইসলাম বলেন, বাঁধের কারণে বর্ষায় মানুষের বাড়ি ঘরে পানি ঢুকে পড়ে। এছাড়া সারাবছরই কৃষি জমিগুলো জলাবদ্ধ থাকে। এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ দূর করতে তিনি প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। কিন্তু কোনো প্রতিকার মিলছে না।
এ ব্যাপারে বড়লেখা উপজেলা প্রকৌশলী প্রীতম শিকদার জয় বলেন, রসগ্রাম এলাকার দরমাছা খালের পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা বন্ধের বিষয়টি ৬-৭ মাস আগে আমরা জেনেছি। স্থানীয় লোকজন গ্রামের ভেতরে খালের উপর অবৈধ বাঁধ দিয়ে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছেন। এই জলাবদ্ধতা দূর করতে খালের উপর নির্মিত অবৈধ বাঁধ অপসারণ ও এলজিইডি সড়কে কালভার্ড নির্মাণ করতে হবে। এলজিইডি সড়কটি অনেক বছর আগের তৈরি করা। আমরা জায়গাটি (জলাবদ্ধ স্থান) সরেজমিনে দেখেছি। এই রাস্তার সংস্কার কাজের সাথে এখানে একটি কালভার্ট নির্মাণের স্কিম নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন